Islamic গল্প😊অপেক্ষাটা অব্যক্ত ভালোবাসার”💖Part : 11
“অপেক্ষাটা অব্যক্ত ভালোবাসার”💖
Part : 11
ভয়ে ভয়ে কলটা রিসিভ করে,
অর্ণব : আসসালাম অলাইকুম আব্বু।
রফিক সাহেব : অলাইকুম আসসালাম। অর্ণব তুমি কোথায়?
অর্ণব : এই তো কলেজ মোড় থেকে একটু সামনে। বাড়িতে যাচ্ছি।
রফিক সাহেব : বাড়িতে যায়ে খেয়ে দেয়ে তাড়াতাড়ি আমার অফিসে আসো। কিছু কথা আছে।
কন্ঠ শুনে যদিও বুঝা যাচ্ছে আব্বু কিছু জানে না। কারন খুব শান্ত ও স্বাভাবিকভাবেই কথা বলতেছেন। কিন্তু ডাকতেছেন কেনো? আবার অফিসে যায়ে সামনাসামনি কিছু বলবেন নাকি? আমি কিছুই নিশ্চিত হতে পারতেছিনা!
অর্ণব : আমি যাচ্ছি।
রফিক সাহেব : একটু তাড়াতাড়ি এসো।
অর্ণব : আসসালাম অলাইকুম।
রফিক সাহেব : অলাইকুম আসসালাম।
দেড় ঘন্টার মধ্যে আব্বুর অফিসে পৌচ্ছালাম, আব্বু একজন ব্যবসায়ী।
অফিস রুমে ঢুকে,
অর্ণব : আসসালাম অলাইকুম আব্বু।
রফিক সাহেব : অলাইকুম আসসালাম। বসো।
অর্ণব : কি জন্য ডাকলা?
রফিক সাহেব : আমর তো বয়স হয়ে যাচ্ছে, আমি আর কদিন বাঁচব, নানা রকম অসুখ লেগেই আছে, আমি কি তোর বউ কোনদিন দেখতে পাবনা?
অর্ণব : এত তাড়াতাড়ি বিয়ে?
(যাক বাবা বাঁচা গেল! আমি তো ভাবছিলাম মারামারির কথা জানতে পারছে।)
রফিক সাহেব : কোথায় তাড়াতাড়ি? তোর সব কিছু আমি জানি। আমাকে তুই বাইরের লোক পাস নি। শুধু কলেজে ভর্তি হওয়ার কারনটা তুই বললি না। তুই বিষয়টা গোপন রাখতে বলছিস বলে আমি এই বিষয়ে কোন কথা তুলি না।
[কোন বিষয়ের কথা বলতেছে? কলেজে ভর্তি হওয়ার কারন? এটা এখন রহস্য থাক😁]
অর্ণব : কিন্তু?
রফিক সাহেব : কোন কিন্তু না। তুই বিয়ে করবি এইটাই শেষ কথা। কেননা
পবিত্র কোরআনে আছে,
“তোমাদের মধ্য হতে যারা বিবাহহীন তাদের বিবাহ দিয়ে দাও এবং দাস-দাসীদের মধ্যে যারা সৎ তাদেরকেও। তারা যদি নিঃস্বও হয়ে থাকেন তবে স্বয়ং আল্লাহ্ তাকে ধনী বানিয়ে দেবেন।
–(সূরা নুর। আয়াতঃ ৩২)💕
আর বড় কথা আমি পাপ বহন করতে পারবো না।
অর্ণব : কিসের পাপ?
রফিক সাহেব : কিসের পাপ?
হাদিসে এসেছে,
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন,
“যার কোনো সন্তান জন্ম লাভ করে সে যেন তার সুন্দর নাম রাখে এবং তাকে উত্তম আদব-কায়দা শিক্ষা দেয়। যখন সে বালেগ হয় তখন যেন তার বিবাহ দেয়। যদি সে বালেগ হয় এবং তার বিবাহ না দেয় তাহলে সে কোনো পাপ করলে, সে পাপ তার পিতার উপর বর্তাবে।”
-(বায়হাকী, মিশকাত হা/৩১৩৮)💕
তোর বিয়ের বয়স হয়েছে, তাই তুই যা পাপ করবি তার হিসাব আমাকে দিতে হবে। আমি তা পারবো না। তোর চরিত্র রক্ষার জন্যও বিয়ে দেওয়া জরুরি।
অর্ণব : আবার আমার চরিত্রের কি হলো? তুমি জানো আমি খারাপ কাজ করি না।
রফিক সাহেব : জানি কিন্তু বলা তো যায় না।
আল্লাহ বলেনঃ
চরিত্র রক্ষার জন্য যারা বিয়ে করবে তারা যদি অভাবি হয়, তবে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করে দিবেন।
-(সুরা নুর : ৩২)💕
আর তোর তো অভাবও নাই। আমি তোকে ব্যবসায় বসতেও জোড় করি না। শুধু মাঝে মাঝে আসবি।
অর্ণব : একসাথে কলেজ + ব্যবসা + বউ কিভাবে সামলাবো?
রফিক সাহেব : কলেজের কথা তো বাদ, আর ব্যবসা তো আমিই দেখতেছি আর কি বাকি থাকলো? ফালতু অযুহাত দিস না।
(চুপ করে আছি)
[কথা গুলার মাঝের রহস্যগুলা আস্তে আস্তে খুলবে😅]
রফিক সাহেব : চুপ করে থাকিও না। এখানে কিছু মেয়ের ছবি আছে যাকে খুশি চয়েজ করো।
ছবি গুলা দেখলাম আর বললাম,
অর্ণব : না একটাও পছন্দ হলো না!
রফিক সাহেব : তোকে এই পর্যন্ত কতগুলা মেয়ের প্রস্তাব দিলাম আমি নিজেও জানিনা। সবগুলাকে না করে দিছিস। বুঝেছি তুই বিয়া করবি না
মনে মনে,
অর্ণব : তোমরা সারাজীবন চাইলেও আমি আর বিয়া করব না কারণ ২ মাস আগেই আমার প্রিয়তমার সাথে আমার বিয়ে হয়েছে। যাকে আমি প্রচন্ড ভালোবাসি।
[রাগ করিয়েন না। একটু অপেক্ষা করুন। দুই মাস আগের সেই রোমাঞ্চকর সফরটি শীঘ্রই শুরু করবো😁]
রফিক সাহেব:-কিরে কি ভাবছিস কিছু বলছিস না কেন,নাকি পছন্দের মেয়ে আছে তোর?
অর্ণব : সময় হলে এমনিতেই তোমার বউমা কে দেখতে পাবে।
রফিক সাহেব:-জানি সময় হবেনা, আর তুই দেখাবিও না।
অর্ণব :- বিশ্বাস করো বাবা আমি খুব তারাতারি বউ আনব!
রফিক সাহেব : তুই এবার নিয়ে কতবার বললি কথাটা? আচ্ছা তোর মাথায় কিসের ভূত চাপে আছে। বিয়ে নিয়ে কি তোর কোন চিন্তা ভাবনা নাই?
অর্ণব : আছে তো। এইজন্য তো কিছু উক্তি ফোনে সেভ করে রাখছি। বিয়ের কথা মনে পড়লে ওগুলা ভাবি।
রফিক সাহেব : হাহ! কি উক্তি?
মোবাইলটা বেড় করে উক্তি গুলা পড়ে শুনাচ্ছি,
অর্ণব : বিয়ের পরের অবস্থা সম্পর্কে অনেক জ্ঞানি গুনিরা বলেছেন,
*বিয়ের পর সন্ধ্যায় ঘরে ফিরে একটু ভালোবাসা, একটু আদর, একটু কোমলতা পাওয়া– একে এক কথায় কি বলে বলতে পারেন? একে বলে আপনি ভুল বাসায় এসেছেন।
*বিষয়টি মজার যে একটি ছেলের জীবনে যখন কোন ধরনের দুশ্চিন্তা থাকে না, সে বিয়ে করে। এটা অনেকটা সুখে থাকতে ভূতে কিলানোর মত।
*বিয়ের আগে ছেলেটি যখন মেয়েটির হাত ধরে, সেটি হচ্ছে ভালোবাসা। আর বিয়ের পরে যখন ধরে, সেটি হচ্ছে আত্মরক্ষা।
- মেয়েরা সত্যিই অনিশ্চিত. বিয়ের আগে তারা একজন পুরুষকে expect করে, বিয়ের পরে তাকে suspect করে, আর তার মৃত্যুর পরে তাকে respect করে।
- বিবাহিত পুরুষেরা চিরকুমারদের চেয়ে বেশি দিন বাঁচে। মানুষ যা চায় তা কখনোই পায় না।
- একজন সফল পুরুষ সে-ই যে এত টাকা আয় করতে পারে যা তার বউ খরচ করে শেষ করতে পারে না। একজন মেয়ের ক্ষেত্রে সাফল্য হচ্ছে এরকম একজন পুরুষকে খুঁজে বের করতে পারা।
- অনেকেই আমাদের দীর্ঘ দাম্পত্য জীবনের রহস্য নিয়ে প্রশ্ন করে। তাদেরকে বলি, সপ্তাহে দুদিন ভালো রেস্তোঁরায় ডিনার, মৃদু আলোতে পুরোনো মিউজিক, একটুক্ষণ নাচ– এই তো। আমি যাই বুধবারে, আমার স্ত্রী সোমবারে।
- মেয়েটি তার মাকে গিয়ে বলল, ‘আমি এমন একটি ছেলেকে খুঁজে পেয়েছি যে ঠিক বাবার মত’ মা বললেন, ‘এখন তুমি আমার কাছে কি চাও? সান্ত্বনা?
- একজন নববিবাহিত যখন বলে সে সুখি, আমরা জানি, কেন। একজন ১০ বছরের বিবাহিত মানুষ যখন বলে সে সুখি, আমরা ভাবি, কেন?
- আমি আর আমার স্ত্রী জীবনের ২৫টা বছর বড়ো আনন্দে কাটিয়েছি। তারপর আমাদের পরিচয় হল।
- এটা সত্যি যে কেউ পরাধীন হয়ে জন্মায় না, কিন্তু অনেকেই বিয়ে করে ফেলে।
- পত্রিকায় একটি ব্যক্তিগত বিজ্ঞাপন ছাপা হল, ‘Husband Wanted’। পরদিন কয়েকশ’ মহিলা যোগাযোগ করলেন, ‘আমারটি নিতে পারেন’।
- একটি মেয়ে তার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে চিন্তিত থাকে যতদিন তার বিয়ে না হয়। ছেলেদের চিন্তাটা বিয়ের পরে শুরু হয়।
রফিক সাহেব : হইছে থাম থাম। হাহাহা। তুই পারিসও বটে। কিন্তু বিয়ে না করলে বৃদ্ধ বয়সে তোকে কে দেখবে? তুই শরীরের জোরে ৭০ বছর পর্যন্ত চললি। তারপর? ৮০ বছর পরে তোর খেয়াল কে রাখবে? ভূতে? আর বৃদ্ধ বয়স হলো এমন একটা বয়স যখন আমাদের অন্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে বেঁচে থাকতে হয়। আমাদের বাচ্চারাই তখন হয়ে উঠে আমাদের সম্বল। যেমন তুই আমাদের সম্বল। আর বউ থাকা মানে একজন ভালো ও বিশ্বস্ত বন্ধু থাকা। যে তোকে খারাপ সময়ে সাহায্য করবে। পরিস্থিতি যত খারাপই হোক তোকে কখনো ছেড়ে যাবে না। এমন অনেক কথা আছে যা তোর একান্ত নিজের। যা তুই নির্ধিধায় তোর বউকে বলতে পারবি। জীবনে চলার পথে একজন সঙ্গী প্রয়োজন যে তোর চলাকে সহজ করে দিবে। সুখ-দুঃখ সব কিছু তোরা ভাগাভাগি করবি। আর জীবনে একজন ভালোবাসার মানুষ থাকা জরুরি। যার সম্পূর্ণ অস্তিত্ব জুড়ে থাকবি তুই। ওর সবকিছুর উপর সুধু তোর অধিকার থাকবে। সব চেয়ে বড় কথা তুই এখানে ঠকবি না। বুঝলি?
অর্ণব : হুম বুঝছি।
অর্ণব : না এক মাস লাগবে।
(আমার “উনি” -খুঁজে বেড় করতে কয়দিন যে লাগবে আল্লাহ জানে)
রফিক সাহেব : ১ মাস এত সময় দিতে পারবো না ১০ দিনের ভিতরে বিয়া করতে হবে, এটা আমার কথা না তোর আম্মুর কথা।
অর্ণব : ওকে ১৫ দিন সময় দেও। এবার বিয়ে করবোই ইনশাল্লাহ!
রফিক সাহেব :-এবার যেন কথার নড়াচড়া না হয়।
অর্ণব : ওকে হবেনা। আমি গেলাম আসসালাম অলাইকুম!
রফিক সাহেব : অলাইকুম আসসালাম।
বাড়ির পথে হাটতেছি আর ভাবতেছি,
বলে তো দিলাম ১৫ দিনের মধ্যে বিয়ে করবো। কিন্তু আমার “উনা” -কে ১৫ দিনের মধ্যে পাবো কোথায়। এখনতো দেখতেছি দেয়ালে দেয়ালে পোস্টার লাগাইতে হবে। ধুর পোস্টারে কি লিখবো? “উনা” -র ব্যাপারে তো আমি কিছুই জানি না। “উনা” -র মিষ্টি মুখটাই শুধু বারবার আমার চোখের সামনে ভেসে উঠতেছে। তবে এরকম লেখা যায়,
“হে প্রিয়তমা!
আমি তোমার অপেক্ষায় অপেক্ষমান প্রেমিক বলতেছি। এর থেকে বড় পরিচয় হলো আমি তোমার স্বামি অর্ণব। আমার রঙিন শহরে আজ কালো মেঘের ঘনঘটা। তোমার ব্যস্ত শহরে কি ভালো আছো? কিসের লুকোচুরির খেলায় মেতে আছো? কোথায় হারিয়ে গেলা? সদ্য ঘুম ভেঙ্গে ওঠা আধখোলা চোখদুটো যে তোমারই অপেক্ষায় থাকে সে তুমি বোঝো না? তুমি এত নিষ্ঠুর কেন বলতো? আকাশের অদৃশ্য ডাকপিয়নের কাছে খবর পাঠাতে পাঠাতে আমি ক্লান্ত। স্বপ্নের খামের ভাঁজে কত শত চিঠি পাঠাই। তোমার মনে কি সেগুলা পৌছায় না? প্লিজ দয়া করে চলে এসো। এদিকে…..
ইতি তোমার…”
ধুর এরকম পোস্টার লাগাইলে মানুষ পাগল বলবে। দেখা যাবে শুধু একটা পোস্টারের কারনে আমি পাবনা পাগলাগারদে। তার উপর পোস্টারগুলা কোথায় লাগাবো? রাজশাহীতে না এখানে?
এসব উল্টাপাল্টা চিন্তা ভাবনা করতেছি এমন সময় আম্মু কল দিলো,
অর্ণব : আসসালাম অলাইকুম আম্মু।
মিস রাদিয়া : তোর ছোট ভাই নাজিমকে নিয়ে আয় একটু??
অর্ণব : ওর মেডামকে বাসায় আসতে বললেই তো হয়, এখানে এসে পড়ায়া যাবে,রোজ রোজ যেতে ইচ্ছা করেনা!
মিস রাদিয়া : মেয়েটা রাজশাহী থেকে এসেছে। অচেনা জায়গা আর রাস্তাঘাটের যে অবস্থা! ওর নিরাপত্তার ব্যাপার আছে না।
অর্ণব : কিহ?!
(আমি তো অবাক!)
(চলবে….)
মূল গল্পের লেখক – নাহাজুল ইসলাম লাইফ❣
গল্পটির মূল নাম – “English Teacher যখন বউ”💝
[আগের পর্বগুলো Timeline এই দেওয়া আছে]🍁
💚ইমাম মাহদীর সন্ধানে💞
যারা গল্প পড়ার জন্য রিকুয়েস্ট দেন তারা প্লিজ গল্পে কমেন্ট করবেন
“”” গল্প পড়ার জন্য””””
Leave a Reply