গল্প:- বিয়ের আগে প্রেম
লেখক:- হাছাব বিন আহমেদ
মোবাইল টা হাতে নিয়ে ভাবছিলাম কি করবো? আমার মাঝে মাঝে এরকম হয়, মোবাইল হাতে নিয়ে বসে থাকি কি করবো খুঁজে পাইনা। ভাবলাম ফেসবুক থেকে একটু ঘুরে আসি, ফেসবুকে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে অচেনা এক নম্বর থেকে ফোন আসলো; আমি রিসিভ করে কিছু বলার আগেই ওপাস থেকে বললো `হ্যলো আপনার সঙ্গে আমার জরুরি কথা আছে, আমরা কি দেখা করতে পারি?
আমি: আপনি কে?
ঐ পাশে থেকে: ও সরি, আমি হুমায়রা।
আমি: ও আচ্ছা ঠিক আছে, কোথায় দেখা করতে চান?
হুমায়রা: আজ বিকেলে ৩ টার সময় City centre coffee house এ, আর একা আসবেন।
আমি: ঠিক সময়ে পৌঁছে যাবো ইনশাল্লাহ।
ফোন রেখে দিয়ে আমি তো অবাক। এই মেয়ে হঠাৎ আমার সঙ্গে দেখা করতে চাইছে কেন? তাও আবার একা আসতে বললো?
আপনারা হয়তো ভাবছেন হুমায়রা কে? এই প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে পাঁচ দিন আগে ফিরে যেতে হবে।
পাঁচ দিন আগে-
আচ্ছা আপনাদের শুরু থেকেই বলি, আমার নাম সজিব, University of Science & Technology, Meghalaya এর ছাত্র। ইউনিভার্সিটি থেকে রুমে আসার সঙ্গে সঙ্গে আম্মুর ফোন
আমি: আস-সালামু আলাইকুম আম্মু, ভালো আছো?
আম্মু: জি আমি ভালো আছি।পড়া শুনা কিরকম চলছে?
আমি: আলহামদুলিল্লাহ ভালো
আম্মু: এক কাজ কর কাল সকালে বাসায় চলে আয়।
আমি: হঠাৎ বাসায় কেন?
আম্মু: কাজ আছে তোকে আসতে বলেছি তুই আয়।
আমি: আচ্ছা ঠিক আছে আম্মু।
পরদিন বাসায় এসে জানতে পারলাম, বাসা থেকে আমার বিয়ের জন্য মেয়ে দেখতে যাবে। আমি তো শুনে লজ্জায় লাল হয়ে গেছি। সবাই আমাকে নিয়ে মজা করছে। আমি প্রথমে দুই রাকাত নামায আদায় করলাম। কারণ আল্লাহ আমার দোয়া কবুল করেছেন। আসলে আমি অনেক দিন আগেই বিয়ের জন্য কথা বলেছি বাসায়। কিন্তু আমি ভাবতে পারি নাই এতো তাড়াতাড়ি সব হবে?
পরদিন মেয়ে দেখতে আসলাম, আলহামদুলিল্লাহ আমার পছন্দ হয়েছে। মেয়ের নাম হুমায়রা। আমাদের বিয়ের তারিখ ঠিক করার আগে আমি হুমায়রার সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলাম কিন্তু হুমায়রা রাজি হয়নি। তাই বিয়ের তারিখ ঠিক করা হলো। এই ছিল ঘটনা।
যাই হোক বিকেলে হুমায়রার সঙ্গে দেখা করতে গেলাম,মুখো মুখি চেয়ারে চুপচাপ বসে আছি দুজনে। এমন মনে হচ্ছে আমি পাত্রী , নিজেই নিজেকে বললাম এতো লজ্জা পাওয়ার কি আছে, লজ্জা তো মেয়েরা পায়। কিন্তু কেন যেন লজ্জায় আমি কাচুমাচু হয়ে আছি।
টেবিলের উপর রাখা মেনু কার্ট টা আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে হুমায়রা বল্লো’ অর্ডার করুন।
আমি: আপনি করেন।
হুমায়রাই অর্ডার দিলো, আমার অবস্থা দেখে হুমায়রা জিগ্গেস করলো ” আপনি কি লজ্জা পাচ্ছেন?
ভদ্রতা সূচক হাঁসি দিয়ে উত্তর দিলাম
আমি: কিছুটা, আসলে এভাবে আগে কখনো কোন সুন্দরী মেয়ের সঙ্গে এভাবে দেখা কিরি নাই তো তাই আরকি…..
এর ভিতর ওয়েটার খাবার নিয়ে চলে এলো।
আমি: আপনি মনে হয় কিছু বলতে চেয়েছিলেন?
হুমায়রা মাথা নিচু করে চোখ বন্ধ করে উত্তর দিল
হুমায়রা: আসলে কি ভাবে যে বলি, সত্যি বলতে আমি ভার্জিন না।
হবু স্ত্রীর মুখ থেকে এই কথা শুনার পর আমার কি বলা উচিৎ তা আমার জানা নেই। আমি কখনো কল্পনাও করিনি এই ধরনের কথা শুনবো।
আমি: মানে, আপনি জানেন আপনি কি বলছেন! আমি এর জন্য আমাদের বিয়ে ভেঙে দিতে পারি!
হুমায়রা চোখের জল মুছে মাথা নামিয়ে বল্লো জি জানি।
আমি: আচ্ছা ঠিক আছে আপনি কাঁদবে না। আপনি চাইলে খুলে বলতে পারেন।
হুমায়রা: আমি তখন ক্লাস নাইনের ছাত্রী। রাকিব নামের একটি ছেলেকে আমি ভালোবাসতাম। ধিরে ধিরে আমরা আন্তরিক হতে থাকি।সব ঠিক ছিলো কিন্তু কিছু দিন পর থেকেই রাকিব আমার সঙ্গে রাগ দেখিয়ে কথা বলে, আমার থেকে দূরে দূরে থাকে। আমি রাকিবের এই দূরে যাওয়া মেনে নিতে পারতাম না। তাই আমি ওর সঙ্গে দেখা করে সরাসরি কথা বলি।
রাকিব তুমি আমার থেকে দূরে দূরে থাকো কেন?(আমি)
কারন তুমি আমায় ভালবাসো না (রাকিব)
কে বলেছে আমি ভালোবাসি না অবশ্যই ভালোবাসি(আমি)
সত্যি বলছো(রাকিব)
আমি তোমাকে আমার থেকেও বেশি ভালোবাসি (আমি)
আমি তোমার জন্য সব করতে পারি, তুমি আমার জন্য কি করতে পারো?(রাকিব)
তুমি শুধু বলো কি করতে হবে আমি অবশ্যই করবো(আমি)
আচ্ছা ঠিক আছে, কালকে আমার রুমে কেউ থাকবে না আমার রুমে আসতে হবে পারবে?(রাকিব)
ছি: ছি: রাকিব ছি: এই ছিলো তোমার মনে আমি ভাবতেই পারিনি তুমি এতো খারাপ (আমি)
দেখো এই সব বলে লাভ নাই আমি জানতাম তুমি পারবে না, কারন তুমি আমায় ভালোই বাসো না। এখন থেকে তুমি তোমার রাস্তায় আমি আমার রাস্তায় (রাকিব)
আসলে আমি কখনো রাকিব কে হারাতে চাইতাম না, তাই আমি ওর হাত পিছন থেকে টেনে ধরে বলেছিলাম আমি তোমার রুমে যাবো। আর আমি আমার ভালোবাসার পরিক্ষা দিতে গিয়েছিলাম। তো যা হোবার তাই হলো।
হুমায়রা কাঁদতে কাঁদতে কথা গুলো বল্লো।
আমি: আপনি কাঁদবেন না। তারপর?
হুমায়রা: তারপর, রাকিব আমার সঙ্গে ব্রেকাআপ করে। আমাদের ক্লাছের অন্যা এক মেয়ের সঙ্গে প্রেম করতে শুরু করে, এইসব আমি সহ্য করতে পারতাম না তাই ইস্কুল পরিবর্তন করি। আমি জানি এখন আপনি এই বিয়েটা ভেঙে দিতে পারেন কিন্তু আমার মনে হয়েছে আপনাকে কথা গুলো বলা প্রয়োজন। আমি মিথ্যে দিয়ে সংসার শুরু করতে পারবো না। এর জন্য আপনি বিয়ে ভেঙে দিলেও আমি কষ্ট পাবো না।
আমি চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে বল্লাম ” আপনি যদি কিছু মনে না আপনাকে একটি প্রশ্ন করতে পারি??
হুমায়রা: জি বলুন।
আমি: ধরেন আপনার স্বামী যদি আপনাকে আপনার ছোছিয়াল মিডিয়ার সব ফটো ডিলেট করতে বলে, তখন আপনি কি করবেন??
হুমায়রা: প্রথমত আমি কোন ছোছিয়াল মিডিয়ায় আমার কোন ছবি আপলোড করি না। আমি যদি আমার কোন ফটো কোন যায়গায় থাকে আর আমার স্বামী তা ডিলেট করতে বলে তাহলে আমি অবশ্যই ডিলেট করবো। কারন আমার স্বামী আমার ভালোর জন্যই বলবে।
আমি: আলহামদুলিল্লাহ শুনে খুশি হলাম। আমি মনে করি পৃথিবীতে যতো মানুষ আছে সবাই পবিত্র এবং সুন্দর। কারন আল্লাহর সৃষ্টিতে কোন কমতি থাকতে পারে না। শুধু মাঝে মাঝে শয়তানের ধোঁকায় পড়ে আমরা খারাপ কাজের দিকে চলে যাই।
হুমায়রা: আচ্ছা এই একি প্রশ্ন যদি আমি আপনাকে করি যে`আপনার স্ত্রী যদি আপনার সব ফটো ডিলেট করতে বলে তাহলে আপনি কি করবেন??
আমি: আমি এক ছেকেন্ড সময় ও চিন্তা করবো না, সঙ্গে সঙ্গে সব ফটো ডিলেট করে দিব ইনশাল্লাহ।
হুমায়রা: এই প্রথম শুনলাম যে স্ত্রীর কথা শুনে স্বামী তার ফটো ডিলেট করবে। সাধারণত এই রকম আদেশ কোন স্বামী মেনে নিতে চায় না। তবে আপনি কেন মেনে নিবেন?
আমি: এর দুটো কারণ আছ, প্রথমত “নবী (সাঃ) বলেছেন তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি ভালো যে তার স্ত্রীর সঙ্গে ভালো”। তো আমি যদি আমার স্ত্রীর কথা না শুনি তাহলে তার কাছে ভালো হবো কিভাবে??
আর দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে ” সাফিয়্যা(রা:) ছিলেন নবীজীর অন্যতম স্ত্রী। তিনি কিছুটা খাটো ছিলেন,ফলে উঁটের পিঠে আরহন করতে কষ্ট হতো, তাই রাসূল (সাঃ) তাকে সাহায্য করার জন্য নিজের হাঁটু পেতে দিতেন, সাফি্য্যা (রা:) সেই হাঁটুতে পা রেখে উঁটের হাওদায় ওঠে বসতেন ( সহীহ বুখারী: ৪২১১)
চিন্তা করেন পৃথিবীর সবচেয়ে দামী মানুষ হজরত মুহাম্মদ (স:) নিজের হাঁটু পেতে দিতেন স্ত্রীর পা রাখার জন্য। এর থেকে বুঝা যায় স্ত্রী কোতো উচ্চ মর্যাদার অধিকারী। তো এতো সন্মানীয় ব্যক্তি আমাকে কোন আদেশ করলে তা অবশ্যই শুনা উচিৎ।
হুমায়রা: ভাবী আপনার সততা ও ধর্মীভিরুতা অনেক বলেছেন আজ তা নিজ চোঁখে দেখলাম। আপনি সত্যিই অনেক ভালো।
আমি: আপনি আমাকে যেরকম ভালো ভাবছেন আমি ওতটাও ভালো না, আপনার চোখে হয়তো আমার খারাপ গুন পড়ে নাই, তাই এইরকম বলছেন। অবশ্য আমি সবসময় চেষ্টা করি হারাম থেকে দূরে থাকতে।
হুমায়রা: আমি আপনাকে আরো একটি প্রশ্ন করতে পারি?
আমি: অবশ্যই??
হুমায়রা: আপনি কখনো প্রেম করেন নাই??
আমি: আমি আপনাকে বললাম না যে আমি হারাম থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করি।
হুমায়রা: মানে কি বুঝতে পারলাম না? প্রেম করা হারাম??
আমি: নিজের স্ত্রী ছাড়া অন্য কারো সঙ্গে প্রেম করা হারাম।
হুমায়রা: এই কথা আগে তো কখনো শুনিনি। আপনি কোরআন ও হাদিস থেকে বলতে পারেন??
আমি: অবশ্যই। এখন আপনাকে অল্প কয়টা পয়েন্ট বলি। পড়ে ইনশাআল্লাহ ভালো করে আলোচনায় করবো।
বর্তমানে প্রেম বলতে যা প্রচলিত হয়ে গেছে, তা নিছক একটি অবৈধ সম্পর্ক। যে সম্পর্ক মানুষকে পাপের অতল সমুদ্রে ডুবিয়ে দেয়।বিয়ের আগে প্রেম হারাম এইটা এখন অনেক যুবক যুবতী মানতে চায় না।তাই আমরা কোরান ও সহীহ হাদীস থেকে কিছু প্রেমান দিলাম-
১.পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, তোমরা ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না। নিশ্চয় তা অশ্লীল কাজ ও মন্দ পথ। (সুরা : ইসরা, আয়াত : ৩২)
এই একটি আয়াতি যথেস্ট বিয়ের আগে প্রেম হারাম প্রমান করার জন্য.
লক্ষ করুন আল্লাহ তায়ালা এই আয়াতে বলেছেন তোমারা যিনার কাছেও যাবে না। আল্লাহ কিন্তু বলে নাই যে তোমারা যিনা করবে না তিনি বলেছেন তোমরা যিনার কাছেও যেয়ো না।আর বিয়ের আগে প্রেম করা স্পষ্টতই যিনার কাছে যাওয়া হয় । ncbi এর একটি রিপোর্ট অনুযায়ী ২০ বছরের মধ্যে ৭৭% ব্যক্তি শারীরিক সম্পর্ক করে এবং ৭৫% লোক বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্ক করে। এই রিপোর্ট থেকে আমরা বলতে পারি এই ৭৫% লোক বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্ক করে এর ভিতরে ৮০% লোকের প্রেমের সম্পর্ক থাকে। তাহলে আমরা নির্দ্বিধায় বলতে পারি বিয়ের আগে প্রেম করা যিনা হোক বা না হোক, বিয়ের আগে প্রেম করা মানে যিনার কাছে যাওয়া। তাহলে এই আয়াত (১৭:৩২) অনুযায়ী বিয়ের আগে প্রেম হারাম, কারণ যিনার কাছাকাছি যাওয়া হারাম ।
২. কিছু লোকে প্রশ্ন করে”” শারীরিক সম্পর্ক না করলে কি হারাম হবে??””
এই প্রশ্নের উত্তর খুবই সহজ!! অবশ্যই হারাম হবে, শারীরিক সম্পর্ক না করলেও। এর দুইটি প্রমান উল্লেখ করা হলো-
১.হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, চোখের ব্যভিচার হলো (বেগানা নারীকে) দেখা, জিবের ব্যভিচার হলো (তার সঙ্গে) কথা বলা (যৌন উদ্দীপ্ত কথা বলা)। (বুখারি, হাদিস : ৬২৪৩)
২.দুই চোখের ব্যভিচার হলো, (বেগানা নারীর দিকে) তাকানো, কানের ব্যভিচার যৌন উদ্দীপ্ত কথা শোনা, মুখের ব্যভিচার আবেগ উদ্দীপ্ত কথা বলা, হাতের ব্যভিচার (বেগানা নারীকে খারাপ উদ্দেশ্যে) স্পর্শ করা আর পায়ের জিনা ব্যভিচারের উদ্দেশ্যে অগ্রসর হওয়া এবং মনের ব্যভিচার হলো চাওয়া ও প্রত্যাশা করা। (মেশকাত, হাদিস : ৮৬)
৩. রাসুল (সাঃ) বলেছেন, “যেখানে দু’জন বেগানা নারী-পুরুষ নির্জনে
একত্রিত হয়, সেখানে তৃতীয়জন হয় শয়তান।”–(সহীহ্ তিরমিযী, ১১৭১)
এখানে নির্জনে নারী -পুরুষ কে একত্রিত হতে স্পষ্টত নিষেধ করা হয়েছে।
এখন ধরুন, আপনি বা আমি যদি কারো সাথে মোবাইলে কথা বলি, সেটাও নির্জনে একত্রিত হওয়া নয় কি? কারন, আমরা মোবাইলে কথা বলার সময় নির্জনেই কথা বলি। নির্জনে
SMS আদান-প্রদান করি। এবং তখন দুজনের মধ্যে কোনোরুপ বাঁধা থাকে না। (যাদের প্রেম করার এক্সপেরিয়েন্স আছে তারা বিষয়টি ভালো ভাবেই
বুঝবেন। কথাবার্তা কতটা অশালীন মূহুর্তে পৌছায়)। যার দ্বারা মুখের ও অন্তরের যিনা হয়। যা স্পষ্ট হারাম। তাহলে এই হাদীসে অনুযায়ী বিয়ের আগে প্রেম সম্পূর্ণ রূপে হারাম।
৪. যে কোনো কোনো ছেলে মেয়ের নিজে স্বামী বা স্ত্রী পছন্দ করার অনুমতি আছে। বিয়ের আগে কথা বলা ও জায়েজ আছে কিন্তু মেয়ের পক্ষ থেকে কেউ থাকতে হবে। আপনি এক বার না ২,৩,৪,৫,৬ বা তার থেকে বেশিও দেখা করতে পারেন কিন্তু ইসলামিক নিয়মে। একলা দেখা করতে পারেবেন না।
সূরা নূরের ৩১নং আয়াতে বলা হয়েছে:-
ঈমান আনয়নকারিনী নারীদেরকে বলঃ তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযাত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান তা ব্যতীত তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে। তাদের গ্রীবা ও বক্ষদেশ যেন মাথার কাপড় দ্বারা আবৃত করে। তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভাই, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নীপুত্র, আপন নারীগণ, তাদের মালিকানাধীন দাসী, পুরুষদের মধ্যে যৌন কামনা রহিত পুরুষ এবং নারীদের গোপন অঙ্গ সম্বন্ধে অজ্ঞ বালক ব্যতীত কারও নিকট তাদের আভরণ প্রকাশ না করে। তারা যেন তাদের গোপন আভরণ প্রকাশের উদ্দেশে সজোরে পদক্ষেপ না ফেলে। হে মু’মিনগণ! তোমরা সবাই আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।
আপনি যে মেয়েটিকে বিয়ে করবেন তার সঙ্গেই আপনি একা দেখা করতে পারেন না তার সঙ্গে প্রেম করা তো অনেক দূরের কথা।
৫. দীর্ঘ একটা স্বপ্ন বর্ণনা করেছন হজরত মুহাম্মদ (স.)। আর নবীদের স্বপ্ন সত্যি হয়।।তিনি বেলন, ‘এক পর্যায়ে আমরা
বড় একটা চুল্লির কাছে এসে পৌঁছলাম। চুল্লির উপিরভাগ সংকীর্ণ ও নিম্ন ভাগ প্রশস্ত।ভিতরে বিরাট চিৎকার শোনা যাচ্ছিল। আমরা চুল্লিটার ভিতর দেখতে পেলাম কিছু উলঙ্গ নারী ও পুরুষ। তাদের নিচ থেকে কিছুক্ষণ পর পর এক একটা
আগুনর হলকা আসিছল, আর তার সাথে সাথে আগুনের তীব্র দহনে তারা প্রচন্ডভাবে চিৎকার করছিলো। আমি বললাম, হে জীবরীল এরা কারা?
তিনি বললেন, এরা ব্যভিচারী নারী ও পুরুষ। (সহীহ বুখারী-৭০৪৭)
আমরা আগেই জেনেছি যে ৮০% জিনা হয় প্রেম ভালোবাসার নামে ।
আপনি যদি প্রেম করেন তাহলে মৃত্যুর পর আপনাকে এই শাস্তি দেওয়া হবে। কারন আপনি যদ আপনার প্রেমিকের হাত ও ধরেন ঐটাও জিনার ভিতর পরে। যা আমরা আগেই জেনেছি।পৃথিবীর ছোট ছোট ব্যথা আপনি সহ্য করতে পারেন না, তাহলে মৃত্যুর পর আপনি এই ভয়ংকর ব্যথা সহ্য করবেন কিভাবে??? নাকি আপনি মনে করেন হজরত মুহাম্মদ (সা:) মিথ্যাবাদী ???
৬. স্বাধীনভাবে লালসা পূরণ কিংবা গোপনে লুকিয়ে প্রেমলীলা করবে না (সূরা আল মায়িদা: ৫)
এরপর সূরা নূর এর ৩০ নং আয়াতে পুরুষদের চোখ নীচু রাখতে এবং লজ্জা স্থান হিফাজত করতে বলা হয়েছে।
৩১ নং আয়াতে নারীদেরও একই কথা বলা হয়েছে, পর্দা করার কথা বলা হয়েছে আর নারীরা কাদের সাথে সাক্ষাত করতে পারবে তাদের একটা তালিকা দেওয়া হয়েছে। সূরা আহযাবের ৫৯ নং আয়াতে পর্দা করার নির্দেশ আরো পরিস্কার ভাষায় বলা হয়েছে। যেখানে দৃষ্টি নীচু ও সংযত রাখা, লজ্জা স্থান হিফাজত করার কথা এবং পর্দা করার কথা বলা হয়েছে আর সূরা মায়িদাতে গোপন প্রেমলীলাকে নিষেধ করা হয়েছে সেখানে বিবাহ পূর্ব প্রেম বৈধ হতে পারে কি করে? এটা হারাম।
৭. যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, তবে পরপুরুষের সাথে কোমল ও আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে কথা বলো না, ( সূরা আল আহযাব: আয়াত ৩২)
এই আয়াতের দিকে লক্ষ্য করুন যেখানে কোন ননমাহরাম ছেলেদের সঙ্গে কমল শুরে কথা বলাই হারাম , সেখানে সেই ছেলের সঙ্গে প্রেম করা দূরের কথা মনে মনে প্রেমের চিন্তা করাও হারাম।
এখন আপনি বলেন বিয়ের আগে প্রেম হালাল না হারাম??
হুমায়রা: অবশ্যই হারাম। আমি কোত বড়ো পাপের ভিতর ডুবে ছিলাম ( কান্না জড়িত কন্ঠে বলল)
আমি: আচ্ছা আপনি শান্ত হোন।যা হবার তা হয়ে গেছে। এখন আপনি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চান, আল্লাহ অবশ্যই ক্ষমা করবেন।
হুমায়রা: আপনি কখনো প্রেম করেন নাই আপনার স্ত্রীর সঙ্গে প্রেম করবেন বলে।আর আমি তো যিনা পর্যন্ত করে ফেলেছি ।
আমি: আচ্ছা আপনি এখন কান্না থামান । আমি চাইনা আমার হবু স্ত্রী কান্না করুক।
হুমায়রা: তাহলে কি আমাদের বিয়েটা হচ্ছে??
আমি: আমি হেসে উত্তর দিলাম। এই প্রশ্নর উত্তর এখান না দেই একেবারে বাসর রাতেই দিবনে। আপনি কি বলেন??
হুমায়রা আমার উত্তর শুনে আমার মুখের দিকে চেয়ে মুখ নামিয়ে নিলো। হয়তো লজ্জা পেয়েছে ভালো লজ্জাই নারীর ভূষণ। কোন মেয়ে লজ্জা পেলে তখন তার সৌন্দর্য অনেক গুন বৃদ্ধি পায়। যেরকম এখন হুমায়রার সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেয়েছে।
………. সমাপ্ত………..
( বি:দ্র: – অনুমতি না নিয়ে কপি করা নিষেধ। অনেকেই আমার গল্প নিজের নামে পোস্ট করেন , ইসলামে এইটা সম্পূর্ন হারাম, ও আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। )
Leave a Reply