গল্পঃ:-শান্তির খোঁজে পর্ব:-১১

গল্পঃ:-শান্তির খোঁজে

পর্ব:-১১

Writer:-Hassab bin Ahmed.

সকালে হুমাইরার কলেজে গেলাম হুমাইরাদের ক্লাসে ঢুকে বললাম “আজ থেকে আমি তোমাদের উদ্ভিদ বিজ্ঞানের শিক্ষক। “

( আমাকে এই ভাবে দেখে 🤭 🤭হুমাইরা ও হুমাইরার বান্ধবীরা এতো আশ্চর্য হয়েছে তা বলে বোঝানো যাবে না। হুমাইরা তো এক পলকে তাকিয়ে আছে। 😶

তো পরিচয় পর্ব শেষ করে আমি বললাম আজকে নতুন কোনো পড়া শুরু করবো না । তাই কারো যদি কোন প্রশ্ন থাকে করতে পারো। একজন প্রশ্ন করলো ‘Who is called the “father of botany”?’

আমি:- The ancient Greek Theophrastus ( 371–286 B.C.E. ) is known as the father, or founder, of botany. 

আর কেউ কিছু বলছে না দেখে আমি হুমাইরা কে ইশারা করে বললাম 

আমি:- আমার মনে হয় তুমি কিছু বলবে ☺️

হুমাইরা:- আ আ মি । না আ স্যার কিছু বলবো না।( তোতলিয়ে 🤤 ) ।

( নিজের বউ এর কাছে থেকে স্যার ডাক শুনা সত্যিই ভাগ্যর ব্যাপার ☺ )

আমি:- আরে ভয়ের কিছু নেই । বলো, কি জানতে চাও?

(হুমাইরা বুঝতে পারছে না কি বলবে । তাই এমনি বললো )

হুমাইরা:- Sir, what is botany?

আমি:- ( মনে মনে – এটা কি ধরনের প্রশ্ন যাইহোক কিছু তো বলতেই হবে)

Botany is the scientific study of plants, or multi cellular organisms, that carries on photosynthesis. As a branch of biology, botany sometimes is referred to as plant science or plant biology. Botany includes a wide range of scientific sub disciplines that study the structure, growth, reproduction, metabolism, development, diseases, ecology and evolution of plants.

The study of plants is important because they are a fundamental part of life on Earth, generating food, oxygen, fuel, medicine and fibers that allow other life forms to exist. Through photosynthesis they absorb carbon dioxide, a waste product generated by most animals and a greenhouse gas that contributes to global warming.

( ক্লাস শেষ করে অফিস রুমে এলাম। এই কলেজের একটা নিয়ম ভালো লেগেছে প্রত্যেক শিক্ষকের জন্য আলাদা আলাদা রুম করা হয়েছে।‌ অল্প পরেই হুমাইরা আর ওর কিছু বান্ধবী আমার রুমের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। )

হুমাইরা:- স্যার আসতে পারি?

( আমি জানতাম এরকম কিছু একটা হবে 🙄 )

আমি:- জি আসো। 🙇

হুমাইরা:- স্যার আসলে ওরা ( বান্ধবী দের দিকে ইশারা করে ) ‌কিছু বলতে চায়।

আমি:- জি বলো কি বলবে?

ওরা সবাই একসাথে বলছে আমাদের ভুল হয়ে গেছে স্যার আমাদেরকে মাফ করে দিবেন । আসমা মেয়েটা কেঁদেই দিলো।

আমি:- আরে আমি তো তোমাদের তখনই মাফ করে দিয়েছি । ক্লাসে যাও ভালো করে পড়াশোনা করো।

( তারপর সবাই রুম থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে এমন সময় )

আমি:- হুমাইরা তুমি থাকো 🤗.

ওরা সবাই চলে গেলো শুধু হুমাইরা বাদে।

হুমাইরা:- কি হয়েছে?  আর আপনি আমাকে একটি বার বললেন না তো যে আপনি এখানে….

আমি:- তোমাকে সারপ্রাইস দিলাম 🤗 আর কি হয়েছে কি, মানে কি? 🤔 মনে নেই রাতে কি বলছেলে?

হুমাইরা:- কি বলছিলাম 🤔।

আমি:- আমাদের যখন দেখা হবে তখন কি দিতে চেয়েছিলে 😊

হুমাইরা:- আমি কি জানতাম নাকি 🙄,,,, আমি পারবো না। 😏

আমি:- আমি কিছু জানি না। তোমাকে দিতেই হবে। 😾

হুমাইরা:- আমি পারবো না। 😒 

এমন সময় নাছির কল করেছে । আমি কল ধরতেই হুমাইরা এক দৌড়ে চলে গেল । নাছির আমাকে বলল ‌যে আমাদের মাস্টারস ডিগ্রীর ক্লাস ১২ টায় আরম্ভ হবে । এখন বাজে ১১ টা তাই বেরিয়ে গেলাম ।

এই ভাবে দিনগুলো ভালই চলছিলো। কিন্তু  এক সপ্তাহ পর হঠাৎ একদিন হুমাইরা কলেজে আসে নাই।  হুমাইরার মোবাইল ও সুইচ অফ। মন খারাপ থাকায় আমি কলেজে  না গিয়ে বাড়িতে চলে এলাম। রুমে ঢুকতেই কে যেন আমাকে জড়িয়ে ধরলো। হুমম ☺ এইটা তো আমার আদরের পাখি ‌হুমাইরা । 

আমি:- তুমি এখানে কেন ? 🤔

হুমাইরা:- কেনো আসতে পারি না? 😐

আমি :- কেনো পারবে না ☺ এটা তো তোমারই ঘর। 🙂 🤗 

হুমাইরা:- আমি একে বারে চলে এসেছি। 🙄

আমি:- মানে কি? 🤔 তোমার কলেজ? 😐

হুমাইরা:- এখান থেকে যাওয়া আসা করব 🙄

আমি:- তুমি কি পাগল হয়ে গেছো। 😐 এতো ‌রাস্তা কিভাবে প্রত্যক দিন যাওয়া আসা করবে ?

হুমাইরা:- আপনি যে ভাবে যান।

আমি:- কিন্তু তোমার বহুত কস্ট হবে।

হুমাইরা:- আপনার কস্ট হয় না ? আর আপনি তো এতো হাদিস বলেন তাহলে কি আপনি সহিহ মুসলিমে’ র ৩৪৩০ নং হাদীস জানেন না?

আমি :- জানি তো।

হুমাইরা:- হাদীস টি বলেন তো ।

আমি:- আচ্ছা সরি?

হুমাইরা:- আপনাকে হাদীস বলতে বলেছি , সরি বলতে বলি নাই 😡।

আমি:- বলতেই হবে? 😐

হুমাইরা:- হুম। 🙄

আমি:-আবূ হুরায়রাহ্ (রাযিঃ)-এর সুত্রে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, স্বামীর বিছানা পরিহার করে কোন স্ত্রী রাত্রি যাপন করলে ফজর পর্যন্ত মালাকগণ তার প্রতি লা’নত করতে থাকে। (ই.ফা ৩৪০৩, ই.সে ৩৪০২)

সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৩৪৩০.

হুমাইরা:- হুম। এবার আপনি আমাকে একটি সত্যি কথা বলেন।

আমি:- কি?

হুমাইরা:- আপনি কি এই কদিন খুশি ছিলেন?

আমি:- না ।

হুমাইরা:- তাহলে আপনি আমাকে হাদীস টি বলেন নাই কেনো?

আমি:- আচ্ছা সরি?

এই বলে আবার জরিয়ে ধরলাম । রাতে হুমাইরা কে একটি পেকেট দিলাম।

হুমাইরা:- কি আছে এখানে?

আমি:- কিছু কাপড় আছে। এখুনি পড়ে আসো।

( কিছু সময় পর  হুমাইরা রেডি হয়ে বেরিয়ে এলো। 

পরনে কালো পাড়ের নীল রঙের হাফ সিল্ক শাড়ি , মেচিং ব্লাউজ, খোলা চুল , কানে ঝুমকো দুল, ঠোটে হালকা লিপস্টিক । আমি তো দেখেই হিতা হিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছি 😮 🤯 🧟‍♂ মানুষ এতো সুন্দরী কিভাবে হয়। কবি চন্ডী দাস বলেছিলেন – 

নীল শাড়ি মোহনা করি

উচ্ছলেতি দেখি পাশ

কি আর পরানে সুপিনু চরনে

দাস করি মনে আশ

আমি তো এক পলকে তাকিয়ে আছি হুমাইরার দিকে । হুমাইরা মনে হয় কিছু বলছে আমাকে কিন্তু আমি কিছু শুনতে পাচ্ছি না আমি দেখেই যাচ্ছি এক নয়নে 🤤। হুমাইরা এসে আমাকে হালকা ধাক্কা দিয়ে বললো

হুমাইরা:- কি হয়েছে 😕 এভাবে তাকিয়ে আছেন কেনো ? কত সময় ধরে ডাকছি শুনতে পাচ্ছেন না?

আমি:- ( তখন আমার ধ্যান ভাংলো ) আমি জে সেন্সলেস হয়ে যাই নি এটাই তো অনেক । তোমাকে এই রুপে দেখে আমি আমার ভিতরে নেই। এই বলে আমি হুমাইরার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। 😎 😁

হুমাইরা:- কি হচ্ছে । এদিকে আসবেন না । ( বলতে বলতে পিছিয়ে যাচ্ছে)

আমি:- কেনো?

হুমাইরা:- দেখুন ভালো হবে না কিন্তু 😣

আমি:- খারাপ কি হবে? 😎

হুমাইরা ঘরের ভিতরেই দৌড়াতে আরম্ভ করলো । সঙ্গে আমিও পিছন পিছন ছুটছি । একটা সময় হুমাইরা কে ধরে দেয়ালের সঙ্গে চেপে ধরলাম ।

হুমাইরা:- ছেড়ে দেন প্লিজ  😐

আমি:- এতো কস্ট করে ধরলাম ছেড়ে দেওয়ার জন্য নাকি? 🙄

হুমাইরা:- আজকে ছেড়ে দেন । কালকে আপনার যতো ইচ্ছে ‌আদর দিবো 😌।

আমি:- ও সব বাহানা চলবে না । এভাবে তুমি আমাকে বহুত  ঠকিয়েছো ।

হুমাইরা যদিও মুখে মুখে ছেড়ে দেয়ার কথা বলছে কিন্তু ছাড়ানোর কোনো চেষ্টা করছে না । হয়তো হুমাইরা ও চাইছে আমি যাতে ছেড়ে না দেই।

আমি:- ও গো 

হুমাইরা:- কি( ভয়ে ভয়ে)

আমি:- তোমার ও ঠোঁটের মিষ্টি টা অল্প নেই । 😁 😋

( বলেই  দুজনের ঠোঁট এক করে দিয়েছি 🙈)

কত সময় ছিলাম মনে নেই হবে হয়তো ১০ মিনিটের মতো )

হুমাইরা:- আপনি মানুষ নাকি রাক্ষস।( হাঁপাতে হাঁপাতে)

আমি:- আমি তোমার রাক্ষস ।

আমি:- ও গো আমার টুনটুনি পাখি?

হুমাইরা:- কি? ( আবার মনে হয় আরো ভয় পেয়েছে)

আমি:- চোলো না একটু দুষ্টুমি করি ☺️।

হুমাইরা:-ছেড়ে দেন না।

আমি :- এই নাও ছেড়ে দিলাম।

(  এই বলে আমি পিছন দিকে ঘুরে যখনি চলে যেতে চাইছিলাম  তখনি হুমাইরা আমাকে ধরে তার দিকে ঘুরিয়ে নিল। আমি চেয়ে আছি হুমাইরার দিকে হুমাইরা চেয়ে আছে আমার দিকে কতক্ষণ এভাবে ছিলাম বলতে পারবো না। হঠাৎ হুমাইরা নিজে ওর ঠোঁট আমার ঠোঁটের মধ্যে ডুবিয়ে দিল। আমি তো মনে হয় সপ্ন দেখতেছি। 😍 

এখন কি আর অভিমান করে থাকা যায় 🤗। তারপর হুমাইরা কে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিলাম। তারপর….

তারপর আর কি 🙄 দুটি অন্তর মিসে গেলো ভালবাসার সাগরে । যেভাবে বৃস্টির পানি মিশে যায় মাটির সঙ্গে।

            ………………… সমাপ্ত……………….


Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *