অপেক্ষাটা অব্যক্ত ভালোবাসার”💖Part : 9

Islamic গল্প😊

“অপেক্ষাটা অব্যক্ত ভালোবাসার”💖

Part : 9

মেয়েটি :- আমার নাম তানহা,এবার কথা দেন ভোরে উঠে নামাজটা জামাতের সাথে পড়বেন!

(ইনি কি তাহলে নাজিমের ম্যাডাম? হতেও পারে। আর ইনি যদি নাজিমের ম্যাডাম হন তাহলে ইনি আমার বউও হতে পারে। ধুর আমিও বউ বউ করে পাগল হয়ে গেছি। এতো Co-incidence কিভাবে সম্ভব? আমার বউ আমার সাথে ফেক আইডি দিয়ে কথা বলতেছে আর আমরা দুইজনেই জানি না যে আসলে আমরা স্বামী-স্ত্রী কথা বলতেছি। হাহাহা এটা গল্পেই সম্ভব বাস্তবে না!)

অর্ণব : জি দেখা যাক।

তানহা :- কি দেখবেন?

অর্ণব : উঠতে পারি কিনা!…

তানহা :- Thanks আপনার নাম তো বললেন না?

অর্ণব :- নামটা অজানাই থাক না?

তানহা :-বলেন না প্লিজ?

অর্ণব : সময় হলে নিজে থেকেই বলবো।

তানহা :- মানে…….

অর্ণব : আমি অপরিচিত কাউকে নাম বলিনা।

তানহা : তাহলে আমার নাম শুনলেন যে?

অর্ণব : ঐটাতো আপনি নিজে থেকেই বললেন। আমি তো শুধু জিজ্ঞাসা করতেছিলাম।

তানহা : এটা ধোকা বুঝলেন।

অর্ণব : কিভাবে?

তানহা : ঐভাবে!

অর্ণব : ঐভাবে কিভাবে?

তানহা : বুঝেও না বুঝার ভান করিয়েন না।

অর্ণব : আমি আপনাকে ধোকা দেয় নি বুঝলেন। আপনি আপনা আপনিই বলছেন। এখানে কি আমার দোষ?

তানহা : হ্যাঁ আপনার দোষ।

অর্ণব : ওকে বাবা আমি দুঃখিত। আমাকে ক্ষমা করে দেন।

তানহা : ক্ষমা করবো এক শর্তে।

অর্ণব : জানি আমার নাম জিজ্ঞাসা করবেন!

তানহা : 😆😆😆.. নাহ বলতে হবে আপনার মাথায় মগজ আছে।

অর্ণব : সবার মাথায়ই মগজ থাকে!

তানহা : না আমি শুনছি ছেলেদের মগজ হাটুতে থাকে। হা হা হা।

অর্ণব : কই আমি তো কখনো শুনিনি।

তানহা : পৃথিবীতে এমন অনেক কথা আছে যা আপনি কোনদিনো শুনেন নি। তার মধ্যে এটা একটা। এতে অবাক হওয়ার কি আছে?

অর্ণব : আপনার সাথে কথায় পারা যাবে না।

তানহা : দেখতে হবে না মেয়েটা কে!😎

অর্ণব : আমার আপনাকে দেখার ইচ্ছাও নাই।

তানহা : আমি আপনাকে দেখাবোও না। তা আপনার নাম বলবেন না?

অর্ণব : জি সময় হলে আপনাকে আমি নিজে থেকে বলবো আমার নাম কি। এখন অনেক রাত হয়েছে। আমাকে আবার গল্প লিখতে হবে। শুভরাত্রী!

তানহা : জি আমারো ঘুম পাচ্ছে। আসসালাম অলাইকুম।

অর্ণব : অলাইকুম আসসালাম।

তারপর ফেসবুক থেকে লগ আউট করলাম। শুয়ে শুয়ে ভাবতেছি,
অর্ণব : আজকে কি দিন গেলো? সকালে ভাইটার জন্য ফাঁসে গেলাম,কলেজে আসতে দেরী হলো,ক্লাসেও দেরী করে ঢুকলাম তাই ম্যাডামের কাছে বোকা খাইলাম, ক্লাসের মাঝেও ম্যাডামের কাছে ফাঁসে গেলাম, ভুল করে রিপনকে আমার “উনার” কথা বলে ফেললাম, তারপর নাজিমের ম্যাডামের বাসার ঘটনা, ফির শেষে এই “গুনাহগার বান্দী” -র মেসেজ মানে তানহার সাথে চেটিং। উফফফ! আজকের দিনটা নিয়ে পুরা একটা গল্প লেখা যাবে।

এসব চিন্তাভাবনা করতে করতে কখন যে ঘুমায় গেছি টের পাইনি।

ভোরে ঘুম থেকে উঠলাম। আসলে একসাথে ১৫ টা এলার্ম দিয়ে রাখছিলাম মোবাইলে, প্রতি ৫ মিনিট পর পর। তাই আজকে টের পেলাম। ফযরের নামাজটা পড়লাম। আম্মু প্রচুর খুশি হইছে। নামাজ পড়ে আবার আসে ঘুমাইছি।

সকালে উঠলাম আম্মুর ডাকে। ফ্রেশ হয়ে নিচে গেলাম।

মিস রাদিয়া : আসসালাম অলাইকুম নবাবজাদা!

অর্ণব : অলাইকুম আসসালাম। নাজিম উঠছে?

মিস রাদিয়া : ও তোর মতো না। যে ৮ টা পর্যন্ত ঘুমাবে। সকালে উঠে আরবি পড়তে গেছে।

অর্ণব : এতক্ষণে তো চলে আসার কথা। আচ্ছা তুমি খাবার দেও।

মিস রাদিয়া : হুম বস।

খাওয়া দাওয়া শেষ করে কলেজের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। আজকে মশিউর আর রিপনের জন্য অপেক্ষা করলাম না। কারন আমি আগে বিষয়টা একাই মিটমাট করার চেষ্টা করবো। যদি না হয় তখন ওদের সাহায্য নিবো। নেহা আর নেগলাকে বলা হয়েছে ওরা যেন কলেজে না আসে। ওরা প্রথমে না রাজি হলেও একসময় রাজি হলো। যদি আসলেই মারামারি লাগে তাহলে অনেক বড় ঝামেলা হতে পারে।

১০ মিনিটে কলেজে পৌছে গেলাম। দেখলাম তিতুমির আর তার দলবল নিয়ে আড্ডা দিচ্ছে।

আমি তিতুমিরকে একা ডাকলাম,

তিতুমির : কি হলো ডাকলি কেনো?

অর্ণব : আসসালাম অলাইকুম বড় ভাই।

তিতুমির : হ্যাঁ হ্যাঁ। ডাকলি কেন ঐটা বল।

অর্ণব : আপনাকে কিছু কথা বলবো। আমার কথাগুলো একটু শুনিয়েন।

তিতুমির : ঠিক আছে। কিন্তু তাড়াতাড়ি কর।

অর্ণব : ইসলাম নারীদেরকে সম্মানিত করেছে। তাদেরকে কষ্ট দেওয়া তো দূরে থেকে অন্য মেয়েদের প্রতি তাকানো পর্যন্ত হারাম করা হয়েছে। নারীদের নিরাপত্তার স্বার্থে কুরআনে সবার আগে ছেলেদের পর্দার কথা আছে।

মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন,

“(হে নবী!)
আপনি ঈমানদার পুরুষদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি সংযত রাখে এবং গোপন অঙ্গের হেফাজত করে।
এতে তাদের জন্য উত্তম পবিত্রতা রয়েছে,
নিশ্চয়ই তারা যা করে আল্লাহ এ ব্যাপারে জানেন।
-(সূরা নূর, আয়াত-৩০)💕

যারা এ আদেশ অমান্য করবে তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি। কেননা এ আদেশ অমান্য করার ফলে সমাজের নারীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবে।

হাদিসে এসেছে,

রসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন,

“যে ব্যক্তি কোনো
গায়রে মুহরেম বা বেগানা নারীর সৌন্দর্যের প্রতি
কামনার দৃষ্টিতে তাকাবে, কিয়ামতের দিন তার
চোখে সিসা ঢেলে দেওয়া হবে।’
-(ফাতহুল কাদির)💕

তাহলে আপনিই বলুন আমাদেরকে নারীদের সম্মান না করে তাদের দিকে কুনজরে তাকানো কি ঠিক?

তিতুমির : হুম বুঝছি। এগুলা আমাকে কেন বলতেছিস?

অর্ণব : আমি বলতেছি কারন আপনি এর চেয়েও খারাপ কাজ করছেন। যা কতটা ভয়াবহ হতে পারে আপনি বুঝতে পারেন নি।

যেখানে শুধু কারো চেহারা কামনার দৃষ্টিতে দেখার ফলে চোখে লোহার সীসা ঢেলে দেওয়ার মতো কঠিন শাস্তি দেওয়া হবে সেখানে কাউকে উত্যক্ত করার শাস্তি আরো কতটা ভয়াবহ হতে পারে ভেবে দেখেন। এটা তো আরো বড় পাপকাজ। আবার যাকে উত্যক্ত করা হচ্ছে তার উপর জুলুম করা হচ্ছে। আর জুলুমের শাস্তি সম্পর্কে

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

“অচিরেই জালিমরা জানতে পারবে, তাদের প্রত্যাবর্তনস্থল কোথায় হবে।”
-(সুরা : শুআরা, আয়াত : ২২৭)💕

অন্য হাদিসে এসেছে,

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,

“দুটি পাপের শাস্তি আল্লাহ তাআলা আখিরাতের পাশাপাশি দুনিয়ায়ও দিয়ে থাকেন। তা হলো, জুলুম ও আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার শাস্তি।”
-(তিরমিজি, হাদিস : ২৫১১)💕

তিতুমির : আমি কি করছি?

অর্ণব : নেগলাকে ডিস্টার্ব করে আপনি অনেক বড় ভুল করেছেন। এটা আপনার উচিৎ হয় নি। দয়া করে আর এই কাজ করিয়েন না। আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েন। কারন এর দ্বারা আপনার অনেক পাপ হয়েছে।

তিতুমির : ওহ।

এই সময় পিছন থেকে তিতুমিরের দলবল চলে আসলো।

সুজা : কিরে তিতুমির এত দেরি হচ্ছে কেন? তোর দেরী দেখে আমরাও আসলাম।
(তিতুমিরের বন্ধু)

রিফাত : এ কি বলতেছে?
(তিতুমিরে বন্ধু)

তিতুমির : বলতেছে নেগলাকে ডিস্টার্ব করে আমি খারাপ কাজ করছি।

সুজা : ওহ! এই ব্যাপার। কেন নেগলাকে ডিস্টার্ব করছিতে তোর কেন গায়ে লাগতেছে। তোর মাল নাকি? তোর মাল হইলে বল আর ডিস্টার্ব করবো না।

(সবাই হেসে উঠলো)

অর্ণব : দেখেন নেগলা আমার খুব ভালো বন্ধু। আর কাউকে উত্যক্ত করা খুব খারাপ কাজ। আর এটা হারামও। তাই আর করিয়েন না।

রিফাত : তোর এত বড় সাহস বড় ভাইদের জ্ঞান দিতে আসছিস?

সুজা : দুই মাস আগের ঘটনা এখনো আমরা ভুলিনি। এই তোরা লাঠি সোটা নিয়ে আয় তো। আজকে শোধ তুলবো।

রিফাত : আজকে সব হিসাব কিতাব হবে। ঐদিন তোর ভাগ্য ভালো ছিলো। আজকে বাবা তুমি কোথায় যাবা?

তিতুমির : আমি ভুলেই গেছিলাম ঘটনাটার কথা। শুধু লাঠি না হকি স্টিক নিয়ে আয়। আজকে একে র‍্যাগ দিবো।

রিফাত : এই তোরা আয় আমার সাথে। সুজা ওকে দেখিস যাতে পালাতে না পারে। আমি লাঠি – হকি স্টিক নিয়ে আসতেছি।

আমার কথায় তিতুমির একটু নরম হলেও, এরা আসায় পুরাটা ভেস্তে গেল। এখন মারামারি লাগবেই। ধুর একা আসা উচিৎ হয় নি। পালানোর কোন সুযোগ নেই। ওরা সংখ্যায় ৫-৬ জন। এখন বোধহয় মার খাবোই।

(চলবে…)

মূল গল্পের লেখক – নাহাজুল ইসলাম লাইফ❣

গল্পটির মূল নাম – “English Teacher যখন বউ”💝

[আগের পর্বগুলো পেজের Timeline এই দেওয়া আছে]🍁

💚ইমাম মাহদীর সন্ধানে💞


Comments

One response to “অপেক্ষাটা অব্যক্ত ভালোবাসার”💖Part : 9”

  1. […] Chapter 4 Chapter 5 Chapter 6 Chapter 7 Chapter 8 Chapter 9 Chapter 10 Post navigation ← Previous […]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *