“অপেক্ষাটা অব্যক্ত ভালোবাসার”💖Part : 27

Islamic গল্প😊

“অপেক্ষাটা অব্যক্ত ভালোবাসার”💖

Part : 27

চারপাশে বিস্তর নিরবতা। রাস্তা সম্পুর্ন ফাঁকা। রাস্তার ধারের ল্যাম্পপোস্টের আলোয় দুজন পথিক পাশাপাশি হেঁটে যাচ্ছে। আমি আর তানহা। দুজনেই গল্প করতেছি আর হাটতেছি।

আমি আর তানহা প্রায় গভীর রাতে ফাঁকা রাস্তায় হাটতেছি। সত্যিই খুব ভালো লাগতেছে, যেটা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। চারপাশের রোমান্টিক পরিবেশ মুহুর্তগুলাকে আরো মাধুর্যপূর্ণ করতেছে। এই সফর সারাজীবন মনে থাকবে। বিশেষ করে মূহুর্ত গুলা।

কিন্তু আমি ভুলে যায় নি আমরা একদম অজানা-অচেনা শহরে এখন। তার উপর আবার গভীর রাত। চারিদিকে বিপদের হাতছানি। যেকোনো সময় যেকোনো দিক দিয়ে বিপদ আসতে পারে। তার উপর আমার সাথে তানহা আছে। যেটা আমার সবচেয়ে বড় ভয়। যেখানে আমি একা থাকলেও ভয়ে ভয়ে থাকতাম সেখানে একটা যুবতী মেয়েকে নিয়ে গভীর রাতে এভাবে হেটে যাওয়া কতটা ঝুঁকিপূর্ণ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আমি একা থাকলে কোনমতে নিজেকে যেকোনো বিপদ থেকে বাঁচাইতে পারতাম, কিন্তু তানহার সাথে তা সম্ভব না। তাই দুঃচিন্তাটা একটু বেশিই কাজ করতেছে। আমি চোখ কান খোলা রাখে হাটতেছি। চারপাশ খুব তীক্ষ্ণভাবে দেখতেছি। জানি তানহা আমার সাথে নিজেকে নিরাপদ মনে করতেছে। তাই দায়িত্বটা আরো বেড়ে গেছে। আর বাজারের সেই ছেলেগুলা তো সবচেয়ে বড় ভয়।

গল্প করতে করতে আমরা বাস ও বাজার পার হলাম। হঠাৎ দেখতে পেলাম অনেক দূরে কিছু ছেলে আড্ডা দিচ্ছে।

অর্ণব : তানহা! যায়ে রাস্তার পাশে গাছের সোজাসুজি দাঁড়াও। যদিও এত দূর থেকে দেখতে পাবে না তাও সাবধানের মার নাই।

তানহা : তুমি?

অর্ণব : আমি একটু আসতেছি।
(তানহা “তুমি” বললো। বিষয়টা লক্ষ্য করলেও পরিস্থিতির জন্য কিছু বললাম না। এখন মজা করার সময় না।)

তানহা : একদম না। চলো আমরা যেদিক দিয়ে আসছি সেদিকে যাই।

অর্ণব : আমাকে নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। শুধু দোয়া করিও।

তানহা : সাবধানে যেও।

আমি রাস্তা থেকে নেমে পাশের অন্ধকার জমিন বাড়ি দিয়ে এগিয়ে ওদের দেখার জন্য গেলাম।

আসলে কেউ ঠিকই বলছিলো,
“যেখানে বাঘের ভয় সেখানে সন্ধ্যা হয়”

সামনের ছেলেগুলা আর কেউ নয় ঐ বাজারের ছেলেগুলাই। আমি তাড়াতাড়ি তানহার কাছে আসলাম।

অর্ণব : চলো যেদিক থেকে আসছি সেদিকে যাইতে হবে।

তানহা : আমি আগেই বলছিলাম। এখন চলো।

অর্ণব : আর শুনেন কেউ যদি জিজ্ঞাসা করে আমাদের দুইজনের সম্পর্ক কি? বলবেন আমরা স্বামী-স্ত্রী! নাহলে বিপদে পড়তে পারি।

তানহা : ইস! শখ কতো। আমি পারবো না মিথ্যা বলতে।

অর্ণব : ঠিক আছে আপনাকে বলতে হবে না। আমিই বলবো। আপনি শুধু চুপ করে থাকিয়েন। এখন চলেন।

আমরা আবার পিছনে হাটা দিলাম। ঘড়িতে দেখলাম সাড়ে বারোটা বাজে। শুনছিলাম এরকম রোমান্টিক সময় গুলা তাড়াতাড়ি চলে যায়। সময় কখন যে চলে যায় বুঝায় যায় না। কিন্তু আজকে আমাদের সাথে উল্টা হচ্ছে। সময় শামুকের গতিতে যাচ্ছে।

আমরা আবার যেদিক থেকে আসছি সেদিকে যাচ্ছি। এমন সময় একটা পিকআপ আসতে দেখলাম। যাক একটা আশার আলো দেখতে পেলাম। আমি হাত দেখাইতেই পিকআপটা থামলো। যদিও একটু দ্বিধায় ছিলাম এই রাতে কারো উপর ভরসা করা ঠিক হবে কি না।

পিকআপের পিছনে আসবাবপত্র। বুঝলাম কোন পরিবার বাসা পাল্টাচ্ছে। সালাম দিয়ে কোথায় যাচ্ছে জিজ্ঞাসা করতেই বললো,
ড্রাইভার : গাড়ি তো বেশি দূর যাবে না।

অর্ণব : আমাদেরকে শুধু সামনের মোড়টা পার করে দেন। তাহলেই অনেক বড় উপকার হবে। আপনার ভাবীকে নিয়ে কিছু ছেলেদের সামনে দিয়ে পার হতে সাহস পাচ্ছি না। বুঝতেই তো পারছেন রাতের বেলা।

ড্রাইভার : থামেন আমি একটু জিজ্ঞাসা করে নিই।

আমি বুঝতে পারিনি পিছনে লোক আছে। মানে যে পরিবারটার আসবাবপত্র পিছনে আছে তারাও মালপত্রের সাথেও আছে। একটু আস্বস্ত হলাম যে একটা লোকের কথার সাথে সাথে একজন বয়স্ক মহিলার গলার আওয়াজও পেলাম। শেষ পর্যন্ত মহিলার কথায় আমাদের সাহায্য করতে রাজী হলো। আল্লাহকে হাজার হাজার শুকরিয়া।
ড্রাইভার : আসেন। ওরা পারমিশন দিছে।

সাথে সাথে প্রথমে আমি ড্রাইভারের পাশে বসলাম তারপর তানহা উঠলো। পিকআপের দরজাটা ভালো মতো লাগায় গাড়ি স্টার্ট দিলো। কিছুক্ষণের মধ্যেই ছেলেগুলাকে অতিক্রম করলাম। আরো কিছুদূর যেতেই একটু ঘনবসতি দেখলাম। এটা একটা পাড়া বা মহল্লা। তাই ড্রাইভারকে বললাম এখানেই নামায় দেন।

ড্রাইভারকে ধন্যবাদ দিয়ে আমরা একটা গলিতে ঢুকলাম।

তানহা : এদিকে কেনো ঢুকতেছো?

অর্ণব : দেখি কারো বাড়িতে উঠা যায় কি না। অথবা এক রাতের জন্য ভাড়া নিয়ে থাকা যায় কি না। আর মনে রাখবেন স্বামী-স্ত্রী না ছাড়া কেউ আমাদের বাসায় উঠাবে না। তাই মুখটা একটু বন্ধ রাখিয়েন।

তানহা : হুম😡

চারপাশে বাড়িঘর। কিন্তু রাস্তা ফাঁকা। আমি আর তানহা হাটতেছি। মাঝে মাঝে কিছু কুকুর আমাদের দেখে ডেকে উঠতেছে। আমি চারপাশে সজাগ দৃষ্টি দিচ্ছি।

মনে মনে,
তানহা : একটা ছেলে এতটা দায়িত্বশীল, এতটা যত্নশীল আর এতটা দূরদর্শী কেমন করে হতে পারে! অর্ণবকে না দেখলে জানতেই পারতাম না। আমি আসলেই ভাগ্যবতী। আল্লাহকে শুকরিয়া উনার সাথে আমার বিয়ে ঠিক করে দেওয়ার জন্য।

অর্ণব : একটা মুভিতে দেখছিলাম এরকম একটা পরিস্থিতিতে হিরো একটা সাইকেল জোগাড় করে আনে নায়িকাকে নিয়ে যায়। এখন আমি সাইকেল কোথায় পাই!

যদিও উনার বুদ্ধিটা খুব ভালো লাগলো। আর খুব রোমান্টিক। বললাম,
তানহা : ইস! সাইকেল কেনো? সাইকেলে কতদিনে পৌছাবো? বাইক লাগতো।

অর্ণব : হুম ঠিক বলছেন। আমি সফর করার সময় বাইক কিনার টাকা নিয়ে ঘুরবো। আপনার মাথা তো বুদ্ধি দিয়ে ভর্তি!😒

(আমি হাসতে হাসতে শেষ!)
তানহা : হাহাহা। এটাতো আমি ভেবে দেখিনি।

অর্ণব : আমার কপালে যে কি আছে। কেবল তো কয়েকঘন্টা হলো সারাজীবন তো পড়েই আছে।

তানহা : উনি অনেক বুদ্ধিমান। তাই আমার বুদ্ধি না হলেও চলবে। বুঝলেন😜

অর্ণব : পাম মারা বন্ধ করেন।

তানহা : 😆😆.. সফরটা কিন্তু এখন পর্যন্ত অসাধারণ হইছে। শুধু বৃষ্টিটা হলে একদম পরিপূর্ণ হয়ে যাইতো।

অর্ণব : বাবারে বাবাহ! এই বসন্তকালে বৃষ্টি আশা করতেছেন? আপনি পারেনও বটে!

তানহা : হাহা। কারণ বৃষ্টি আমার খুব ভালো লাগে। আর উনাকে এই বর্ষায় আমার সাথে বৃষ্টিতে ভিজতে হবে এইটা Fixed😍

অর্ণব : আমার দাঁড়ায় হবে না। আমি তো বৃষ্টির দিনে কাঁথা মুড়িয়ে আরামের ঘুম দেই। আহা কি শান্তি আকাশে বাতাসে!

তানহা : ঐটা “কি শান্তি” না “কি আনন্দ আকাশে বাতাসে”। আর আমি থাকতে এরকম কখনো হবে না। আপনি জানেন বৃষ্টির কত ফযিলত! বৃষ্টির প্রতিটি ফোঁটা হয়ে নামে রহমতের ধারা। তাই সুন্নত হলো বৃষ্টির ছোঁয়া পেতে বস্ত্রাংশ মেলে ধরা। কেননা

হাদিসে এসেছে,

আনাস [রাঃ] বলেন, ‘আমরা রাসুলুল্লাহ [সাঃ] এর সঙ্গে থাকাকালে একবার বৃষ্টি নামল। রাসুলুল্লাহ [সাঃ] তখন তাঁর পরিধেয় প্রসারিত করলেন, যাতে পানি তাকে স্পর্শ করতে পারে। আমরা বললাম, আপনি কেন এমন করলেন? তিনি বললেন, কারণ তা তার রবের কাছ থেকে মাত্রই এসেছে।’
-[মুসলিম : ৮৯৮]💕

বুঝলেন?

অর্ণব : হুম। আর বৃষ্টি চলমান সময়ে দোয়াও কবুল হয়। তাই এ সময় দোয়ার জন্য লুফে নেয়া সুন্নত।

হাদিসে এসেছে,

সাহল বিন সাদ [রাঃ] বলেন, ‘দুই সময়ের দোয়া ফেরত দেয়া হয় না কিংবা [তিনি বলেছেন], খুব কমই ফেরত দেয়া হয়- আজানের সময় দোয়া এবং রণাঙ্গণে শত্রুর মুখোমুখি হওয়াকালের দোয়া। অন্য বর্ণনা মতে, বৃষ্টির সময়ের দোয়া।
-[আবু দাউদ : ২৫৪০]💕

তানহা : হুম আর রহমতের বৃষ্টি দেখে দোয়া পড়া সুন্নত।

হাদিসে এসেছে,

আয়েশা [রাঃ] বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃ] বৃষ্টি হতে দেখলে বলতেন,

اللَّهُمَّ صَيِّباً نَافِعاً

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ছাইয়িবান নাফিয়া’।
[অর্থাৎ হে আল্লাহ, এমন বৃষ্টি আমাদের ওপর বর্ষণ করুন যাতে ঢল, ধস বা আজাবের মতো কোনো অমঙ্গল নিহিত নেই।]
-[বোখারি : ১০৩২]💕

এমন সময় দেখতে পেলাম সামনে দিয়ে একজন বয়স্ক মানুষ হেটে আসতেছেন। তাড়াতাড়ি কাছে গিয়ে,
অর্ণব : আসসালাম অলাইকুম।

বয়স্ক লোক : অলাইকুম আসসালাম। বাবা তোমরা কারা? এত রাতে এখানে কি করো?

তারপর আমি পুরা ঘটনাটা বললাম। তারপর,
অর্ণব : এখানে কি আজকে রাতটা থাকার জন্য কোন ব্যবস্থা হবে?

বয়স্ক লোক : তোমরা তাহলে বিপদে পড়ছো। আমার সাথে এসো।

আল্লাহকে শুকরিয়া জানায়,
অর্ণব : আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমরা খুব দুঃচিন্তায় ছিলাম। এতো রাতে কাউকে ডাকারও সাহস পাচ্ছিলাম না।

বয়স্ক লোক : এতে ধন্যবাদের কি আছে। বিপদগ্রস্তদের সাহায্য করা আমাদের দায়িত্ব। আর

পবিত্র কুরআনে আছে,

“আশ্রয়প্রার্থীকে সুরক্ষা দিন, সহযোগিতা করুন।”
-(০৯ঃ ০৬)💕

তাই এটা ঈমানী দায়িত্বও বটে।

অর্ণব : জি। তা আপনি এতো রাতে কোথা থেকে আসতেছেন?

(আমরা উনার সাথে হাটতেছিলাম)

বয়স্ক লোক : আমি মসজিদ থেকে আসতেছি। নফল এবাদত করতে করতে কখন যে এত রাত হয়ে গেছে বুঝতে পারিনি। আসলে নামাজ পড়ার মধ্যে যে শান্তি আছে তা প্রকৃত নামাজি ছাড়া কেউ বুঝবেনা। তবে আজকে একটু বেশি রাত হয়ে গেছে।

অর্ণব : ওহ!

বয়স্ক লোক : তা তোমরা কি স্বামী-স্ত্রী?

আমি উত্তর দেওয়ার আগেই তানহা বলে উঠলো,
তানহা : জি আমাদের বিয়ে ঠিক হইছে। আমরা বিয়ের জন্যই যাচ্ছিলাম। কালকে বিয়ে হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু তারমধ্যে এই ঝামেলা।

বয়স্ক লোক : ওহ এই ব্যাপার! তা মা তোমার বাবা কি করে?

তানহা : আমার বাবা-মা ছোট বেলায় মারা গেছে।

বয়স্ক লোক : ওহ! তোমার ভরনপোষণ কে দেয়?

তানহা : জি আমি একটা এতিমখানায় মানুষ হয়েছি।

বয়স্ক লোক : তার মানে অনেক কষ্টে বড় হয়েছো। কোথায় যাচ্ছিলা বিয়ে করতে?

তানহা : এখনো ঠিক করিনি। আমার কালকে পরিক্ষা আছে। তারপর ঠিক করতাম।

বয়স্ক লোক : তাহলে তো তোমাদের ভাগ্যটা ভালো। আমার ভাই কাজী। বিয়ে পড়ায়। আমার পাশের বাড়িতেই থাকে। যেহেতু তোমার অভিভাবক নাই। তাই এই পুন্যের কাজটা করার সুযোগ দাও। দিবা না মা?

মনে মনে,
অর্ণব : আল্লাহ! আমি নিশ্চিত তানহা এখন আফসোসের উপর আফসোস করতেছে। ও তো এর ঠেলায় কিছু বলার মতো অবস্থায় নাই। একেই বলে “অতি চালাকের গলায় দঁড়ি”! আমি যে কত কষ্ট করে হাসি চাপে রাখছি আমি জানি। যদিও আমি চাচ্ছি বিয়েটা হয়ে যাক। কিন্তু বুঝলাম এই মূহুর্তে বিয়ে করতে তানহার আপত্তি আছে। তাই বললাম,
অর্ণব : না চাচা আপনাকে অযথা কষ্ট করার দরকার নাই। তাও আবার এত রাতে।

বয়স্ক লোক : আরে এটাতে আবার কষ্টের কি হলো। এটা তো আরো পুন্যের কাজ। কারো বিয়ে দেওয়া তো ভাগ্যের ব্যাপার। আর আল্লাহ তায়ালা নিজেই এর আদেশ দিয়েছেন। পবিত্র কুরআনে

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

“তোমাদের মধ্য হতে যারা বিবাহহীন তাদের বিবাহ দিয়ে দাও; এবং দাস-দাসীদের মধ্যে যারা সৎ তাদেরকেও। তারা যদি নিঃস্ব হয়ে থাকে, তবে স্বয়ং আল্লাহ্ তাদেরকে ধনী বানিয়ে দেবেন।”
-(সূরা নুর – আয়াতঃ ৩২)💕

আর উসমানী খেলাফতের সময়ে একটি আইন ছিলো, ছেলে-মেয়েদেকে অবশ্যই পচিশ বছরের পূর্বে বাধ্যতামূলকভাবে বিয়ে দিতে হবে। বিয়ে না দিলে প্রয়োজনে মা-বাবাকে বাধ্য করানো হতো। টাকা পয়সার সমস্যা হলে, রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে পর্যাপ্ত পরিমানে সাহায্য করা হতো। আহা! বিয়ের জন্য রাষ্ট্র কতৃক নিয়ম ছিল। এবার বুঝলা এর ফযিলত।

অর্ণব : হা বুঝছি চাচা।

আমি তানহাকে আস্তে আস্তে বললাম,
: এখন তো বিয়ে হয়েই ছাড়বে।

তানহা রাগী চোখ নিয়ে আমার দিকে তাকায় আছে। আমি মনে মনে তো উড়াধুরা নাচতেছিলাম😁..আহা! কি আনন্দ আকাশে বাতাসে😁

দেখতে দেখতে চাচার বাড়ি চলে আসলাম। তিন তালা বাড়ি। জিজ্ঞাসা করলাম,
অর্ণব : চাচা এটা কিআপনার নিজের বাড়ি?

চাচা : হুম বাবা।

ওহহো। তাই উনি বললো, “কষ্ট কিসের?”। আল্লাহ তায়ালা ইনাকে যথেষ্ট দিছেন।

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

“তোমাদেরকে নিশ্চয়ই ধন সম্পদ ও জীবন সম্পর্কে পরীক্ষা করা হবে এবং যাদেরকে তোমাদের আগে কিতাব দেয়া হয়েছে ও যারা শিরক করেছে তাদের কাছ থেকে অনেক কষ্টদায়ক কথা শুনবে। যদি তোমরা ধৈর্য ধারণ কর এবং সংযমী হও, তবে তা সুদৃঢ় কাজের অন্তর্ভুক্ত হবে।”
-(সূরা আলে ইমরান, আয়াত:১৮৬)💕

আল্লাহ ইনাকে পরিক্ষা করতেছেন ধনসম্পদ দিয়ে। সৎ ও ভালো কাজে সম্পদ ব্যয় করা উনার ঈমানী দায়িত্ব। যার হিসাব তাকে হাশরের মাঠে দিতে হবে।

উনি গেটে কলিংবেল চাপতে গেলে, আস্তে আস্তে,
তানহা : এই যে মিস্টার এটা কি হচ্ছে?

অর্ণব : দেখতেই তো পাচ্ছেন। আমিও তো আপনার মতো কিছুই বুঝতেছিনা যে কি হতে যাচ্ছে।

তানহা : আপনাকে এখন পর্যন্ত সেভাবে চিনিনা জানিনা, আর কয়েক ঘন্টার পরিচয়ে বিয়ে? Impossible!
(আসলে আমি চাচ্ছিলাম না আমার চাকরি হওয়ার আগে বিয়েটা হোক। আমি চাচ্ছিলাম কালকে ইন্টারভিউটা দিয়ে বিয়ে করতে। আশা ছিলো এখানে নিশ্চিত চাকরিটা হবে। কিন্তু আমি তো কালকে ইন্টারভিউটাই দিতে পারবো না। আমাকে দুই মাস পরে আবার আসতে হবে। তাই তার আগে বিয়েটা না করার পরিকল্পনাই করতেছিলাম।)

অর্ণব : আপনাকে কে মাতব্বরি করতে বলছিলো? নিজের ফাঁদে নিজে আটকে গেছেন। আমার দোষ?

তখনই চাচা ডাকলো। তানহা রাগে গেছে। চাচার ফ্লাট দুই তালায়। উনার ফ্লাটে ঢুকেই চাচার পরিবারের সাথে পরিচিত হলাম। তার পাঁচ সন্তান, তিনটা ছেলে আর দুইটা মেয়ে। ছেলে দুইটার বিয়ে হয়েছে আর একটা মেয়ের। মেয়েটা তার জামাইয়ের সাথে আজকে বিকালেই আসছে। তাই বাড়িতে একটা আনন্দের আমেজ বিরাজ করতেছিলো। এজন্য সবাই এত রাত পর্যন্ত জাগে আছে। আমরা ডাইনিং স্পেসে যায়ে সোফায় বসলাম। তারপর চাচা সবাইকে আমাদের ঘটনাটা খুলে বললো।

আমি তো বুঝতে পারতেছিনা এখন আমার কি করা উচিৎ। এই চাচা আমার বিয়ে দিয়েই ছাড়বে, অচেনা জায়গা, তানহা এই সময় বিয়েতে রাজী না, আর আমি এক পায়ে রাজী এই নিয়ে গজাখিচুড়ি অবস্থা। আমি কোন মতে মুখে হাসির রেখা ফুটায় তুলে সৌজন্য বজায় রাখলাম। সবাই আমার মতো এক পায়ে রাজী যে বিয়ে দিতেই হবে। আসলে এরকম ঘটনা তো আর বারবার হয় না। তারপর অনেক কথা হইলো ওদের সাথে। তানহা চুপ করে ছিলো পুরোটা সময়। কথা শেষ করে দুইটা মেয়ে তানহাকে নিয়ে চলে গেলো। আর চাচা গেলো উনার ভাইকে ডাকতে, যিনি কাজী।

(চলবে…..)

মূল গল্পের লেখক – নাহাজুল ইসলাম লাইফ❣

গল্পটির মূল নাম – “English Teacher যখন বউ”💝

[আগের পর্বগুলো Timeline এই দেওয়া আছে]🍁

💚ইমাম মাহদীর সন্ধানে💞


Comments

One response to ““অপেক্ষাটা অব্যক্ত ভালোবাসার”💖Part : 27”

  1. […] 22 Chapter 23 Chapter 24 Chapter 25 Chapter 26 Chapter 27 Chapter 28 Chapter 29 Chapter 30 Chapter 31 […]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *