অপেক্ষাটা অব্যক্ত ভালোবাসার”💖Part : 14

Islamic গল্প😊

“অপেক্ষাটা অব্যক্ত ভালোবাসার”💖

Part : 14

(সমস্যা আছে মানে? ভাইয়া ডাকলে আবার কি সমস্যা? ইসলামে একমাত্র স্বামীকে ভাইয়া ডাকা যায় না। তাহলে কি এটা অর্ণব?! আল্লাহ! যদি এটা অর্ণব হয় তাহলে তো…! আল্লাহ মাফ করুক।)
তানহা : আপনি কে? সত্যি কথা বলবেন না হলে খুব খারাপ হবে কিন্তু😡

(মারছে রে। নিশ্চই তানহা সন্দেহ করতেছে এটা আমি। আমার বউটা এতো ট্যালেন্টেড বাবারে বাবাহ! ধুর ওর ট্যালেন্টের জন্য আমি ফাঁসে গেলাম!)
অর্ণব : I told you before that i can’t tell you my name or any kind of information through that you can recognise me.It’s for security reason.But still you are asking over and over.Please try to understand!

(অর্ণব তো এত ইংরেজি পারে না। এটা অর্ণব না। যে ছেলে ইংরেজির মানেই বুঝেনা সে ছেলে ইংরেজিতে এভাবে কথা বলবে এটা হাস্যকর!কিন্তু ইনি হঠাৎ ইংরেজিতে কথা বলতেছে কেনো? কিছু তো ঝামেলা আছে!)
তবুও বিষয়টা গোপন রাখে বললাম,
তানহা : দুঃখিত। আমি মনে করছিলাম আপনি অন্য কেউ। তাই একটু উত্তেজিত হয়ে গেছিলাম।

অর্ণব : কাকে মনে করছিলেন?
(উফফ! বাঁচা গেলো। জানতাম আমি এতোটা ভালো ইংরেজি পারি এটা তানহা বিশ্বাস করবে না। যতই হোক আমার বউতো। এতটুকু ধারনাতো আমার বিষয়ে ওর থাকবেই!যদিও ওর ধারনাটা ভুল😁)

তানহা : এটা আমার ব্যক্তিগত বিষয়। আপনার না জানলেও হবে।

অর্ণব : তাও ঠিক। আপনার প্রোফাইল কালকে ঘুরে দেখলাম। মাশআল্লাহ আপনি ফেসবুককে অনেক সুন্দরভাবে অন্যদের ইসলামের দাওয়াত দেওয়ার জন্য ব্যবহার করতেছেন। বিষয়টা সত্যিই অসাধারণ!

তানহা : 😊😊.. ধন্যবাদ। একজন মুসলিম হিসেবে এটা আমার দায়িত্ব। কেননা,

হাদিসে এসেছে,

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “আমার কাছ থেকে একটি আয়াত হলেও পৌঁছিয়ে দাও।”
-[সহিহ বুখারী ৩৪৬১]💕

আর হ্যাঁ মানুষের সামনে তার প্রশংসা করতে নেই।কেননা,

হাদিসে এসেছে,

আবু বকর (রাঃ) বর্ণনা করেছেন
তিনি বলেন, নবী (সাঃ)-এর সামনে এক ব্যক্তি অপর এক ব্যক্তির প্রশংসা করল। তখন রসূল (সাঃ)বললেন,
“তোমার জন্য আফসোস! তুমি তো তোমার সাথীর গর্দান কেটে ফেললে, তুমি তো তোমার সাথীর গর্দান কেটে ফেললে। তিনি এ কথা কয়েকবার বললেন, অতঃপর তিনি বললেন, তোমাদের কেউ যদি তার ভাইয়ের প্রশংসা করতেই চায় তাহলে তার বলা উচিত, অমুককে আমি এরূপ মনে করি, তবে আল্লাহই তার সম্পর্কে অধিক জানেন। আর আল্লাহর প্রতি সোর্পদ না করে আমি কারো সাফাই পেশ করি না। তার সম্পর্কে ভালো কিছু জানা থাকলে বলবে, আমি তাকে এরূপ এরূপ মনে করি।”
-(সহিহ বুখারী, হাদিস নং ২৬৬২)💕

বুঝলেন?

অর্ণব : জি বুঝছি। আমাকে এখন ঘুমাতে হবে। শুভরাত্রি!

তানহা : হুম লেখক সাহেব, মাঝে মাঝে আমার সাথেও একটু কথা বলবেন!

(উফফ! নিজের বউয়ের কাছে “লেখক সাহেব” শুনা যে কতটা আনন্দের বিষয় তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। মিসেস তানহা! আমি আপনার সাথে সারা জীবন কথা বলতে চাই।)
অর্ণব : যদিও আমি মেয়েদের সাথে বেশি কথা বলিনা। ঠিক আছে আপনার সাথে বলবো। আসসালাম অলাইকুম!

তানহা : ধন্যবাদ। অলাইকুম আসসালাম।
(আমার মাঝে মাঝে মনে হচ্ছে এটাই অর্ণব। কিছুই বুঝতেছিনা।)

ফেসবুক থেকে লগ আউট করে শুয়ে শুয়ে ভাবতেছি,
এক দিক থেকে তানহার আইডিটা পেয়ে ভালোই হয়েছে। অন্ততপক্ষে এটা জানা গেলো তানহা আমাকে স্বামী হিসেবে স্বীকার করে। আর “ক্ষণিকের মুসাফির” এর লেখককে মানে আমাকে ওর ভালো লাগে। কিন্তু বোকাটা আমাকে “ভাইয়া” বানাইতে চায়। কি পরিমানে হ্যান্ডেল(বোকা) ও! এইদিক থেকে তানহার প্রতি আমার বিশ্বাস আরো বেড়ে গেলো। কারণ তানহা অন্য কাউকে নিয়ে উল্টা-পাল্টা চিন্তাভাবনা কখনো করবে না। যেটার প্রমান আমাকে নিজে দিলো। ধুর বিষয়টা আরো জটিল হয়ে গেলো। কালকে কলেজে যে কি হয় এটা আরো একটা বড় দুঃচিন্তা।

এগুলা ভাবতে ভাবতে ঘুমায় গেলাম।

সকালে আমি মশিউর আর রিপন একসাথে কলেজ গেলাম। গেটে ঢুকতেই দারোয়ান বললো,
দারোয়ান : হেডস্যার আপনাদেরকে ইংরেজী ম্যাডামের সাথে দেখা করতে বলছে।

রিপন : শুধু আমাদের তিনজনকে?

দারোয়ান : ওটাতো জানি না।

অর্ণব : ঠিক আছে। আসসালাম অলাইকুম।

দারোয়ান : অলাইকুম আসসালাম।

কলেজে ঢুকতেই দেখলাম এখলাস আর বাকি সবাই আগেই চলে আসছে। নেগলা একটু বকাঝকা করতেছিলো যে আমি এটা কেনো করলাম ইত্যাদি ইত্যাদি। তারপর নেহা আর নেগলাকে রেখে আমরা ইংরেজি ম্যাডামের রুমে উনার সাথে দেখা করতে চলে গেলাম।ম্যাডাম আজকে তাড়াতাড়ি চলে আসছে।

রুমে ঢুকেই আমরা সবাই মাথা নিচু করে ছিলাম।
অর্ণব : আসসালাম অলাইকুম ম্যাডাম।

ম্যাডাম : অলাইকুম আসসালাম।

অর্ণব : ম্যাডাম দোষ তো শুধু আমি করছি। তাহলে এদের ডাকলেন কেনো?

ম্যাডাম : দোষ যে তোমাদের মধ্যে কেউ করে নি তা আমি জানি।

(আমরা এক সেকেন্ডের জন্য বিশ্বাস করতে পারিনি এটা ম্যাডাম বলতেছে। যিনি আমাদের দেখতে পর্যন্ত পারেন না সহ্য করা তো দূরে থাক।)
মশিউর : মানে?!

ম্যাডাম : কালকে তিতুমির আসে আমাকে সব বলছে। শুধু কালকের ঘটনা না দুই মাস আগের ঘটনাও। কালকে অর্ণবের যে কোন দোষ ছিলো না তা তিতুমির বললো এবং দুই মাস আগে অর্ণব আর তোমরা যে অন্যায়ের প্রতিবাদ করার জন্য এগুলা করছিলা এটা আমি ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারি নি। দোষটা আমার। আমি না জেনেশুনেই তোমাদের উপর খারাপ ধারণা রাখছি। ক্ষমাটা আমার চাওয়া উচিৎ। আশা করি তোমরা আমাকে ক্ষমা করে দিবা। কেননা,

হাদিসে এসেছে,

রাসূল (সা:) বলেছেন,
প্রতিটি মানুষই ভুলকারী আর ভুলকারীদের মধ্যে তারাই উওম যারা তওবাকারী”।
-(তিরমিযী ২৪২৩)💕

অর্ণব : না ম্যাডাম। আপনি কি বলতেছেন। আমরা আপনার ছাত্র। এটা ভালো দেখায় না। আর আপনার প্রতি আমাদের ভালোবাসা এটাতে একটুও কমে নি। কারন আমরাই বিষয়টাকে গোপন রাখছিলাম। তাই আপনিও জানতে পারেন নি। এখানে ক্ষমা চাওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না।

ম্যাডাম : ধন্যবাদ তোমাদেরকে। আর অর্ণব নেগলার জন্য তুমি যে ঝুঁকিটা নিয়েছিলা তাতে আমি সত্যিই ইম্প্রেশ।

অর্ণব : ধন্যবাদ ম্যাডাম। তাহলে তো আপনি যাচ্ছেন না তাই না?

ম্যাডাম : না, যেহুতু কথা দিয়েছি যেতেই হবে। যদিও ভুল বোঝাবুঝির মধ্যে বিষয়টা ঘটে গেছে তাও আমি আমার কথা রাখবো। কেননা,

পবিত্র কুরআনে আছে,

“প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করবেন না।”
-(০২.১৭৭)💕

আর ইতিমধ্যে আমি নতুন কলেজে জয়েনিং করে ফেলছি। আর সেটা আমার বাসার সাথেই। আমি অনেক দিন ধরে চেষ্টায় ছিলাম কিন্তু হচ্ছিলা। এবার হেড স্যার নিজে আমাকে সাহায্য করছে। তাই দ্রুত হয়ে গেছে। একদিক থেকে তোমরা আমাকে সাহায্যই করলা বলা চলে। হাহা!

অর্ণব : আমরা আপনাকে মিস করবো।

ম্যাডাম : আমিও। শুনো তোমরা অনেক ভালো। পড়াশুনাতেও মোটামুটি ভালো শুধু দুষ্টামিটা একটু কম করো আর পড়ায় মন দেও দেখবা তোমরা অনেক ভালো রেজাল্ট করবে। কি আমার কথা রাখবে তো?

বেলাল : ইনশাল্লাহ ম্যাডাম। এবার আপনার জন্য আমিই টপার হবো।

(সবাই হেসে উঠলো)

ম্যাডাম : দোয়া করি।

একলাস : আপনার নতুন কলেজে যাব একদিন আমরা সবাই বেরাতে যাবো ইনশাল্লাহ।

ম্যাডাম : ওকে অপেক্ষা করব তোমাদের জন্য!

অর্ণব : ম্যাডাম আপনার দেরী হচ্ছে আমরা গেলাম।আসসালাম অলাইকুম।

ম্যাডাম : ভালো থাকিও সবাই। অলাইকুম আসসালাম।

ম্যাডামের রুম থেকে বেড় হয়ে আমরা নেহা আর নেগলার কাছে গেলাম। ওদেরকে সব ঘটনা খুলে বললাম।

নেগলা : নেহা চল ম্যাডামের সাথে দেখা করে আসি। তোরা থাক।

ওরা ম্যাডামের সাথে দেখা করতে চলে গেলো।

এখলাস : যাক বাবা এবারের মতো বাঁচে গেলাম। সবাই শুকরিয়া আদায় কর। কেননা,

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

“অতএব, তোমরা আমাকে স্মরণ করো, আমি তোমাদেরকে স্মরণ করব। আর আমার শোকর আদায় করো, আমার সাথে কুফরী করো না।”
-[আল-বাকারা; ২ : ১৫২]💕

বেলাল : তিতুমির আবার কবে থেকে এতটা ভালো হলো বুঝলাম না!

অর্ণব : আল্লাহ কখন কাকে হেদায়েত দিবে এটা বলা যায় না। এটা শুধু স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা জানেন। কেননা,

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

“তাঁহাদের হেদায়েতের
দায়িত্ব আপনার উপর নয়
বরং আল্লাহ-ই একমাত্র
যিনি যাঁকে ইচ্ছা হেদায়েত
দান করেন…।”
-[সূরা বাক্কারাহ: আয়াত ২৭২]💕

রিপন : হুম ঠিক বলছিস।

এমন সময় তিতুমির এসে আমাকে ডাকলো।
তিতুমির : অর্ণব একটু এদিকে শুন।

এখলাস : কেন কি জন্য?

তিতুমির : অর্ণবের সাথে কিছু কথা আছে।

মশিউর : যা বলার এখানে বল। ও যাবে না।

অর্ণব : আচ্ছা বাদ দে না। দরকারি কথা থাকতেই পারে। তিতুমির চল। তোরা কিছুক্ষণ থাক।

তিতুমিরকে নিয়ে আমি একটু সাইডে গেলাম…..

(চলবে..)

মূল গল্পের লেখক – নাহাজুল ইসলাম লাইফ❣

গল্পটির মূল নাম – “English Teacher যখন বউ”💝

[আগের পর্বগুলো Timeline এই দেওয়া আছে]🍁

💚ইমাম মাহদীর সন্ধানে💞


Comments

One response to “অপেক্ষাটা অব্যক্ত ভালোবাসার”💖Part : 14”

  1. […] 9 Chapter 10 Chapter 11 Chapter 12 Chapter 13 Chapter 14 Chapter 15 Chapter 16 Chapter 17 Post navigation […]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *