গল্প:গন্তব্য
পর্ব:৫
লেখক: হাছাব বিন আহমেদ।
হুমায়রা দের বাসায় যাচ্ছি, কিন্তু আমি যে ভুল করেছি তার কখনো ক্ষমা হয় না! আমি হুমাইরার সঙ্গে কোন মুখ নিয়ে যাবো? সব চিন্তার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে হুমাইরাদের বাসায় উপস্থিত হলাম! শাশুড়ি আম্মা গেট খুলে দিল!
হুমায়রার আম্মা: আরে বাবা, এই অবেলায় তুমি, আসো ভিতরে আসো!
আমি: এই এখান দিয়েই চাচ্ছিলাম, ভাবলাম হুমায়রার সঙ্গে দেখা করে যাই!
হুমায়রার আম্মা: ও রুমেই আছে! যাও!
আমি সোজা হুমাইরার রুমে প্রবেশ করে দরজা লাগিয়ে দিলাম! আমাকে দেখে হুমাইরা দাঁড়িয়ে রাগি গলায় বলল –
হুমায়রা: আপনি এখানে কেন?আর দরজা লাগালেন কেন??
আমি: আপনার সঙ্গে কিছু জরুরী কথা আছে!
হুমায়রা: আপনার মতো নিচু পর্যায়ের মানুষের সাথে আমার কোন কথা নেই!
আমি: সরি,আই এম রিয়েলি সরি! চলেন বাসায় চলেন!
হুমায়রা: বাসা! কার বাসা?
আমি: আপনার বাসায়! যে ঘরটাকে আপনি নিজের মতো করে সাজিয়েছেন!! আজো সবকিছু ঠিক সেরকমই আছে!!
হুমায়রা: কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দিতে এসেছেন??
আমি: যে সজিব কে আপনি চিনতেন আমি তা নৈ! আমি চেঞ্জ হয়েছি বিশ্বাস করেন!!
হুমায়রা: আপনি বদলান নাই, আপনার মন বদলে গেছে!তখন বাসা থেকে বের করে দেওয়ার মন হয়েছিল!! এখন আবার বাসায় তোলার মন হয়েছে। আমি কি খেলার পুতুল যখন চাইলেন খেললেন, নাহলে ভেঙে ফেললেন! আমি আপনার কাছে কি জানিনা তবে নিজের কাছে একটা সন্মান আছে!
আমি: প্লিজ! আমাকে বুঝার চেষ্টা করুন।
হুমায়রা: ভদ্র লোকের ঘরে এসেছেন চা খেয়ে যাবেন!!
বলেই চলে যেতে চাইলো! আমি পিছন থেকে হাত টেনে ধরে হাঁটু গেড়ে বসলাম!
আমি: হুমায়রা আপনি যদি বলেন আমি আপনার পা ধরেও ক্ষমা চাইতে পারি! আমাকে একটা সুযোগ দিন! আজ আমাকে ফিরিয়ে দিয়েন না! আপনি আপনি আমাকে মাত্র সাত দিন সময় দিন! সাত দিন পর যদি আপনার মনে হয়, আমার সঙ্গে সংসার করা যাবে না! তাহলে আপনি চলে আসবেন আমি কিছু বলবো না! প্লিজ আপনি বাসায় চলেন! আর আপনি তো জানেন ক্ষমাশীল ও ধৈর্যবানের প্রশংসায় আল্লাহ বলেন, ‘যে ব্যক্তি ধৈর্য ধরবে ও ক্ষমা করবে, সন্দেহাতীতভাবে এটা বড় উচ্চমানের সাহসিকতাপূর্ণ কাজের অন্যতম।’ (সুরা আশ শুরা, আয়াত : ৪৩) ( বলতে বলতে চখে পানি চলে এসেছে)
হুমায়রা: বাহ আপনি তো কোরানের আয়াত ও বলতে পারেন! আচ্ছা ঠিক আছে আমি যাবো আপনার সঙ্গে কিন্তু মনে রাখবেন ৭ দিন পর যদি আমার ভালো না লাগে তাহলে কিন্তু আমি চলে আসবো, সারাজীবনের জন্য!
আমি: আচ্ছা ঠিক আছে।
হুমায়রা: আপনি ফ্রেস হয়ে নিন, আমি খাবার রেডি করেছি!
আমি: না! এখন আমার গলা দিয়ে খাবার নামবে না! আপনি আগে বাসায় চলেন!
হুমায়রা: আচ্ছা ঠিক আছে আপনি বসুন আমি রেডি হয়ে আসছি!
আমি: আমি রাস্তায় আছি আপনি রাস্তায় আসেন!
হুমায়রা: ওকে!
আমি হুমায়রার আম্মার থেকে বিদায় নিয়ে রাস্তায় এসে আমার বাইকের উপর বসলাম! কিছু সময় পর হুমায়রা আসলো!
হুমায়রা: আপনি বাইক নিয়ে এসেছেন?
আমি: জি?
হুমায়রা: তাহলে আমি কিভাবে যাবো?
আমি: কেন বাইকে?
হুমায়রা: আমাকে আপনার বাইকের পিছনে উঠানেন?? মনে নেই বিয়ের এক সমাপ্ত পর আমি আপনার বাইকে উঠেছিলাম বাজারে যাওয়ার জন্য!! আপনি কি বলেছিলেন?? মনে পড়ে?? আপনি বলেছিলেন আমার বাইকের পিছনে ছোটো লোকদের উঠাই না! লাইন গাড়ি দিয়ে যেখানে খুশি সেখানে যেতে পারোস??
আমি কিছু বললাম না মাথা নিচু করে বললাম ” আপনি যদি বাইকে না যেতে চান তাহলে রিক্সা নেই?
বাইক পড়ে নিয়ে যাবো…..!!
আমার কথা শেষ হতেই হুমায়রা বাইকের পিছনে উঠে বসে পরলো!!এই প্রথম হুমায়রা কে নিয়ে বাইক চালাচ্ছি!! এটাও একটা ভালো লাগার মতো অনুভূতি!! কিছু সময় পর বাসায় এসে পৌঁছলাম!
আমি: আপনি বসুন আমি বাইরে থেকে খাবার নিয়ে আসি!
হুমায়রা: কেন বাসায় খাবার নেই!
আমি: না বাসায় খাবার নেই!!
হুমায়রা: থাক এখন আর বাইরে যাওয়ার দরকার নেই! রুমে যা কিছু আছে ওগুলো দিয়েই আমি কিছু করে দিচ্ছি!!
আমি: রুমে সত্যি কিছু নেই শুধু ডিম আর আলু হবে হয়তো!
হুমায়রা: ওকে, হয়ে যাবে!
হুমায়রা কিচেন গিয়ে রান্না শুরু করলো, রান্নার পর ডিম ভাজি আর আলু ভর্তা দিয়ে দুজনে খেয়ে নিলাম! তারপর আমরা একটু দুরে দুরেই থাকলাম!
রাত ৯ টা হুমায়রা বেডরুমে খাটে বসে আছে! আমি গিয়ে হুমায়রার সামনে দিয়ে ঘুরা ঘুরি শুরু করলাম!
হুমায়রা: কিছু বলবেন?
আমি: I cannot live without you. I have come to say sorry.I am really really sorry.
হুমায়রা: You want to say sorry right? Okk, you did.
আমি: এখনো রেগে আছেন? আচ্ছা বলুন, এখন আমি কি করতে পারি!
হুমায়রা: I don’t know..
আমি: আপনি শুধু বলুন, আপনি যা বলবেন আমি তাই করবো!!
হুমায়রা: probably be a man. Do what needs to be done.
আমি: এখন একটু রাগ টা কমান।
হুমায়রা: আপনার উপর রাগ ও অভিমান এতো সহজে শেষ হবে না!
আমি: আচ্ছা ঠিক আছে! আমি ঐ দিনটার জন্য অপেক্ষা করবো! এখন আমাকে একটি পরামর্শ দিবেন??
হুমায়রা: কি পরামর্শ?
আমি: কাল আমি একটি পবিত্র কোরআনের আয়াত দেখলাম! “সূরা আল ইমরান আয়াত নং ১০৪-আর যেন তোমাদের মধ্য থেকে এমন একটি দল হয়, যারা কল্যাণের প্রতি আহবান করবে, ভাল কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করবে। আর তারাই সফলকাম।”
এই আয়াত নিয়ে আমি অনেক ভেবেছি তাই আমি চিন্তা করলাম আমি একটি দাওয়া সেন্টার খুলবো!
হুমায়রা: আলহামদুলিল্লাহ, শুনে অনেক ভালো লাগলো কিন্তু তার আগে আপনার প্রথম কাম কি হবে জানেন?
আমি: কি?
হুমায়রা: প্রথমে আপনাকে পড়তে হবে ! শুনেন আপনাকে বলি ইসলামে পড়া কতটা গুরুত্বপূর্ণ!
1.‘পড় তোমার প্রভুর নামে, যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। পড় এবং তোমার প্রতিপালক মহা সম্মানিত। যিনি কলমের মাধ্যমে শিক্ষা দিয়েছেন। যিনি মানুষকে শিক্ষা দিয়েছেন, যা =-সে জানত না।’ [আলাক্ব ১-৫]
2.‘পড় তোমার প্রভুর নামে, যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। পড় এবং তোমার প্রতিপালক মহা সম্মানিত। যিনি কলমের মাধ্যমে শিক্ষা দিয়েছেন। যিনি মানুষকে শিক্ষা দিয়েছেন, যা সে জানত না।’ [আলাক্ব ১-৫]
3.জ্ঞানার্জন করা প্রত্যেক মুসলমানের উপর ফরয! (মিশকাতুল মাছাবীহ, তাহক্বীক্ব : মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দীন আলবানী, হা/২১৮।)
4.যারা জানে আর যারা জানে না তারা কি সমান হ’তে পারে? (যুমার ৯)
5. যে ব্যক্তি জ্ঞানার্জনের কোন পথ অবলম্বন করে আল্লাহ তার জন্য জান্নাতের পথ সহজ করে দেন। যখন কিছু লোক একত্রিত হয়ে আল্লাহ্র কিতাব অধ্যয়ন করে এবং নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে তাদের উপর নেমে আসে প্রশান্তি, ঢেকে রাখে তাদেরকে আল্লাহ্র রহমত, পরিবেষ্টিত করে তাদেরকে ফেরেশতাগণ এবং তাদের ব্যাপারে আল্লাহ ফেরেশতাদের নিকট আলোচনা করেন।’( আহমাদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/২১২)
আমি: হুম!ঠিক! তাহলে আমি আজ থেকেই পড়া শুরু করে দেই ঠিক আছে তাহলে থাকো আমি যাই!
হুমায়রা:এত রাতে কোথায় যাবেন?
আমি: পাশের রুমে শুতে যাই!
হুমায়রা: কেন আমার সঙ্গে ঘুমাতে কি প্রবলেম?
আমি: না প্রবলেম নেই, ভাবলাম আপনার যদি কোন প্রবলেম হয় তাই আর কি !
হুমায়রা: এই সব বাদ দিয়ে এখানে শুয়ে পড়ুন!
আমি ফ্রেশ হয়ে এসে শুয়ে পড়লাম! হুমায়রা ও আমার পাশে শুয়ে পরলো!
আমি: আমি আপনার সঙ্গে এত খারাপ ব্যবহার করলাম তাও আপনি আমার সঙ্গে এক বিছানায় থাকতে চান কেন!
হুমায়রা: কারণ আমার আম্মু বলতো – স্বামীর স্থান হচ্ছে আল্লাহ এবং তার রসূলের পরে””! তাহলে স্বামীর মর্যাদা কতখানি বুঝেছিস”! আর তার মনে কষ্ট দিলে আল্লাহ কতটুকু নারাজ হন””!
আরেকটা কথা কি জানিস, শয়তান তখন খুব খুশি হয় যখন স্বামী স্ত্রীর মাঝে কোলাহল আর বিভেদ সৃষ্টি থাকে””!
তাই যত রাগারাগি হোক না কেন””? কখনো দুজন দুজনকে ছাড়া থাকবি না”””।
কারন দূরত্ব দূরত্ব বাড়ায়””””!
আর পাশাপাশি বাড়ায় মনের জোর””!
বরের সাথে ঝগড়া করবি না কেন””।করবি””! কিন্তু ঝগড়াটা হওয়া চাই মার্জিত “!
এখন বেশি কথা না বাড়িয়ে ঘুমান!
*****
সময়ের সাথে সাথে মানুষ বদলে যায় বদলে যায় তাদের চাওয়া পাওয়া! আমিও নিজেকে বদলানোর চেষ্টা করছি ।
আমি বিছানায় শুয়ে আছি! হুমায়রা আয়নার সামনে বসে চুল আস্রাচ্ছে আমাকে আয়নার মধ্য থেকে তাকিয়ে থাকতে দেখে হুমায়রা আমার পাশে এসে বসলো, আমি চোখ নামিয়ে নিলাম! এইটা দেখে হুমায়রা বলল “আপনি তো দেখি মেয়েদের মত লজ্জা পান” বলেই একটি হাসি দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেল!
আর আমি ভাবতে লাগলাম সাত দিনের একদিন চলে গেল, কিভাবে হুমায়রার রাগ দূর করব মন খারাপ করে দুশ্চিন্তায় দুপুর অব্দি বিছানায় শুয়ে আছি! হুমায়রা এসে আমাকে দুপুরে লাঞ্চের জন্য ডাকলো! আমি বললাম “খাব না” হুমায়রা আমার পাশে বসে প্রশ্ন করলো “কি হয়েছে আপনার? (কপালে হাত দিয়ে দেখার চেষ্টা করলো জ্বর হয়েছে কিনা)
আমি: আমার কিছু হয়নি আপনি এখান থেকে যান!
হুমায়রা আমার হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে গিয়ে খেতে দিল কি আর করা দুজনে খেয়ে নিলাম!
*****
সন্ধ্যায় দুজনে বসে চা খাচ্ছি আচ্ছা
আমি: আপনাকে একটা প্রশ্ন করি!
হুমায়রা: জি করুন!
আমি: আপনি উচ্চশিক্ষিত হয়েও শুধু গৃহিণী হতে চাচ্ছেন আপনার কি ভবিষ্যতে আফসোস হবে না যে আমি গৃহিণী না হলে জীবনে অনেক কিছু করতে পারতাম!
হুমায়রা: ধরুন, দুইজন যমজ বোন দুজনই ডাক্তার, দুজনেরই বয়স ৩২ একজন এমবিবিএস শেষ করে বিয়ে করলো না ভাবল যে ক্যারিয়ারটা একটু এগিয়ে নিয়ে যাই! এবং সে এমডি করে অনেক বড় ডাক্তার হয়ে গেল !সবাই তার সুনাম করে! কিন্তু তার লাইফে অনেক দুঃখ, অনেক আক্ষেপ, সে এখন পর্যন্ত বিয়ে করতে পারে নাই ,তার মাঝখানে কিছু এলোমেলো সম্পর্ক ছিল, তার এখনও বাচ্চা নেই, সে যখন ফেসবুকে যায় তখন দেখে তার ফ্রেন্ডরা স্বামীকে নিয়ে হানিমুন করতে গেছে! তার বোন স্বামী সন্তান নিয়ে বিদেশে ঘুরতে গেছে! তার কাছে মনে হয় আমি তো এখন একেবারে একা, সে আফসোস করে তার জীবনটা কাটিয়ে দিচ্ছে!
অন্যদিকে, তার জমজ বোন সে এমবিবিএস শেষ করার পর বিয়ে করল! বিয়ে করার পর বাচ্চা নিল! কিন্তু তার লাইফেও অনেক আক্ষেপ অনেক দুঃখ, সে এমডি করতে পারত, সে অনেক বড় ডাক্তার হতে পারতো, সে যখন তার বোনকে দেখে সে মনে করে তার জীবনে সে কিছুই করতে পারে নাই শুধু একজন গৃহিনী হয়েই আছে! সে চাইলেই বিয়ে না করে অনেক বড় ডাক্তার হতে পারতো!
তো এখান থেকে কি বুঝলেন! আপনি যেটাই করেন না কেন আপনি সন্তুষ্ট থাকবেন না! আপনার আক্ষেপ থাকবেই! সো ইসলাম যেটা পছন্দ করে সেটা করাই উত্তম!
আমি কিছু বললাম না!
দেখতে দেখতে চোখের পলকে সারাটা দিন চলে গেল!বুঝতে পারছি না হুমায়রার মনে কি চলতেছে!
আস্তে আস্তে রুমে এসে দেখি হুমায়রা মিটমিট করে তাকিয়ে উঠে বসতে চাচ্ছে!! আমি গিয়ে ওকে ধরে উঠালাম!
হুমায়রা জ্বরের ঘোরে বিড়বিড় করে বলছে- “আমার শাড়িটা কে বদলে দিল”?!
আমি: আসলে আপনার অনেক জ্বর উঠেছিল, তাই আমি কিছু বুঝতে পারছিলাম না যে কি করব, শেষমেষ আপনার মাথায় পানি ঢালার সিদ্ধান্ত নেই, তখন পানি ঢালতে গিয়ে আপনার কাপড় ভিজে যায় তাই আমি বাধ্য হয়ে আপনার কাপড় চেঞ্জ করেছি, কিন্তু বিশ্বাস করেন আমার কোন খারাপ উদ্দেশ্য ছিল না!
হুমায়রা আমার উত্তর শুনে আর কোন কথা বলল না!
সন্ধ্যায় হুমায়রার জ্বরটা একটু কমলো!
*********
রাতের খাবার খাওয়ার পর, আমি হুমাইরার পাশে বসার সঙ্গে সঙ্গে নাসিরের ফোন আসলো, নাসির বলল আমাদের ফাইনাল রেজাল্ট দিয়েছে আমি CGPA 9.5 পেয়েছি. খুশিতে আমি হুমাইরা কে জড়িয়ে না ধরে পারলাম না. হঠাৎ অনুমতি ছাড়াই এভাবে জড়িয়ে ধরায় অনেকটা সংকোচ বোধ করলাম, আমি হুমায়রা কে ছেড়ে দিতে যাব এরই মাঝে হুমায়রাও আমাকে জড়িয়ে ধরেছে! আমাদের মধ্যে এক অন্যরকম অনুভূতির জানান দিল!
*****
দেখতে দেখতে হুমায়রা কে নিয়ে আসার আজকে সপ্তম দিন! সকালে আমি ইউনিভার্সিটিতে আসলাম, মনটা কেমন যেন আনছান আনছান করছে, আমার মনে একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে বারবার হুমায়রা কি থাকবে না চলে যাবে !! বাসায় ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে গেলো, কলিংবেল দিচ্ছি কিন্তু দরজা খুলল না! দরজা ধাক্কা দিতে খুলে গেল! কোন সাড়াশব্দ নেই!! লাইট জ্বালিয়ে দিলাম! হুমায়রা কে অনেক ডাকলাম কিন্তু কোন উত্তর নেই ,তাহলে কি হুমায়রা চলে গেল! আমি আর ভাবতে পারছি না, আমার চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে,, পকেট থেকে মোবাইল বের করে হুমায়রা কে ফোন দিলাম কিন্তু সুইচ অফ। আমি কি করবো বুঝতে পারছি না, আমার চিৎকার করতে ইচ্ছে করছে, কিন্তু ছেলেদের তো কান্না করতে নেই, কিন্তু আমার মনকে কিছুতেই বুঝাতে পারতেছিনা!! আমি যখন হুমায়রাকে সত্যি সত্যি ভালবাসতে শুরু করলাম তখন হুমায়রা আমাকে একা রেখে চলে গেল! আমি ফ্লোরে বসে কান্না করতে লাগলাম!! হঠাৎ কেউ আমার কাঁধে হাত রাখল, চেয়ে দেখি হুমায়রা !আমি সঙ্গে সঙ্গে হুমায়রা কে জড়িয়ে ধরলাম!!
আমি: আমি ভেবেছিলাম আপনি চলে গেছেন, কোথায় গিয়েছিলেন?
হুমায়রা: ছাদে ছিলাম? কেন?
আমি: অনেক অনেক ভয় পেয়েছিলাম. I cannot live without you. আমি আপনাকে কখনো হারাতে চাইনা! আমি আপনাকে অনেক ভালোবাসি দয়া করে আমাকে একা রেখে যাবেন না!!
কান্না করতে করতে বললাম, হুমায়রা আমার কানের কাছে এসে বলল আমিও ভালোবাসি, বলেই জড়িয়ে ধরল আমাকে আমি আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম, যেন ছেড়ে দিলেই হারিয়ে! যাবে সত্যিই আমি হুমাইরা কে হারাতে চাই না!
সমাপ্ত
Leave a Reply