অপেক্ষাটা অব্যক্ত ভালোবাসার”💖Part : 33

Islamic গল্প😊

“অপেক্ষাটা অব্যক্ত ভালোবাসার”💖

Part : 33

আব্বুর অফিসের দিকে হাটতেছি আর ভাবতেছি এখনকার যে সামাজিক পরিস্থিতি, তাতে মেয়েরা রাস্তাঘাটে নিরাপদে নেই। আর তানহা এই শহরে একেবারে নতুন। তাই ওর নিরাপত্তার বিষয়টা আগে মাথায় রাখতে হবে। আল্লাহ না করুক কিছু একটা যদি হয়ে যায় তাহলে? আমি ভরসা পাচ্ছি না। তার চেয়ে তানহা কে বাড়িতেই আনতে হবে। তাই তানহাকে কল দিলাম। কয়েকবার দেওয়ার পরও ধরে নি। মেজাজ গরম হয়ে যাচ্ছিলো। তারপর শেষ একবার চেষ্টা করলাম। এবার ধরলো,
তানহা : আসসালাম অলাইকুম।

অর্ণব : অলাইকুম আসসালাম।

তানহা : কি জন্য কল দিলেন?

অর্ণব : আগে বলো কল ধরো না কেনো? এত দেরী লাগে?

(স্বাভাবিক কথা বলা যাবে না। নইলে বুঝতে পারবে আমিও ওকে ভালোবাসি।)
তানহা : ক্লাশে ছিলাম। যা বলার তাড়াতাড়ি বলো। আর আপনি কল দিলেই যে ধরতে হবে এমনতো কোন কথা নেই।

অর্ণব : মানে কি?

তানহা : মানে আমার মাথা আপনার মুন্ডু কল দিছেন কেনো সেটা বলেন!

তারপর আগে যা যা ভাবলাম সেগুলা সব বললাম।
অর্ণব : তাই তোমার নিরাপত্তার সাথে আমি কোন আপোষ করতে পারবো না। এজন্য আমি চাচ্ছি তুমি আমার বাসাতে চলে আসো।

(এতটা দায়িত্বজ্ঞানসম্পন্ন স্বামী ভাগ্যবতীদেরকেই মিলে। আমি সত্যিই অনেক ভাগ্যবান। কিন্তু আমি আগে নিজের পায়ে দাঁড়াবো তাদের যোগ্য হয়ে উঠবো তারপর তাদের বাড়িতে গিয়ে উঠবো। এখন না।)
তানহা : আমি দুধ খাওয়া শিশু নই। আমার খেয়াল আমি রাখতে পারবো। আমার চিন্তা আপনাকে করতে হবে না।

বলেই ফোনটা কেটে দিলো। মেজাজটা খারাপ হয়ে গেলো। আজকে নাজিমকে আনার সময় এর বদলা সুদে-আসলে নিবো। তারপর আবার আব্বুর অফিসের দিকে হাটা শুরু করলাম।

অফিসে যায়ে সারাদিন ব্যবসার কাজে আব্বুকে সাহায্য করলাম। বিকালবেলা,

অর্ণব : ঠিক আছে আব্বু আমি গেলাম এখন। নাজিমকে আবার সন্ধ্যায় আনতে হবে।

রফিক সাহেব : ঠিক আছে যা। এরকম মাঝে মাঝে ব্যবসার কাজে আমাকে সাহায্য করতে আসিস।

অর্ণব : মাঝে মাঝে না, এখন থেকে প্রতিদিন আসবো।

রফিক সাহেব : তাই নাকি। আজকে সূর্য কোন দিকে উঠছে?

অর্ণব : বাদ দেও তো ওইগুলা। এখন টাকা দেও।

রফিক সাহেব : কিসের টাকা? একদিনের টাকা দিতে হবে তোকে? এই তোর উদ্দেশ্য?

অর্ণব : হুম। আর একদিনের না। এই মাসের আমার বেতনের এডভান্স আমার আজকেই দরকার। আর কিছু টাকা ধার দাও।

রফিক সাহেব : কেনো?

অর্ণব : তুমি দেও না। এতো প্রশ্ন করো কেনো? আমি তো আমার প্রাপ্য চাচ্ছি। আর ধারের টাকাটা লিখে রাখো। সামনে মাসের বেতন থেকে কেটে দিও। কেননা,

পবিত্র কুরআনে আছে,

“ঋণ গ্রহণ করলে তা লিখে রাখুন।”
-(০২ঃ ২৮২)💕

তারপর আব্বু আমাকে কিছু টাকা দিলো। সালাম দিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলাম।

হ্যাঁ। এভাবেই আব্বুর ব্যবসায় সাহায্য করে যা পাবো তা দিয়ে ধার দেনা শোধ করতে হবে। আজকের টাকাটা নিলাম তানহার ভাড়া দেওয়ার জন্য।

বাসার ভিতর ঢুকতেই আম্মু জিজ্ঞাসা করলো,
মিস রাদিয়া : আসসালাম অলাইকুম। তা নবাবজাদা কি বিয়ে করবে না?

অর্ণব : হ্যাঁ করবে।

মিস রাদিয়া : আমি আমার বউমাকে দেখার জন্য ব্যাকুল হয়ে আছি আর তোর কি আমার প্রতি একটুও দয়া মায়া নাই?

অর্ণব : সময় হলে পাবা বললাম তো।

মিস রাদিয়া : তা সময়টা কখন হবে?

অর্ণব : হবে তাড়াতাড়িই হবে। কথা যেহেতু দিছি আনবো ইনশাল্লাহ।

মিস রাদিয়া : মনে যেনো থাকে বিষয়টা। তুই নিজে কথা দিয়ে একটা দায়িত্ব নিছিস। আর এটা একটা আমানত। যার বরখেলাপ হলে এর পরিনাম ভালো হবে না। কেননা,

হাদিসে এসেছে,

“আবু যার (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আরয করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কি আমাকে কোন দায়িত্বে নিয়োগ করবেন না? তখন তিনি আমার কাঁধে হাত রেখে বললেন, হে আবু যার! তুমি দুর্বল মানুষ। আর এটা হচ্ছে এক আমানত। আর এ নেতৃত্ব-কর্তৃত্ব ক্বিয়ামতের দিন লাঞ্ছনা-গঞ্জনার কারণ হবে। অবশ্য যে হক সহকারে এটাকে গ্রহণ করে এবং এ দায়িত্ব গ্রহণের ফলে তার উপর অর্পিত দায়-দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে তার কথা আলাদা’।”
-(মুসলিম হা/১৮২৫; মিশকাত হা/৩৬৮২)💕

তাই সাবধান। বুঝলি?

অর্ণব : হুম বুঝছি।

বলেই রুমে চলে গেলাম।

তানহার উপর খুব রাগ হচ্ছে। আজকে ওর জন্য কি অপেক্ষা করতেছে তা সে নিজেও জানে না। ভাবতে একটু লজ্জাই লাগতেছে। কিন্তু সময় কাটতেছেনা আর সন্ধ্যাও হচ্ছে না।

অপেক্ষার পালা শেষ হয়ে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলো। আজকে একটু ভালোভাবে তৈরী হলাম। সুগন্ধি লাগালাম। নবীজি (সা) সুগন্ধি অনেক পছন্দ করতেন। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাহ!

হাদিসে এসেছে,

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, চারটি বস্তু সব নবীর সুন্নত। আতর, বিয়ে, মেসওয়াক ও লজ্জাস্থান ঢেকে রাখা।
-(মুসনাদে আহমাদ)💕

তারপর রওনা দিলাম তানহার বাসার উদ্দেশ্যে। এই প্রথম ওর বাসায় যাইতে আমার মনের ভিতর ভয় কাজ করতেছে।

তানহার বাসার সামনে যাইতেই দেখি বাড়িওয়ালা আসতেছেন।
অর্ণব : আসসালাম অলাইকুম চাচা।

বাড়িওয়ালা : অলাইকুম আসসালাম। তানহার সাথে দেখা করতে যাচ্ছো?

অর্ণব : হুম চাচা। কালকের ব্যবহারের জন্য দুঃখিত। তানহার ব্যাপারে খারাপ কথা বলছিলেন তো তাই নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারিনি।

বাড়িওয়ালা : আরে না বাবা। আমার ক্ষমা চাওয়া উচিৎ। আমিই না জানে শুনে খারাপ মন্তব্য করছি।

অর্ণব : চাচা এই নেন টাকাটা। আমি জানতাম না যে তানহার কাছে টাকা নেই। তাই এমনটা হলো। আর

হাদিসে এসেছে,

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, সচ্ছল ব্যক্তির (ঋণ পরিশোধে) টালবাহানা করা অন্যায়।
-(সহিহ বোখারি: ২৪০০)

বাড়িওয়ালা : ধন্যবাদ তোমাকে। আর আমার টাকাটা খুব প্রয়োজন ছিলো। তাই চাচ্ছিলাম।

অর্ণব : হুম চাচা বুঝছি।

বাড়িওয়ালা : আর বাবা! তানহা মেয়েটা অনেক ভালো। ওকে যত্ন করে রাখিও। এতিম মেয়েটাকে যেন কষ্ট দিওনা।

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

“তুমি এতিমের প্রতি কঠোর হয়ো না।”
-(সুরা : দুহা, আয়াত : ৯)💕

অর্ণব : জি চাচা। আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো যাতে তানহা সুখী থাকে।

বাড়িওয়ালা : আসসালাম অলাইকুম। আজ তাহলে আসি।

অর্ণব : অলাইকুম আসসালাম।

বাড়িওয়ালা চলে গেল। আমি বাসার ভিতরে ঢুকলাম। এই প্রথম আমার বুকের বাম পাশে ধুকধুনাকি শুরু হয়েছে। নিজেকে নার্ভাস লাগছে। নাজিম আসে দরজা খুলে দিলো। ভয়ে ভয়ে বাসার ভিতরে ঢুকলাম।

তানহা আমার ছোট ভাইকে তার পাশে নিয়ে অংঙ্ক করাচ্ছে। আমি বললাম তানহা এদিকে আসো তোমার সাথে কথা আছে।

মনে মনে,
তানহা : কি বেপার আজ একেবারে তামিল সিনেমার নায়কের মতো তৈরি হয়ে আসছে। আল্লাহ! পুরা ক্রাশ খায়ে গেলাম। ইয়া আল্লাহ আমার স্বামিকে সব মেয়েদের কাছ থেকে দূরে রাখিও।

অর্ণব :- কি হলো কথা কানে যায়না তোমার?

তানহা :-জ্বি যাচ্ছি…

অর্ণব :- হুম তারাতারি তোমার রুমের ভিতর আসো।
বলেই রুমের ভিতর গেলাম।

তানহা :- নাজিম তুমি অংঙ্ক গুলা দেখ,আমি তোমার ভাইয়ার সাথে একটু কথা বলেই আসতাছি।

নাজিম:- একটু না ফুলটাই বলে আসেন।

(আমি তো শুনে অবাক! কি আর বলবো। ভাইটার মতো পিচ্চিটাও মহা শয়তান।)
তানহা : থাপ্পড় খাবা৷ পড়াতে মন দেও।

বলেই রুমের দিকে গেলাম। আমার স্বামিটা অনেক্ষণ থেকে বসে আছে।

অর্ণব :- এতোক্ষণে আসার টাইম হলো?

তানহা :- আপনার ছোট ভাই যে শয়তান, তাকে মেনেজ করে তারপর আসলাম।

অর্ণব :-ভালো করছো এখন আমার পাশে এসে বসো।

তানহা :- আপনার পাশে বসবো কেনো? আর বাইরে থেকে সব দেখা যায় আপনার ছোট ভাই দেখে ফেলবে।

তাড়াতাড়ি যায়ে দরজাটা লাগায় দিলাম।

তানহা : এই দরজা লাগাইলেন কেনো?
বলে দরজা খুলতে যাবো…

……

আমি অর্ণবকে গায়ের সব শক্তি ধাক্কা দিয়ে সরায়ে বিছানা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে, দিলাম দৌড় আর দৌড়াইতে দৌড়াইতে বললাম,
: কলেজ লাইফ শেষ করতে পারে নাই, আবার স্বামীর অধিকার নিয়ে আসছে।

তাড়াতাড়ি দরজা খুলে,
: নাজিম অং.. অংঙ্ক গুলা কি দেখা হয়েছে..?

নাজিম : জি ভাবি সব গুলা অংঙ্ক করা শেষ। আর এক এক করে সব গুলা পৃষ্টার অংক গুলা দেখলাম।

(কি একটা পিচ্চি শয়তানরে বাবা। এদের দুই ভাইয়ের কি লজ্জা নাই? আমি শিক্ষিকা হই। আর আমার সাথে এগুলা কি শুরু করছে। উনি ঐ দিকে স্বামীর অধিকার নিয়ে নবীজি (সা) এর সুন্নত পালন করতে আসতেছেন আর ইনি ভাবী ডাকার অধিকার।)
তানহা :- ভাবি মানে? তোমার মাথা কি ঠিক আছে নাকি?

নাজিম:- না, আপনি এখনো ভাবি হননি তবে আমার ভাইয়ার বৌ হবেন জানি।

(রাগের সাথে সাথে হাসিও পেলো। পিচ্চু শয়তান! তুমি তো জানেনা যে আমাদের বিয়ে আগেই হয়েছে😁)
তানহা : তোমার ভাইয়ের বৌ হবো মানে কি? মার খাবা?😡

নাজিম:- মানে হলো আমার ভাইয়ার সাথে রুমে গিয়ে দরজা লাগালেন যে।

(ইশ! এটার কথাতো ভুলেই গেছিলাম। অর্ণব ফাযিলটার জন্য এগুলা হচ্ছে😡)
তানহা :- কোই…ই কি, আমি তো খালি কথা বলছিলাম তোমার পড়া সম্পর্কে।

নাজিম:- ওহহ তাই, তো আপনার হিজাব কই? চুলগুলা এরকম হয়ে আছে কেনো?

(লজ্জায় আমি শেষ। আমি ভুলেই গেছিলাম আমার হিজাব খুলে গেছিলো। অর্ণবের উপর মেজাজটা যে কি পরিমানে খারাপ হচ্ছে তা বলতে পারবো না। কালকে থেকে বাড়িতে ঢুকতে দিবো না😡)
তানহা : এই ছেলে মুখ সামলে কথা বলো ভুলে যেয়না আমি তোমার টিচার।

আমি রুম থেকে বেড় হয়ে,
অর্ণব : কি ব্যাপার বাইরে হইচই কেনো। মাছের বাজার পাইছো নাকি?

তানহা : দেখেন না আপনার ছোট ভাই কি সব বলতেছে। আমি নাকি তার ভাবি!

অর্ণব :- ঠিকি তো বলেছে।

রাগে,
তানহা :-কিহ😡😡

অর্ণব :- থুক্কু🤐… নাহ..দুঃখিত। কি না কি বলতে কি বলে ফেলতেছি।
নাজিমের দিকে তাকায় একটু রাগী কন্ঠে,
: কিরে কি বলছিস এই সব😡… থাপ্পড় মারে গাল লাল করে দিবো। উনি তোমার টিচার হন না? এগুলা বেয়াদবি কখনো করবা না।

নাজিম:- Sorry ভাইয়া!

অর্ণব :- ব্যাগের ভিতর বই গুলা ঢুকায় নিয়ে সোজা বাড়ি যাবার জন্য রাস্তা ধর নাইলে খবর আছে।

নাজিম সবকিছু গুছিয়ে নিয়ে গেটের বাইরে যেতেই তানহা আমার কাছে এসে রাগে,
তানহা :- এই আপনি কি বলুন তো?

অর্ণব :- আমি তো মানুষ।

তানহা :- নাজিমের সামনে কি করতে ধরছিলেন ওসব? আর একটু হলেই ও বুঝতে পারতো আমি তার সত্যি সত্যি ভাবি হই😡😡

(যাক তানহা তাহলে স্বীকার করলো সে আমার বউ। কিন্তু এখন এটা নিয়ে কথা বলা যাবে না। নইলে মূহুর্তে সুর পাল্টাবে।)
অর্ণব :- কিহ? ওয় এখনো যানে নাই, যে তুমি তার ভাবি? দাঁড়াও ডাকছি। নাজিম ইনি তোর ভ…

কথা বলা শেষ নাই হইতেই তানহা আমার মুখ চেপে ধরছে। আমি এই চান্স আর ছাড়ি।

…..

হাতটা তাড়াতাড়ি সরিয়ে নিয়ে।

মনে মনে,
তানহা : কি কান্ড! আমি করতে চাই আর সে কি করে ফেলি🙈.. আর ওরও লজ্জা বলে কিছু নাই😡

অর্ণব :- তানহা?

তানহা অন্যদিকে তাকায় চুপ করে আছে।

অর্ণব :- শুনোনা।

(ইসসস! মুহুর্তটা যে কত রোমান্টিক তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। আর উনার মুখে “তানহা” ডাকটা আমাকে পাগল করে দিচ্ছে।)
তানহা :- কি?

অর্ণব : দারুণ মজা লাগছিলো আর মিস্টি। জীবনে প্রথমবার এরকম অভিজ্ঞতা।

তানহা :- হাহা। ঐটা মিষ্টি হয় এই প্রথম শুনলাম। আর আমারো প্রথমবার ছিলো। শুনেন আপনি আজ যেটা করলেন দ্বিতীয়বার যদি এমনটা করার চেষ্টা করেন তাহলে কিন্তু অনেক খারাপ হবে বলে দিলাম। আর দরজা লাগানোর জন্য নাজিম সন্দেহ করছে।

অর্ণব :- ও করুক সমস্যা নাই আর তুমি তো আমার বউ। আর আজকে থেকে প্রতিদিন একটা করে বরাদ্দ। তুমি না করতে পারবে না।

তানহা :- হুম! মামার বাড়ির আবদার, উনি চাইল আর আমি দিয়ে দিলাম। কালকে থেকে বাড়িতে ঢুকতে দিবো না। বাইরে দাঁড়িয়ে থাকবেন। এখন যান নইলে নাজিম আবার উল্টাপাল্টা ভাববে।

অর্ণব : ইসস! দেখা যাবে৷ আমি গেলাম। নাজিমকে সামলাইতে হবে। আসসালাম অলাইকুম।

তানহা :- অলাইকুম আসসালাম।
(আজ থেকে অর্ণবের সাথে এভাবে মেলামেশা করা যাবে না। এভাবে মেলামেশা করলে বুঝতে পারবে আমিও তাকে ভালবাসি। তবে আজকের মুহুর্তগুলা আমার জীবনের বেস্ট ছিলো। এজন্য আমি নিজেকে সংযত রাখতে পারিনি। ইয়া আল্লাহ শিঘ্রই যেনো আমি আর অর্ণব এক সাথে থাকতে পারি তার ব্যবস্থা করে দেও। আর তোমাকে শুকরিয়া এমন স্বামী দেওয়ার জন্য।)

বাইরে আসে নাজিমকে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলাম।
অর্ণব : নাজিম শুন।

নাজিম : হুম ভাইয়া বল।

অর্ণব : তোর তানহা মেডাম আসলেই তোর ভাবী হয়।
তারপর ওকে পুরো ঘটনার সার সংক্ষেপ বললাম।

নাজিম : কি বলিস ভাইয়া। তাহলে বাড়িতে বলিস নি কেনো?

অর্ণব : কারণ আছে পরে বলবো৷ আর তোকে এজন্য বলতেছি কারণ তুই আমাদের দরজা লাগানো আবার আগের দিনগুলাতে রুমের ভিতর তানহা আর আমার একসাথে যাওয়াটাকে অন্য কিছু ভাবতে পারিস। যার ফলে তোর মনে খারাপ প্রভাব পড়তে পারে। তুই ভুল ধারনা পোষণ করে ভবিষ্যতে না জেনে পাপ কাজে জড়াইতে পারিস। মনে রাখবি,

হাদিসে এসেছে,

অন্যের ঘরে উকি-ঝুকি না মারা, অন্যের ঘরে থাকাবস্থায় অন্যের রুমে দূর থেকে না তাকানো, বেগানা নারী/পুরুষের সাথে ঘরে একাকী অবস্থান না করা।
-(মুসলিম ২১৫৬)💕

রক্তসম্পর্কহীন-নন মাহরাম কারো সাথে কোথাও, কোনো ঘর বা রুমে পর্যন্ত, একাকী অবস্থান করা হারাম। আমরা স্বামী-স্ত্রী তাই একসাথে ছিলাম। বুঝলি?

নাজিম : হুম ভাইয়া বুঝছি।

অর্ণব : আর শুন এই কথাটা গোপন রাখিস। সময় হলে সবাইকে জানাবো। কারো কথা গোপন রাখা ভালো। আর অন্য কারো দোষত্রুটি গোপন রাখা সুন্নত। কেননা,

হাদিসে এসেছে,

যে অন্যকারো দোষত্রুটি গোপন রাখবে, আল্লাহ অবশ্যি কেয়ামতের দিন তার দোষত্রুটি গোপন রাখবেন।
-(সহিহ মুসলিম)💕

বুঝলি?

নাজিম : ঠিক আছে ভাইয়া আমি কাউকে বলবো না।

অর্ণব : তোর তানহা ম্যাডামকেও বলবি না যে তুই জানিস।

নাজিম : ঠিক আছে।

তারপর নাজিমকে বাড়িতে দিয়ে আসে আমি একটা কাজে বাড়ি থেকে বেড় হলাম। রাস্তায় হাটতেছি আর ভাবতেছি…

(চলবে….)

মূল গল্পের লেখক – নাহাজুল ইসলাম লাইফ❣

গল্পটির মূল নাম – “English Teacher যখন বউ”💝

[আগের পর্বগুলো Timeline এই দেওয়া আছে]🍁

💚ইমাম মাহদীর সন্ধানে💞


Comments

One response to “অপেক্ষাটা অব্যক্ত ভালোবাসার”💖Part : 33”

  1. […] 28 Chapter 29 Chapter 30 Chapter 31 Chapter 32 Chapter 33 Chapter 34 Chapter 35 Chapter 36 Chapter 37 Chapter […]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *