“অপেক্ষাটা অব্যক্ত ভালোবাসার”💖Part : 37

Islamic গল্প😊

“অপেক্ষাটা অব্যক্ত ভালোবাসার”💖

Part : 37

ফযরের নামাজ পড়া শেষ করে অর্ণবকে ডাকতে গেলাম। তারপর ঘরটা গুছিয়ে ডাইনিং রুমে গেলাম। যায়ে দেখি নাজিম বসে আছে।
তানহা : বাব্বাহ এতো সকালে উঠো তুমি?

নাজিম : হুম ভাবী। আমাকে কোরআন মাজীদ পড়তে যাইতে হয় তাই ভোরেই উঠতে হয়।

তানহা : খুব ভালো। শুনো তুমি যেহেতু অর্ণবকে ভাইয়া ডাকো তাই আমাকে আপু ডাকবা ঠিক আছে?

নাজিম : ঠিক আছে আপু। ভাইয়া উঠছে?

তানহা : হুম উঠছে।

নাজিম : আজকে আবার এতো তাড়াতাড়ি উঠলো। অন্যদিন তো আমাকে পুরা বাসা দৌড়ায় নিয়ে বেড়ায়।

তানহা : মানে?

নাজিম : মানে হলো যে আমি ভাইয়াকে রোজ গিয়ে জোরে জোরে চিৎকার করে ডাকি, তাই রাগ হয়ে আমার মারার জন্য পিছনে একটা দৌড়ানি দেয়। আমি আম্মুর পিছনে যায়ে লুকায় যাই আর ও আবার রুমে যায়ে ঘুমায়।

তানহা : হাহাহা। আচ্ছা তুমি রান্নাঘরটা একটু দেখায় দেও।

নাজিমের সাথে রান্নাঘরে যায়ে দেখি আম্মু আগে থাকেই রান্নাঘরে আছেন। যায়ে উনাকে রান্নাতে সাহায্য করলাম।

রান্না শেষ হলে,
মিস রাদিয়া:- তানহা মা একটা কাজ করো নবাবজাদা কে গিয়ে টেনে তুলো।

তানহা :- এইটা আবার কে আম্মু?

মিস রাদিয়া :- তোমার আলসিয়া স্বামী।

তানহা :- ও আচ্ছা যাচ্ছি।

রুমের ভিতর গিয়েই দেখি নবাবজাদা ঘুমাচ্ছে। কিন্তু নামাজ পড়ে যে ঘুমটা দিছে, বার বার ডাকেও উঠাইতে পারিনি। তাই চলে আসলাম।

মিস রাদিয়া : কি ব্যাপার আসলো না?

তানহা : নাহ! গরুর মতো ঘুমাচ্ছে।

নাজিম:- আপু তুমি আমার কাছে বসো আর আমাকে খাওয়ায় দেও।

মিস রাদিয়া :-নিজের খাবার নিজে খেয়ে নেও,তুমি ছোট বাচ্চা নাকি?

তানহা :- আম্মু আমি ওকে খাইয়ে দিচ্ছি সমস্যা নাই। নাজিম তুমি আমার পাশে বসো। তার আগে দুই হাত ধুয়ে আসো। খাবার পূর্বে আমরা শুধু ডান হাত ধুয়েই খেতে বসি। কিন্তু

হাদিসে আছে,

“উভয় হাত কব্জি পর্যন্ত ধোতে হবে।”
-(আবু দাউদ -৩৭৬১)💕

বুঝলা?

নাজিম : হুম।

নাজিম হাত ধুয়ে আসলো।

তানহা : খাবার শুরু করার আগে উঁচু স্বরে বিসমিল্লাহ বলো।

হাদিসে এসেছে,

“খাবার আগে উঁচু স্বরে বিসমিল্লাহ পড়তে হবে।”
-(বুখারী-৫৩৭৬)💕

নাজিম বলার পর ওকে খাওয়ায় দিলাম।

নাজিম:- আপুর হাতে খেতে অনেক মজা😋

তানহা :- তাই নাকি?

নাজিম :- হুম। আচ্ছা আপু একটা প্রশ্ন করি?

তানহা : ঠিক আছে করো।

নাজিম :- প্রশ্নটা হলো তুমি তো কলেজে পড়াও আর ভাইয়াও তোমার ক্লাস করে। তো ক্লাস করার সময় ভাইয়াকে কেমন করে ডাকো? মানে আমি বলতে চাচ্ছি বাসায় যেমন আপনি করে বলো ওই খানেও কি আপনি করে বলো নাকি?

বাপরে বাপ! পিচ্চি একটা ছেলে অথচ কতো বড় একটা প্রশ্ন করে বসেছে।

আম্মু হাসতেছে।

মিস রাদিয়া : আমার বউ মা কতো শিক্ষিত। আর আমার বড় ছেলে আস্ত একটা গাধা।

তানহা : হাহা।

নাজিম:- আপু আমার উত্তরটা পেলাম না।

তানহা :- তোমার উত্তরটা হলো তোমার ভাইয়া আমাকে ক্লাসে আপনি করে বলে আর আমি তুমি করে বলি। বুঝলা?

নাজিম:- ও তাই।

তানহা : হুম।

কিছুক্ষণ পর অর্ণব আর আব্বু নিচে আসলো। খাওয়া দাওয়া শেষ করে,
অর্ণব : আব্বু তাহলে আমি অফিস গেলাম।

তানহা : আজকে কলেজে যাবেন না আপনি?

রফিক সাহেব : তুই তানহাকে কলেজ দিয়ে আয়। আর কয়েকটা ক্লাশ করে তারপর অফিস যাবি। আর তানহাকে নিয়েও আসতে যাবি।

মনে মনে,
অর্ণব : তানহাকে বাড়িতে আনে মহা ঝামেলায় পড়লাম। ওহ হো। রিকশাওয়ালাকে আবার বলতে হবে তানহাকে এখান থেকে নিয়ে যাইতে। বললাম,
: রিকশাকে ডাকে দিচ্ছি। তানহা রিকশায় চলে যাবে।

মিস রাদিয়া : দিন দিন বেয়াদব হচ্ছিস তাই না? বাবা-মায়ের সাথে কিভাবে ব্যবহার করতে হয় জানিস না?

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

“পিতা-মাতার সাথে ভালো ব্যবহার করো। যদি তোমাদের কাছে তাদের কোন একজন বা উভয় বৃদ্ধ অবস্থায় থাকে, তাহলে তাদেরকে “উহ্” পর্যন্তও বলো না এবং তাদেরকে ধমকের সুরে জবাব দিয়ো না বরং তাদের সাথে মর্যাদা সহকারে কথা বলো। আর দয়া ও কোমলতা সহকারে তাদের সামনে বিনম্র থাকো এবং দোয়া করতে থাকো এই বলেঃ হে আমার প্রতিপালক! তাদের প্রতি দয়া করো, যেমন তারা দয়া, মায়া, মমতা সহকারে শৈশবে আমাকে প্রতিপালন করেছিলেন।”
-(সুরা বনী ইসরাইল ২৩-২৪)💕

বুঝলি?

অর্ণব : হুম বুঝছি।
তারপর বাইক বেড় করে তানহাকে কলেজে দিয়ে আসে অফিসে গেলাম।

অফিসে কাজ করতেছিলাম এমন সময় দেখি তানহার কল আসলো। তানহার উপর একটু রাগ ছিলো তাই কলটা কেটে দিলাম। তানহা আবার কল দিলো, এবার মোবাইলটা বন্ধই করে দিলাম।

মনে মনে,
তানহা : এতো রাগ? আমার কলটা ধরলোও না আবার মোবাইলটা বন্ধও করে দিলো। রাতে আসুক মজা দেখাবো।

ব্যবসার কাজ শেষ করে বিকালে বাড়িতে গেলাম। বাসার গেটের কাছে এসে নক করতেই তানহা এসে গেট খুললো।

অর্ণব : তা ম্যাম আপনি কি আমারই অপেক্ষা করতেছিলেন?

(তানহা চুপ করে আছে)

আমিও কোন কথা না বলে দরজা লাগিয়ে তানহার সাথে রুমে গেলাম।

ফ্রেশ হয়ে দেখি তানহা বিছানায় বসে জানালা দিয়ে আকাশ দেখতেছে। আমার পড়ার টেবিলে বিকালের নাস্তা রাখা। সত্যি এমন বউ পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। বললাম,
: কাজের চাপে তোমাকে দুপুরে আনতে যায় নি। দুঃখিত।

(তানহা কথার উত্তর না দিয়ে জানালার দিকেই তাকিয়ে আছে)

মেয়েটা খুব রাগী। বললাম,
অর্ণব : আসো একসাথে নাস্তা করি।

(তানহা তাও চুপ করে আছে।)

কাছে যেয়ে,
অর্ণব : কি হলো কোন কথা বলতেছো না কেনো?

(তাও কথা বলতেছে না)

তানহার মুখের উপর কিছু চুল আসে পড়ছিলো, সেগুলো সরায় দিতে দিতে,
অর্ণব : তুমি কি চাচ্ছো আমি না খেয়ে থাকি?

(তানহা তাও অন্যদিকে তাকিয়ে চুপ করে আছে)

অর্ণব : ধুর খাবোই না,
বলে রুম থেকে বেড় হতে ধরলাম। আসলে আমারো খুব খিদা লাগছে। কিন্তু তানহার রাগ ভাঙ্গাইতে না খেয়ে থাকতেই হবে।

দরজার কাছে যেতেই,
তানহা : আমার কল ধরেন নি কেনো? আর মোবাইলটা বন্ধ করে ফেলছিলেন কেনো?

অর্ণব : তোমার উপর একটু রাগ ছিলো। তাই এরকম করছি। তাই বলে তুমিও?

তানহা : হ্যাঁ আমিও। আমার সাথে আরেকবার এরকম করলে ভালো হবে না বলে রাখলাম। আমারও কম রাগ না হুম।

অর্ণব : জি তাতো বুঝায় যাচ্ছে।

তানহা : আসুন খেয়ে নিন।

তারপর দুজনে নাস্তা করলাম।
যদিও তানহাকে পেয়েছি। কিন্তু পেয়েও পাইনি। এবার অপেক্ষাটা তানহাকে কাছে পাওয়ার।

রাতে খাওয়ার সময়,
রফিক সাহেব : আমার বন্ধুর ছেলের বিয়ে৷ তাদের বিয়েতে দাওয়াত দিছে। আমরাতো যাবো না। তাই অর্ণব তুই আর বউমা যাবি।

অর্ণব : ঠিক আছে।

তানহা : আর আমাদের সাথে নাজিমও যাবে।

খুশি হয়ে,
নাজিম : ধন্যবাদ আপু। তুমি দুনিয়ার বেস্ট আপু।

আমার তো মেজাজটা খারাপ হয়ে গেলো। কোথায় আমি খুশি হচ্ছিলাম যে তানহার সাথে একা যাবো। আর এটা নিয়ে কত কিছু ভাবতেছিলাম যে যাওয়ার পথে কি কি করবো।কিন্তু তানহা সব কিছু মাটি করে দিলো। স্বাভাবিক হয়ে বললাম,
: কবে বিয়ে?

মিস রাদিয়া : কালকে।

খাবার খেয়ে আমি আর তানহা রুমে আসবো এমন সময়,
নাজিম:- আপু তুমি কিন্তু বলছো আজ আমার সাথে থাকবা!

তানহা : জি পিচ্চি মনে আছে।

অর্ণব : মানে কি?😡

তানহা : আমি নাজিমকে কথা দিছি যে আজ আমি ওর সাথে থাকবো। আপনি যায়ে ঘুমায় যান। ঘুম না আসলে পড়তে বসুন কালকে পরিক্ষা আছে আপনাদের।

অর্ণব :- মানে কিসের পরিক্ষা?

তানহা :- আমার ক্লাসে পরিক্ষা নিবো। ইংরেজি তো কিছুই পারেন না। যায়ে পড়তে বসুন।

অর্ণব :- তো মেডাম আপনি পরিক্ষাতে কি কি দিবেন?

তানহা : ইস! মামা বাড়ির আবদার। নাজিম তুমি চলো!

রুমে যায়ে,
নাজিম : আপু গল্প শুনাও না?

তানহা : না তুমি চোখ বন্ধ করে ঘুমাও। আমার খুব ঘুম পাচ্ছে।

কিছুক্ষণের ভিতর নাজিম ঘুমায় গেলো। আমি বিছানা থেকে নেমে দরজাটা ভালোমতো আগায় দিয়ে আমার রুমে গেলাম।

রুমে ঢুকে দেখলাম অর্ণবও ঘুমায় গেছে। অর্ণবের কাছে গিয়ে উনার ঘুমন্ত চেহারাটার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি। ওর মাথায় হাত বুলিয়ে খুব নরমভাবে কপালে ঠোঁট ছোঁয়ালাম। হঠাৎ অর্ণব আমার হাত ধরে ফেললো। আমি লজ্জায় পিছনে ঘুরে পালাতে চাইলাম কিন্তু সে আরো শক্ত করে ধরলো হাতটা।

অর্ণব : কি ব্যাপার কোথায় যাচ্ছো?

তানহা : আপনি ঘুমাননি।

অর্ণব : ঘুমাচ্ছিলাম। কিন্তু কপালে কিসের যেন স্পর্শ পেলাম তাই ঘুম ভাঙ্গল আর দেখলাম..

কথা শেষ করতে না দিয়ে,
তানহা : হাত ছাড়ুন শুয়ে পড়বো।

বলতেই আমাকে টানে ওর কাছে নিলো। আমি ছাড়ানোর অনেক চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলাম।

………

অর্ণব উঠে বালিশ ও কোলবালিশ নিয়ে এসে কালকের মতো ব্যারিকেড দিলো। সবকিছুর একটা মাত্রা থাকে। যা অর্ণব খুব ভালো করেই জানে। সে এই মাত্রাটা পার করে না বা পার করার চেষ্টাও করে না। অর্ণবের এই গুণটা আমাকে অবাক করে দেয়। কতটা সংযত ও নিজের প্রতি কন্ট্রোল থাকলে কেউ তা পারে!
বললাম,
তানহা : সকালবেলা কিন্তু এই ব্যারিকেডের মাথা-মুন্ডু কিছুই থাকে না!

অর্ণব : হাহা। এটা কি পারমিশন নাকি?

তানহা : একদম না। শুধু বলে রাখলাম আরকি। ঘুমান এখন।

অর্ণব : আচ্ছা তুমি কি সেই মেয়েটা যে মেয়েটা বাসে আমাকে লুচ্চা, ছেসড়া আরো কত কি বলতেছিলো?

তানহা : হুম সেই মেয়েটাই, যার সাথে একটু আগে আপনি… ইয়ুউ!

অর্ণব : ঐটা বরাদ্দ ছিলো। এখন ঘুমান।

তানহা : হুম।
(ধন্যবাদ মিস্টার অর্ণব! আপনি আমাকে আমার বাবা-মা, একটা ছোট ভাই আর পৃথিবীর বেস্ট স্বামী উপহার দিয়েছেন। মুখে যাই বলিনা কেন বিশ্বাস করো আমি সারাজীবন তোমার পাশে হাতে হাত রেখে পায়ে পা মিলিয়ে হাটতে চাই। প্রচুর ভালোবাসি তোমাকে।)

হঠাৎ মধ্যরাতে ঘুম ভেঙ্গে গেলো। দেখলাম তানহা জায়নামাজে মুনাজাত করতেছে। এই মুহুর্তে তানহাকে দেখে আমার মধ্যে অন্যরকম এক শিহরণ খেলে গেলো। আমি তানহাকে এই প্রথম এই রূপে দেখলাম। মাথায় সুন্দরভাবে ওরনা দিয়ে ঢাকা। বুঝলাম তানহা তাহাজ্জুদের নামাজ পড়তেছে।

আমি উঠে ওযু করে আসলাম। আমাকে দেখে,
তানহা : কি ব্যাপার ঘুম থেকে উঠে পড়লেন যে?

অর্ণব : কারণ,

মহান আল্লাহ বলেন,

“হে নবী! আপনি রাত্রের কিছু অংশে তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করুন। এটা আপনার জন্য নফল (অতিরিক্ত)। হয়ত আপনার প্রভূ এ কারণে আপনাকে মাকামে মাহমুদে পৌঁছে দিবেন।”
-(সূরা বনী ইসরাঈল-৭৯)💕

বুঝলেন?

তানহা : আপনাকে কি বলে যে ধন্যবাদ দিবো তার ভাষা আমার কাছে নেই। জানেন আমি আজকে অনেক অনেক খুশি। আমার সবচেয়ে বড় ইচ্ছা ছিলো স্বামীর সাথে একসাথে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়া।

অর্ণব : হুম চলেন। কত রাকাত পড়লেন?

তানহা : দুই রাকাত পড়লাম।

অর্ণব : ওহ। সমস্যা নেই।

হাদিসে এসেছে,

“তাহাজ্জুদের নামাজ ২ থেকে ১২ রাকাআত (এর চেয়ে বেশী পড়া যাবে) তবে রাসূল (স.) অধিকাংশ সময় ৮ রাকাআত আদায় করতেন।”
-(সহীহ বুখারী- ১০৭৩)💕

তারপর আমরা দুজনে তাহাজ্জুদের নামাজ একসাথে পড়লাম।

নামাজ শেষ করে,
তানহা : এখন কি ঘুমাবেন?

অর্ণব : কেনো?

তানহা : না এখন ওতো সহজে ঘুম আসবে না। তাই চলেন ছাদে যায়ে গল্প করি।

অর্ণব : আর উনার সাথে মধ্যরাতে ছাঁদে যায়ে গল্প করা ছিলো আমার স্বপ্ন।

তারপর দুজনে মিলে ছাঁদে গেলাম। আর বাকি রাতটা আমরা গল্প করেই কাটায় দিলাম।

ভোরে ফযরের নামাজ পড়ে…

(চলবে…)

মূল গল্পের লেখক – নাহাজুল ইসলাম লাইফ❣

গল্পটির মূল নাম – “English Teacher যখন বউ”💝

[আগের পর্বগুলো Timeline এই দেওয়া আছে]🍁

💚ইমাম মাহদীর সন্ধানে💞


Comments

One response to ““অপেক্ষাটা অব্যক্ত ভালোবাসার”💖Part : 37”

  1. […] 32 Chapter 33 Chapter 34 Chapter 35 Chapter 36 Chapter 37 Chapter 38 Chapter 39 Chapter 40 Chapter 41 Chapter […]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *