তুমি আমার প্রিয়তমা পর্ব:-১৫(শেষ পর্ব)

তুমি আমার প্রিয়তমা”

পর্ব:-১৫(শেষ পর্ব)

Writer:-Hassab bin Ahmed.

…….দিন শেষে অন্যদের মতন আমিও একটি করে ফুল এনে দিতে পারবো। 

(দেখতে দেখতে ৩ টি মাস পার হয়ে গেলো , বড়ো বাসা নিয়েছি , নতুন গাড়ি , টাকার অভাব আর নেই , দিন পার হয়ে যাচ্ছিলো সুবহার সঙ্গে খুনসুটি করতে করতে , ভালোই চলছিলো , কিন্তু তার পরও কোথায় যেন খালি খালি লাগে , সব থেকেও যেন আমরা অসম্পূর্ণ , জি আমাদের একটা পূর্ণ পরিবার নেই ,অনেক চেষ্টা করেছি  তাদের রাগ ভাঙানোর জন্য কিন্তু কোন লাভ হয় নি , সুবহা তো কান্না করে তার দুঃখ প্রকাশ করে , কিন্তু আমি কি করবো , পুরুষ দের তো কান্না করতে নেই । সুবহা মা হতে চলেছে শুনে আম্মু আর তানিশা এক বার এসেছিলো , কিন্তু আমার সঙ্গে কোনো কথা বলেনি , 

তাহলে কি আমি অপরিপূর্ণ থেকে যাবো ?)

সুবহা আর আমি বারান্দায় বসে কফি খাচ্ছি আর ভাবছি,

সুবহা:- কি ভাবছেন এতো,? কফি তো ঠান্ড হয়ে  যাবে খেয়ে নিন !!

আমি:- না কিছু না !!!!

এর ভিতর আমার ফোন বেজে উঠলো ,আমার ফোনটা সুবহার কাছে  ছিলো  ফোনটা এগিয়ে দিয়ে বললো

সুবহা:- এই নিন আমার শত্রু ফোন দিয়েছে ?

আমি:- শত্রু মনে,এইটা তো নাছির ফোন দিয়েছে ?

সুবহা:- হুম , এই দেখুন আপনার সঙ্গে বসে একটু কফি খাচ্ছি আর আপনার প্রান প্রিয় বন্ধু ফোন দিলো!!!

আমি ফোনটা হাতে নিয়ে 

আমি:- আসসালামুয়ালাইকুম , বল!!

নাছির:- ওয়ালাইকুম আসসালাম , তোরা দুজনে এখুনি থানায় চলে আয় !!!

আমি:- কেন? কোন থানায় !!

নাছির :- কাজ আছে খুব তাড়াতাড়ি আয় , ঐ যে , যেখানে আমরা অভিযোগ করেছিলাম ! এখুনি আয় দেরি করিস না প্লিজ !!

বলেই ফোন কেটে দিল ।

আমি:- আসলে সুবহা হয়েছে কি….

সুবহা:- থাক বলতে হবে না , ফুল ভলিউম ছিল শুনতে পেয়েছি , যেতে হবে তো ,, আমি কি এমনি এমনি শত্রু বলি!!!😠😠😠

আমি:- কোন ইমার্জেন্সি হবে হয়তো!!!

সুবহা:- ঠিক আছে আপনি গাড়িতে বসেন আমি বোরখা পড়ে আসছি !!!!

আমি আর সুবহা থানায় পৌঁছে দেখি , সবাই উপস্থিত ! আব্বু, আম্মু, তানিশা, সুবহার আব্বু, আম্মু , নাছির , আমি কারো সঙ্গে কোনো কথা না বলে নাছিরের পাশে আসলাম , সুবহাও আমার পিছন পিছন আসলো!!

আমি:- কি হয়েছে?

নাছির:- ঐ মেয়েটিকে আজকে পুলিশ ধরেছে! যে মেয়েটি তোর মানসম্ম শেষ করে দিয়েছে !

আমার তো রাগে মাথায় রক্ত উঠে গেছে , আমি ভিতরে গেলাম , মেয়েটি বসে আছে একটি কাঠের চেয়ারে , আমিও একটি চেয়ার টেনে এনে মেয়েটির সামনে বসলাম !আমি সুবহার দিকে তাকালাম , চোখ দুটো লাল হয়ে গেছে ,  চখ দুটো দেখে বুঝা যাচ্ছে , মেয়েটাকে এখনি ধরে মারবে !!! মেয়েটিও ভয় পেয়েছে অনেক ,  ধর ধর করে কাঁপছে ! 

আমি:- আমি আপনাকে কয়েকটি প্রশ্ন করবো , ঠিক ঠিক উত্তর দিবেন 

আমি:- আমি আপনাকে চিনি?

মেয়েটি:- না!

আমি:- আমি কখনো আপনার সঙ্গে দেখা করেছি?

মেয়েটি:- না?

আমি:- ঐ ফটো গুলো কোথায় পেলেন?

মেয়েটি:- আপনি যে টেবিলে বসে চা খাচ্ছিলেন আমিও ঐ টেবিলে চা খাওয়ার নাটক করে ছবি গুলো তুলেছিলাম , আর খারাপ ফটো টা এডিট করে বানিয়েছিলাম ?

(সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে , দেখলাম আব্বু আম্মু তো কাঁদছে)

আমি:- কেন করলেন…….

মেয়েটি:- রফিক সাহেব করতে বলেছিল, আমার কিছু করার ছিল না , আমি ওনার বাসায় কাজ করতাম , রফিক সাহেবের সঙ্গে আমার প্রেমের সম্পর্ক ছিল , রফিক সাহেব বলেছিলেন যদি আমি আপনার ঐ ভিডিওটি না করি তাহলে আমাকে বিয়ে করবে না ” তাই করেছিলাম ! আমাকে মাফ করে দিবেন?

আমি:- সবিই বুঝলাম , কিন্তু এই রফিক কে???

হঠাৎ পিছন থেকে

সুবহার আব্বু:- আমি বলছি রফিক কে ?

রফিক আমার বন্ধুর ছেলে তোমাদের বিয়ের এক বছর আগে সুবহাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলো কিন্তু আমি মানা করে দিয়েছিলাম , রফিক আমাকে হুমকি দিয়েছিল , “দেখে নিবে”  আমি কখনো কল্পনাও করি নাই 

যে এই ভাবে আমার মেয়ের সংসার ধংস করার চেষ্টা করবে😢,  তুমি আমাকে ক্ষমা করে দিও ,,

আমি কিছু বললাম না , আমি শুধু ভাবছি আমার কি দোষ ছিল জার জন্য আমি আজ নিঃস্ব হয়ে গেছি ।

সুবহার আব্বু:- রফিক এখন কোথায় ?

( মেয়েটি কে উদ্দেশ্য করে বললো )

মেয়েটি:- সাহেব মাস খানেক আগেই গাড়ি এক্সিডেন্টে মারা গেছে???

আমি:- নাছির ?

নাছির:- বল !!!

আমি:- অভিযোগ উঠিয়ে নে আর মেয়েটিকে চলে যেতে দে !!!

নাছির:- কিন্তু …

আমি:- যা বলছি তাই কর , ( রাগি কন্ঠে)

নাছির:- আচ্ছা ঠিক আছে!!

আমি:- সুবহা চলো !!

সুবহা ওর বাবাকে জরিয়ে ধরে কাঁদছে

আমি:- সুবহা শুনতে পাচ্ছো না ,চলো এখান থেকে 

সুবহা:- প্লিজ অল্প….

আমি:- চুপ , আমি একটা কথাও শুনতে চাই না , আমি চলে যাচ্ছি তোমর যদি থাকতে ইচ্ছে হয় থাকো …

আব্বু, আম্মু, তানিশা , সুবহা আব্বু সবাই ডাকছে , আমি কারো কথায় কান দিলাম না চলে আসলাম, সুবহা আমার পিছন পিছন চলে আসলো , 

সোজা বাসায় চলে আসলাম দুজনে।

সারা রাত কান্না করেছি , আমি বুঝতে পারছি না আমি কি করবো । 

পরদিন সকালে দেখি সবাই বাসায় ( আব্বু, আম্মু, তানিশা, সুবহার আব্বু,সুবহার আম্মু) চলে এসেছে । 

আমাকে দেখে আব্বু আমার সামনে আসলো 

আব্বু:- তুই তো আমারই সন্তান , তাই তোর রাগ টাও আমার মতোই হবে , তো ভুল যিহেতু করেছি ক্ষমা তো চাইতেই হবে! আমি বাবা হয়ে তোর কাছে ক্ষমা চাই আমাকে মাফ করে দে!!! 

যে মানুষ টাকে কখনো কাঁদতে দেখি নাই , আজ সেই মানুষটি আমার সামনে দাঁড়িয়ে কাঁদছে ! আমিও আব্বু কে জরিয়ে ধরলাম !!!!! তারপর …….

তারপর আর কি আবার সবাই  আগের মতো একসঙ্গে থাকা আরম্ভ করলাম 

। পড়ে জানতে পারলাম আম্মু আব্বু কে সুবহা নিয়ে এসেছিলো ঐ দিন সকালে ! এই জন্যই তো সুবহা আমার প্রিয়তমা। 

          ********** সমাপ্ত**********


Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *