ইসলামে পুরুষের পর্দা পালন করার নিয়ম-কানুন পবিত্র কোরআন ও সহীহ হাদীস সমূহে উল্লেখ করা হয়েছে। নিম্নে নিয়ম গুলো আলোচনা করা হলো-
(১) পুরুষের নাভীর ওপর থেকে হাঁটুর নিচে এবং টাকনুর ওপর পর্যন্ত ঢাকতে হবে। পুরুষের হাটুর ওপরে এবং টাকনুর নিচে কাপড় পরা কবিরা গুনাহ ।
(২) এমন পোশাক পরিধান করবে, যা বিপরীত লিঙ্গের প্রতি যৌন আবেদনময় হবে না এবং বিকৃত চিন্তার জন্ম দিবেনা।
(৩) পোশাক এমন পাতলা হওয়া যাবেনা যাতে কাপড় পরা সত্বেও ওপর দিয়ে ভেতরের চামড়া নজরে আসে। কারণ এমন কাপড় পরা না পরা একই কথা।
(৪) পোশাক হতে হবে ঢিলেঢালা এবং মার্জিত। এমন আঁট-সাঁট (টাইটফিট) হওয়া যাবেনা যাতে দেহের উঁচু-নিচু গঠন বোঝা যায় ।
(৫) পোশাকটি যেন কোনো অবিশ্বাসী/কাফেরদের অনুকৃত না হয়। প্রিয় নবীজী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি যে জাতির সাদৃশ্য অবলম্বন (পোশাকে, চাল-চলনে অনুকরণ) করবে, সে তাদেরই দলভুক্ত।’ (আবূ দাউদ, মিশকাত: ৪৩৪৭)
(৬) পোশাকটি যেন বিপরীত লিঙ্গের পোশাকের অনুরূপ না হয়। এ সম্পর্কে মহানবী (সা.) বলেছেন-সেই সমস্ত নারীদেরকে অভিশাপ দিয়েছেন, যারা পুরুষদের বেশ ধারণ করে এবং সেই সমস্ত পুরুষদেরকেও অভিশাপ দিয়েছেন, যারা নারীদের বেশ ধারণ করে। (আবূ দাউদ: ৪০৯৭, ইবনে মাজাহ: ১৯০৪)
(৭) পোশাক যেন জাঁকজমকপূর্ণ প্রসিদ্ধিজনক না হয়। কারণ, এমন ধরনের পোশাক পরলে সাধারণত পরিধানকারীর মনে অহংকারের সৃষ্টি হয়। তাই মহানবী (সা.) বলেন- ‘যে ব্যক্তি দুনিয়াতে প্রসিদ্ধিজনক পোশাক পরবে, আল্লাহ্ তাকে কিয়ামতের দিন লাঞ্ছনার পোশাক পরাবেন। (আহমাদ, আবূ দাউদ, ইবনে মাজাহ, মিশকাত: ৪৩৪৬)
পোশাকের পর্দা ছাড়াও একজন পুরুষের চোখের পর্দা, মনের পর্দা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একজন পুরুষের চোখ শুধুমাত্র তার নিজের স্ত্রীর সৌন্দর্য দর্শন করার অনুমতি পায়। একজন পুরুষের জন্য নিজ স্ত্রী এবং কিছু নির্ধারিত নারী ব্যতীত অন্য কোন নারীর চেহারার সৌন্দর্য চোখে দেখা বা দেহের আকৃতি অন্তরে অনুভব করাও ‘হারাম’।
বুরায়দা (রা.) কতৃক বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) একবার হজরত আলী (রা.)-কে বলেন, ‘হে আলী! তুমি দৃষ্টির পর দৃষ্টি ফেলো না। হঠাৎ অনিচ্ছাকৃতভাবে যে দৃষ্টি পড়ে তার জন্য তুমি ক্ষমা পাবে। কিন্তু পরবর্তী দৃষ্টি তোমার জন্য বৈধ নয়।’ (আহমাদ, তিরমিযী, আবুদাউদ, দারেমী, মিশকাত: ৩১১০)
Leave a Reply