“তুমি আমার প্রিয়তমা”
পর্ব:-০৩
Writer:-Hassab bin Ahmed.
অনেক আশা নিয়ে কল করলাম কিন্তু রিসিভ করছে না ☹️, তিনবার কল করার করার রিসিভ হলো.
ফোনের ঐ পাশে:- আসলামুল আলাইকুম , কে বলছেন? আম্মু ব্যাস্ত আছে.
মনে হয় এটা আরিফের গলা, এখন একে কি বলি…..
আমি:- জি আমি সাজিদ , চিনতে পেরেছো ?
ঐপাশে:- জি ভাইয়া , আমি আরিফ, আপনি ভালো আছেন?
আমি:- জি আমি ভালো আছি , তুমি ভালো আছো?
আরিফ:- জি ভাইয়া আমি ও ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ, আসলে আজকে আমাদের বাসায় ছোট খালা এসেছেন আম্মু খালার সঙ্গে কথা বলছেন, আম্মুর কাছে কি মোবাইল নিয়ে যাবো?
আমি:- না ,না . দরকার নেই , তুমি কি করো?
আরিফ:- কিছু না এমনি বসে আছি,
আমি:- তোমার আপু কি করে?
আরিফ:- (ছোট্ট একটি হাঁসি দিয়ে) ও এই জন্যই কল করেছেন বলেই হতো , এক মিনিট অপেক্ষা করেন আমি মোবাইল আপু কে দিচ্ছি?
আর আমাকে কিছু বলতেই দিলো না ☹️,
মোবাইল কানের কাছে ধরেই আছি কোন সব্দ নেই , হঠাৎ ( ফোনের ঐ পাশে:- আসালামু য়ালাইকুম) এই আয়াজ শুনে আমার মনে প্রশান্তির বাতাস বয়ে গেলো , সময় যেনো থেমে গেল, এই সুন্দর কন্ঠ শুনার জন্যই তো এতো সময় ছটফট করছিলাম,
সুবহা:- হ্যেলো, আপনি কি আমার কথা শুনতে পাচ্ছেন না?
আমি:- ( হালকা কাসি দিয়ে) জি শুনতে পেরেছি, আপনি ভালো আছেন?
সুবহা:- আলহামদুলিল্লাহ আমি ভালো আছি? আপনি ভালো আছেন?
আমি:- জি আমিও ভালো আছি?
কিছু সময় নিরবতা…
সুবহা:- বলুন কি জন্য কল করেছেন?
আমি:- কেন, আমি কোন কারণ ছাড়া আপনাকে কল করতে পারি না?
সুবহা:- কেন পারবেন না, আবশ্যই পারবেন, আমি ভাবলাম হয়তো কোন কিছু বলার জন্য কল করেছেন,
আমি:- না, শুনার জন্য কল করেছি,
সুবহা:- মানে , কি?
আমি:- আপনি বুঝবেন না ☹️,
সুবহা:- বুঝবো না কেন? আপনি বুঝিয়ে বলুন দেখি বুঝি কি না?
আমি:- না বলা যাবে না?
সুবহা:- কেন? আমি কি শুনতে পারি না??
আমি:- অবশ্যই পারেন!!!
সুবহা:- তাহলে বলেছেন না কেন?
আমি:- ও আল্লাহ…….., আচ্ছা ঠিক আছে বলছি।
সুবহা:- হুম 🤗
আমি:- আমি আমার প্রিয়তমার অসাধারণ কন্ঠ শুনার জন্য কল করেছি,
সুবহা:- যান আপনি বেশি বেশি বলেন😌
আমি:- এই দেখুন এতো সময় শুনার জন্য জেদ ধরে ছিলেন এখন বললাম তাও আমি বেশি বেশি,
সুবহা:- হুম, এই শুনেন আপনার সঙ্গে পরে কথা বলি, আজকে যাই,
আমি:- মানে কি? এখনো ৫ মিনিট ও হয় নি , এরকম করেছেন কেন? আর একটু কথা বলি.
সুবহা:- দেখুন আপনি আমার জন্য এখনো নন মাহরাম , তাই আপনার সঙ্গে বেশি কথা বলা যাবে না ☹️, আর আজকে একটু কাজ আছে,
আমি:- ঠিক আছে যান, এখানে আমার আর কি বা বলার আছে , শুধু এতটুকু বলি তোমার অপেক্ষায় থাকবো।
সুবহা:- আমিও , আচ্ছা ভালো থাকবেন এখন যাই আসালামুয়ালাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
এই বলেই কল কেটে দিলো , আর কিছু বলার সুযোগ দিলো না, দুই ভাই বোন এক রকমের , সব সময় তারা হুরা, শুয়ে শুয়ে সুবহার কথা ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে গেছি বলতে পারবো না,
সকালে ঘুম থেকে উঠে কলেজ চলে গেলাম ,
কলেজ পৌঁছে “বিপুল দা” ( বিপুল এই কলেজ দেখা শুনা করে সবাই তাকে “বিপুল দা” বলেই ডাকে) কে ডাকলাম
বিপুল দা:- স্যার আমাকে ডেকেছেন ?
আমি:- জি , আপনি এক কাজ করুন , দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী নিশি কে আমার রুমে আসতে বলুন,
কিছু সময় পর ….
নিশি:- স্যার আমি আসবো ?
আমি:- হুম আসো ।
নিশি:- স্যার আমাকে দেকেছিলেন ?
আমি:- জি, তোমার কোন বড়ো ভাই আছে ?
নিশি:- না স্যার, কিন্তু বড়ো বোন আছে?
আমি:- ওওওও, আচ্ছা ঠিক আছে কাল তোমার আপুকে কলেজ নিয়ে আসবে কিছু কথা আছে?
নিশি:- কি বিষয়ে স্যার ?
আমি:- তেমন কিছু না কিছু কথা আছে , তোমাকে যা বলেছি তাই করো ?
নিশি:- আচ্ছা ঠিক আছে স্যার,
আমি:- হুম এখন যাও,
কলেজ থেকে অফিসে গেলাম বাসায় ফিরতে ফিরতে রাত হয়ে গেল , রাতের খাবার খেয়ে রুমে গিয়ে শুয়ে শুয়ে ভাবছি সুবহা কে কল করাব কি, ! না থাক আবার যদি রাগ করে তাই কল করলাম না, ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে গেছি,
পর দিন সকালে কলেজে গিয়ে রুমে ঢুকার সঙ্গে সঙ্গে নিশি আসলো , সঙ্গে একজন বোরখা পড়া মহিলা মনে হয় এটা নিশির বড়ো বোন
নিশি:- স্যার আসবো?
আমি:- জি’ আসো.
নিশি আর ঐ মহিলা ভিতরে এলো
নিশি:- স্যার আমার বড়ো আপু,
আমি:- ও , ঠিক আছে তুমি বাইরে গিয়ে অপেক্ষায় করো ।
নিশি:- স্যার আসলে ….
নিশি কথা শেষ করতে পারলো না নিশির বোন ইশারা করে নিশিকে বাইরে যেতে বললো , নিশি বাইরে চলে গেলো,
আমার মনে হচ্ছে নিশির বড়ো বোন আমার অনেক দিনের পরিচিতো ,।
নিশির আপু:- আসালামুয়ালাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
এতো পরিচিত কন্ঠ , এতো সুবহার কন্ঠ,
আমি:- ওয়ালাইকুম আসসালাম, বসেন ।
নিশির আপু:- জাজাকাল্লাহ।
আমি:- আমি কি আপনাকে চিনি , মানে আমার মনে হচ্ছে আপনি আমার পরিচিত ,
নিশির আপু:- মনে?
আমি:- আপনি কি “সুবহা”
নিশির আপু:- কে সুবহা কি বলতেছেন আপনি , আপনি কি আমাকে এখানে অপমান করার জন্য ডেকেছেন?
ওরে বাপরে বাপ এটা কি ধরনের মেয়ে.
আমি:- আচ্ছা সরি , আপনি রাগ করিবেন না প্লিজ , আসলে ভুলটা আমারি ছিলো।
নিশির আপু:- জি বলুন কি জন্য আসতে বলেছিলেন।
আমি:- জি , আসলে আপনাকে বিষয়টা কি ভাবে বলবো বুঝতে পারতেছি না , আপনি পর্দা করে আছেন খুব ভালো , আমি আসলে ধর্মের বেপার কিছু জানিনা , ভুল হলে ক্ষমা করবেন।
নিশির আপু:- জি বলুন
আমি:- আসলে আমার জানা মতে বিয়ের আগে প্রেম করা হারাম, হয়তো আমার ভুল হতে পারে , তো কিছু দিন ধরে আমি দেখছি আপনার বোন নিশি একটা ছেলের সঙ্গে সময় কাটায় পরে জানতে পারি দুজনে প্রেম করে , এখন কে প্রেম করে আর কে প্রেম করে না তা নিয়ে আমার কিছু বলার নেই ,। কিন্তু নিশির পরিক্ষার ফলাফল দেখে তো আমি অবাক হয়ে গেছি , আপনি নিজেই দেখে নিন , নিশি অনেক ভালো ছাত্রী , নিশি সাধারণত ১০০ রং ভিতর ৯০-৯৫ করে করে নাম্বার পেয়ে থাকে, কিন্তু এখন নিশি ১০০ রং ভিতর ৫০-৬০ নাম্বার পেয়েছে। এই বিষয়ে আমারা হেড ছারের সঙ্গে আলোচনা করেছি , সব ছারেই এই মতামত দিয়েছেন যে নিশি প্রেম করার জন্য এই অধঃপতন হয়েছে। আপনি কি বুঝতে পারছেন আমার কথা।
নিশির আপু:- জি বুঝতে পারতেছি আপনি বলুন।
আমি:- আসলে অধ্যক্ষ স্যার আপনার আব্বু আম্মু কে বিষয় টা জানাতে চেয়েছিলো।
কিন্তু , আমি ভাবলাম এতে হয়তো ভালোর চাইতে খারাপ বেশি হতে পারে , আপনার বাবা মা মন খারাপ করতেন । হয়তো আর নিশির পড়াই হতো না। তাই আমি চায়েছিলাম যে নিশির বড়ো ভাইকে কথা গুলো বলি কিন্তু নিশি বললো যে নিশির কোন বড়ো ভাই নেই, তাই আপনাকে এখানে আসতে বলা , আশা করছি বুঝতে পারছেন।
নিশির আপু:- হুম, আমি সত্যি লজ্জিত নিশির কাজে , আসলে নিশি এখন নিজের ভালো বুঝতে পারছে না আমি চেষ্টা করবো নিশিকে বুঝানোর ।
আমি:- হুম ঠিক আছে , এখন যেতে পারেন , আর একটা কথা বলি রাগ করিয়েন না , আপনার কন্ঠ আর আমার প্রিয় মানুষটির কন্ঠ অনেক মিল।
নিশির আপু:- ওওওও, শুধু কি কন্ঠ ই মিল । আর কিছু তে মিল খুঁজে পাচ্ছেন না ☹️।
আমি:- মানে?
নিশির আপু আমার দিকে একটি কাগজের টুকরো এগিয়ে দিয়ে …..
নিশির আপু:- এই নিন আমার নম্বর। আর আপনি যে নম্বরে কল করেন ঐটা আম্মুর নম্বর।
আমি:- কি বলছেন আপনি?
নিশির আপু মুখ থেকে নিকাব টা সরিয়ে নিলো ।
আমি তো অবাক হয়ে গেছি সেই মায়া ভরা মুখটা দেখে। এটা আমার প্রিয়তমার মুখ যে মুখের দিকে তাকিয়ে পুরো পৃথিবীকে ভুলে থাকা যায়।
সুবহা:- কি হলো কথায় হারালেন।
আমি:- না না এখানেই আছি ।
সুবহা :- আচ্ছা । থাকেন তাহলে আমি যাই।
বলেই চলে গেলো
আমি:- এই দারান । কোথায় যাচ্ছেন ।
কিন্তু আমার কোন কথাই শুনলো না চলে গেলো ।
যাক তাও নম্বর তো পেলাম । এটাই অনেক।
………..
চলবে………
Leave a Reply