Islamic গল্প😊
“অপেক্ষাটা অব্যক্ত ভালোবাসার”💖
Part : 3
আমি আমতা আমতা… করে বললাম,
অর্ণব : ওটা নেগলা ছিলো।
মিস রাদিয়া : তোর যদি ওকে পছন্দ হয় তাহলে বল আমরা ওদের বাড়িতে যায়ে কথাবার্তা বলবো।
অর্ণব : না আম্মু! ওইদিন ভালো লাগতেছিলো না তাই আমরা গেছিলাম। অন্য কোন ব্যাপার না।
মিস রাদিয়া : আর যেনো না শুনি তুই কখনো কোন মেয়ের সাথে একা ঘুরতে গেছিস বুঝলি! কেননা বেগানা নারী-পুরুষের নির্জনে অবস্থানকে ইসলাম হারাম করেছে।
হাদিসে এসেছে-
“কোন পুরুষ যদি কোন নারীর সাথে নির্জনে একত্রিত হয় সেখানে শয়তান থাকে তৃতীয় ব্যক্তি”।
[সুনানে তিরমিজি (২১৬৫); আলবানী হাদিসটিকে সহিহ আখ্যায়িত করেছেন]💕
অর্ণব : ঠিক আছে আম্মু আর কখনো যাব না।
শফিক সাহেব : আর একটা কথা মনে রাখ তোর ব্যাপারে যেন কোন ধরনের মেয়েলি বিষয় না শুনি। প্রেমের মতো হারাম বিষয় আমি কখনোই মেনে নিবো না। যদি করিস তাহলে তোর কপালে দুঃখ আছে। তোকে প্রথম ও শেষবারের মতো সতর্ক করলাম।
কেননা এই সম্পর্কে কুরআনে আছে,
“স্বাধীনভাবে লালসা পূরণ কিংবা গোপনে লুকিয়ে প্রেমলীলা করবে না”
-(সূরা আল মায়িদা: ৫)💕
অর্ণব : আমি বুঝতে পারছি আব্বু। আর আমি হারাম কাজ কখনো করবো না। আমার উপর বিশ্বাস রাখতে পারো।
মিস রাদিয়া : তোর উপর আমাদের বিশ্বাস আছে। এখন তুই কলেজ যা। যাওয়ার সময় বাড়ি থেকে বের হওয়ার দোয়াটা পড়ে নিস।
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘর থেকে বের হওয়ার সময় এ দোয়া পড়তে বলেছেন-
بِسْمِ اللهِ تَوَكَّلْتُ عَلَى اللهِ وَ لَا حَوْلَ وَ لَا قُوَّةَ اِلَّا بِاللَّهِ
উচ্চারণ : ‘বিসমিল্লাহি, তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহি, ওয়া লা হাওলা ওয়া লা কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহি।’
অর্থ : আল্লাহর নামে (বের হচ্ছি); আল্লাহর ওপর ভরসা করলাম। আর আল্লাহর সাহায্য ছাড়া কোনো উপায় নেই; আল্লাহর সাহায্য ছাড়া কোনো শক্তিও নেই।’
-(তিরমিজি, আবু দাউদ)💕
অর্ণব : ঠিক আছে আম্মু আমি গেলাম। আসসালাম অলাইকুম!
তারপর আমি মশিউর আর রিপন কলেজের উদ্দেশ্যে বেড় হলাম।
আসলে সেদিন আমি নেগলার সাথে একটা জরুরি বিষয়ে কথা বলতেছিলাম। নেগলা পর্দা করে ঠিকই কিন্তু সে মন থেকে করে না। ওর পরিবার অত্যন্ত ধার্মিক তাই বাধ্য হয়ে করে।
সেদিন,
নেগলা : আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। আমি ভাবছিলাম বিয়ের পর স্বামীর সাথে অন্তত এই বস্তা পড়তে হবে না। কিন্তু ভাগ্য খারাপ! আমার স্বামী একজন দ্বীনদার ব্যক্তি। এখন কি করবো তুই বল?
অর্ণব : তুই কি পাগল হইছিস? এগুলা তুই কি বলতেছিস তুই জানিস?
নেগলা : আমার ভালো লাগে না। আর গরমের দিনে তো…. উফফফ!
অর্ণব : শুধু এই সামান্য উত্তাপ তুই সহ্য করতে পারতেছিস না। জাহান্নাম এই দুনিয়ার আগুন থেকে ৭০ গুন বেশি ভয়ানক সেটা তুই কেমন করে সহ্য করবি?
(নেগলা চুপ করে থাকলো)
অর্ণব : আর এ সম্পর্কে
কুরআনে আছে,
এই বিধান তোমাদের ও তাদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ।
(সূরা আহযাব ৩৩ : ৫৩)💕
নেগলা : এর মধ্যে পবিত্রতা ব্যাপারটা আসলো কেনো?
অর্ণব : কেন আসবে না।
তুই বেপর্দায় রাস্তা দিয়ে হাঁটলে অনেক যুবক তোর কোমরের দিকে আর তোর বুকের দিকে তাকিয়ে চোখের স্বাদ নিবে, তাতে তোর ভালো লাগবে? তোর গালে টোল পড়া গর্তে অনেক ছেলে নিজেকে কল্পনায় ভাসিয়ে নিবে, তাতে তুই আনন্দ পাবি? এগুলা কি পবিত্রতা?
বুকের উড়না সরিয়ে রাস্তায় হেঁটে বহু যুবকের দৃষ্টি কেড়ে নিতে পারিস মুর্হূতে, এটা কি পবিত্রতা?
তুই রাস্তায় হাঁটার সময় শত যুবক আড়-চোখে তোর দিকে তাকাবে! ওরা তোকে কিছু সময়ের জন্য কাছে পেতে চাবে, সারাজীবনের জন্য নয়। এটা কি পবিত্রতা?
তুই কি জানিস?– কোন সভ্য মা বেপর্দা নারীকে তার পুত্রবধু হিসেবে চাইবেনা ? বরং কিছু সময়ের জন্য কোন ছেলে তোর মোহে হারিয়ে যাবে। যেমনটা রাস্তার পাশে হকারে কোন শার্ট ভালো লাগলে আমরা তাকিয়ে দেখি। এটা কি পবিত্রতা?
তুই কি জানিস?– আমরা ঢেকে রাখা দ্রব্য নিরাপদ মনে করি। কারণ তার ভিতরটা জীবাণু মুক্ত থাকে। খোলা জিনিসে মাছি এসে ভীড় করে।
তুই কি জানিস?– তোর বুক ফুলিয়ে হাঁটা দেখে কিছু মানুষ দূর থেকে চোখের ইশারায় তোর স্ত*র সাইজ আর কোমর মাপতে ব্যস্ত হয়ে পড়বে। প্রতিদিন অজস্র পুরুষের চোখে তুই ধর্ষিতা হবি। এটা কি পবিত্রতা?
তোর টাইট–পিট জামা আমাকে তোর প্রতি আকৃষ্ট করবে ঠিকই, কিন্তু ঘরের বউ হিসেবে আমি কখনোই তোর মতো কাউকে চাইবোনা। কারণ তুই নিজেকে বাজারে সস্তা করবি। এটা কি পবিত্রতা?
তোর পোশাক দামী হতে পারে, কিন্তু শরীরটা আর দামী থাকবে না! সেটা রাস্তার যুবক কল্পনায় ঘ্রাণ শুকে নিবে। চোখ দিয়ে মেপে নিবে। “ভাবছিস—এটাই তো তোর সৌন্দর্য হবে তাইনা? হ্যাঁ রাস্তায় পড়ে থাকা ভাঙ্গা গ্লাসের টুকরায় রোদ পড়লে চক-চক করে,কিন্তু তাই বলে সেটা হিরে হয়ে যায়না সেটা মনে রাখবি।
বুঝলি?
(দেখলাম নেগলা কাঁদতেছে)
নেগলা : জানিস আমি এতো কিছু কখোনই ভাবি নি। পর্দা করলে নিজেকে দাদিমা দাদিমা মনে হয়। তাই আমার পর্দা করতে ভালো লাগতো না। আমি আমার ভুল বুঝতে পারছি! আল্লাহ যেন তোর মতো বন্ধু সবাইকে দেয়।
অর্ণব : হা হা হা! এটা আমার দায়িত্ব ছিলো। চল বাদাম খাই।
নেগলা : আরে না সময় নাই। অন্যদিন খাবো।
জোর করে সেদিন বাদাম খাওয়াইছিলাম। আর এটাই আমার খচ্চর ভাইটা দেখতে পাইছিলো।
রিপনের ডাকে আমার হুশ ফিরলো।
রিপন : কি রে কি ভাবতেছিলি?
অর্ণব : আরে না। সেদিনের ঘটনাটার কথা।
মশিউর : তুই আংকেল-আন্টিকে বলতে পারতি ঘটনাটা। খারাপ কিছু তো করিস নি।
অর্ণব : দেখ নেগলা আমাদের বন্ধু। আমরা ওকে ভালো মতো চিনি। কিন্তু আব্বু-আম্মুকে ঐ দিনের ঘটনাটা বললে তাদের মনে একটু হলেও নেগলার ব্যাপারে নেগেটিভ ধারনা জন্ম নিতো! যা আমি চাই না।
রিপন : ঠিক বলছিস। আচ্ছা তাড়াতাড়ি চল দেরী হয়ে যাচ্ছে।
অর্ণব : মারছে রে। একলাস আর বেলাল তখন থেকে দাঁড়ায় আছে। মনে হয় এতক্ষণে রাগে ভূত হয়ে গেছে। দৌড় দে!
১০ মিনিটেরর ভিতর কলেজ মোর পৌছে গেলাম,গিয়ে দেখি একলাস আর রিপন দাঁড়িয়ে আছে…
আমাদের ভিতর থেকে মশিউর বলল চল চল দেরি হয়ে গেছে এমনিতেই!
তখনই কলেজের গেটের দিকে চোখ গেল,অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি, একটা বোরখা পরিহিতা মেয়ে রিকশা থেকে নামল। নিকাব পড়ে আছে বলে মুখটা দেখা যাচ্ছে না…
অর্ণব :- এতদিনে বুঝি আমার মায়ের স্বপ্ন পূরণ হবে!
একলাস:- মানে কি বড় ভাই??
অর্ণব :- মানে ভাগ্য ভালো হলে এই মেয়েকেই বিয়া করবো।
(আমি মনে মনে দোয়া করতেছি আল্লাহ এই মেয়েটাই যেন সেই মেয়েটা হয়)
[কোন মেয়ে? এটা এখন রহস্যই থাক😁]
মেয়েটা একটু একটু করে সামনে এগিয়ে আসছে আর আমরা সবাই এক নয়নে তাকিয়ে আছি!
(চলবে…..)
মূল গল্পের লেখক – নাহাজুল ইসলাম লাইফ🍁
গল্পটির মূল নাম – “English Teacher যখন বউ”💕
[আগের পর্ব Timeline এই দেওয়া আছে]❣
💚ইমাম মাহদীর সন্ধানে💞
Leave a Reply