অপেক্ষাটা অব্যক্ত ভালোবাসার”💖Part : 29

Islamic গল্প😊

“অপেক্ষাটা অব্যক্ত ভালোবাসার”💖

Part : 29

ছাদ থেকে রুমে আসলাম। হঠাৎ বিয়ে তাই সেরকম কিছু সাজানো নাই। তবে রুমের সব কিছু সুন্দরভাবে সাজানো। রুমের আসবাবপত্র আর সেগুলা সাজানোর ধাঁচ জানান দিচ্ছে ইনারা কতটা ধনী। রুমের সাথে বেলকনি। বেলকনিতে তানহা দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকায় আছে। আমি উনার মনের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে অনিশ্চিত। তাই দরজা লাগিয়ে বিছানার এক সাইডে বসলাম। তানহা বুঝতে পারলো আমি আসছি তাই বেলকনি থেকে রুমে আসলো। আসার সময় দরজাটা লাগিয়ে দিলো।

তানহা : আসসালাম অলাইকুম। কোথায় গেছিলেন?

অর্ণব : অলাইকুম আসসালাম।একটু ছাদে গেছিলাম। হঠাৎ সালাম দিলেন যে?

(কারণ তুমি এখন আমার স্বামী, বুঝলেন মিস্টার অর্ণব।)
তানহা : না এমনি।

অর্ণব : বেলকনিতে কি করতেছিলেন?

তানহা : চাঁদ দেখতেছিলাম। আপনি ছাদে কি করতেছিলেন?

(যাক বাবা আমার বৌটা রোমান্টিক আছে দেখছি)
অর্ণব : আমার বেস্ট ফ্রেন্ডের সাথে কথা বলতেছিলাম। জানাইতে তো হবে যে বিয়ে করছি তাই না?

তানহা : হাহা। তবে প্লিজ এখন থেকেই স্বামীর অধিকার চাইয়েন না। এটা আমার অনুরোধ!

অর্ণব : জি আমি বুঝতে পারছি। আমাদের পরিচয় শুধু কয়েক ঘন্টার আর এভাবে হঠাৎ করে বিয়ে হবে এটা আমিও ভাবতে পারিনি। আপনারও ধাতস্থ হওয়ার জন্য কিছুটা সময় প্রয়োজন।

(জি আমি জানতাম তুমি বুঝবা বিষয়টা। এজন্যই তো তোমাকে এতটা ভালো লাগে।)
তানহা : ধন্যবাদ মিস্টার অর্ণব আহমেদ… Son of Mr. Rofik Ahmed And Misses Radia Begam😜

অর্ণব : বাবারে বাবাহ! আপনি কাবিন নামায় দেখে মনে রাখছেন! তাও আবার সম্পুর্ণটা?

তানহা : জি।

অর্ণব : Oh shit! আমি একদম ভুলে গেছিলাম। ঘোরের মধ্যে আপনার নামটা পর্যন্ত দেখিনি।

তানহা : 😁😁

অর্ণব : দয়া করে এখন বলেন না প্লিজ।

তানহা : না বলবো না। সময় হলে বলবো।

অর্ণব : আপনার নাম মনে হয় তাসনিয়া তাই না? আপনার বান্ধবী সেদিন আপনাকেই ডাকতেছিলো। আর বিয়ে পড়ানোর সময়ও এরকমই কিছু একটা শুনছিলাম।

তানহা : সময় হলে জানতে পারবেন।

অর্ণব : ঠিক আছে আমিও বলবো না যে আমি কি করি।

তানহা : হাহাহা। ঠিক আছে কিন্তু তাও বলবো না আমার নাম। আর আপনি কি করেন তা জানার দরকারও নেই।

অর্ণব : হাহা। আচ্ছা আপনি কি এই বিয়েতে খুশি? না মানে মেয়েদের তো বিয়ে নিয়ে অনেক স্বপ্ন থাকে। আমাদের বিয়ে তো খুব সাদামাটাভাবে হয়ে গেলো তাই বলতেছি।

তানহা : বিয়ের দিন নিয়ে আমার কোন স্বপ্ন ছিলো না। আর প্রচলিত বিয়েতে পর্দার খেলাপ হয় বলে আমি বরং একটু এটা নিয়ে চিন্তায়ই ছিলাম বলতে পারেন। তাই সাদামাটাভাবে বিয়ে করাই আমার ইচ্ছা ছিলো। আর

হাদিসে এসেছে,

মাসনূন বিবাহ সাদা সিধে ও অনাড়ম্বর হবে, যা অপচয়, অপব্যয়, বেপর্দা ও বিজাতীয় সংস্কৃতি মুক্ত হবে এবং তাতে যৌতুকের শর্ত বা সামর্থের অধিক মহরানার শর্ত থাকবেনা।
-(তাবারানী আউসাত, হাদিস
নং- ৩৬১২)💕

কিন্তু যৌতুক না নেওয়ার জন্য আপনার বাবা কিছু বলবে না?

অর্ণব : আমার বাবা এধরণের হারাম কাজ কখনো করার চিন্তাও করবে না। এটা নিয়ে আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন। কেননা

কোন পক্ষ যেওরের শর্ত করা নিষেধ এবং ছেলের পক্ষ থেকে যৌতুক চাওয়া হারাম।
-(আহসানুল ফাতাওয়া ৫/১৩)💕

অন্য বর্ণনায় এসেছে,

“শর্ত আরোপ করে বর যাত্রীর নামে বরের সাথে অধিক সংখ্যাক লোকজন নিয়ে যাওয়া এবং কনের বাড়ীতে মেহমান হয়ে কনের পিতার উপর বোঝা সৃষ্টি করা আজকের সমাজের একটি জঘন্য কু-প্রথা, যা সম্পূর্ন রুপে পরিত্যাগ করা আবশ্যক।”
-(মুসনাদে আহমাদ:২০৭২২, বুখারী: ২৬৯৭)💕

আর আমার আব্বু তো আমাকে বিয়ের জন্য নানাভাবে চাপ দিচ্ছেন। তাই উনি বরং আরো খুশি হবেন। বুঝলেন?😉

(এই প্রথম আমরা একজন আরেকজনের দিকে তাকিয়ে কথা বলতেছি। আর তানহার চেহারাও খোলা। তানহা আগে আমার সাথে খুব সংযত হয়ে কথা বলতো। আর এখন সেই ভাবটা নেই বরং নরম ও মধুরতা মিশানো গলায় কথা বলতেছে।)

তানহা : হুম বুঝছি। জানেন আমাদের বিয়েটা উত্তম দিনে হয়েছে। কেননা,

হাদিসের আছে,

“শাউয়াল মাসে এবং জুমুয়ার দিনে মসজিদে বিবাহ সম্পাদন করা। উল্লেখ্য, সকল মাসের যে কোন দিন বিবাহ করা যায়িজ আছে।”
-(মুসলিম ১৪২৩, বায়হাকী ১৪৬৯৯)💕

এটা শাওয়াল মাস চলতেছে ও আমাদের বিয়ে রাত দুইটার দিক হয়েছে আর আজকে কিন্তু শুক্রবার।

অর্ণব : তাই নাকি? এটা আমি জানতাম না। আমার বউ তো অনেক ট্যালেন্টেড।

তানহা : দেখতে হবে না কার বউ😜

অর্ণব : হাহা। জানো বাসের কোন জানি একটা ঘটনার জন্য তোমাকে “ট্যালেন্টেড হ্যান্ডেল” বলছিলাম। তবে মনে করতে পারতেছি না।

তানহা : “হ্যান্ডেল” কি?

অর্ণব : আমি গালি দেই না বা কাউকে হেনস্থা করিনা। যখন রাগ উঠে তখন সামনের ব্যক্তিকে “হ্যান্ডেল” বলি। মূলত বোকা বুঝানোর জন্য।😁

তানহা : মজা পাইলাম😁

অর্ণব : আচ্ছা তোমার মোবাইলে বিকাশ আছে?

তানহা : হুম কেনো?

তারপর তানহার মোবাইলে আব্বুর দেওয়া বাকি টাকা আর আমার কাছে যা ছিলো শুধু যাওয়ার খরচটা বাদে পুরোটাই তানহাকে বিকাশ করে দিলাম।

অর্ণব : এটা তোমার দেনমোহর। আমার কাছে সম্পুর্ন টাকা এখন নেই। তাই যা আছে তাই দিলাম বাকিটা পরে দিবো।

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

“তোমরা নারীগণকে তাদের মোহরানা বা একটা নির্দিষ্ট উপহার দিবে। যদি তারা সন্তুষ্টচিত্তে মোহরানার কিছু অংশ ছেড়ে দেয়, তোমরা তা স্বাচ্ছন্দে ভোগ করবে।”
-[সূরা নিসা – ৪]💕

আর মোহরানা আদায় না করা পর্যন্ত পুরুষের জন্য তার স্ত্রী হারাম।

হাদিসে এসেছে,

“মহানবী (সা:) বলেছেন, যে কোনও ব্যক্তি কোন মহিলাকে কম- বেশী “ মোহরের “ বিনিময়ে বিবাহ করছে, মনে মনে তার হক আদায় দেয়ার নিয়ত রাখেনি, তাকে ধোঁকা দিয়েছে, অতঃপর তার হক আদায় না করেই মারা গিয়েছে, সে ব্যক্তি কেয়ামতের দিন ব্যাভিচারী বা যেনাকারী হয়ে আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে।”
-(ত্বাবারানী সঃ তারগীব ১৮০৭ )💕

তবে মেয়েরা অনুমতি দিলে তাকে ষ্পর্শ করা জায়েয আছে। আর মেয়েরা চাইলে দেনমোহর মাফ করে দিতে পারে, কিন্তু এটা ইসলামী আদর্শের পরিপন্থী কেননা এটা আদায় ফরয। আর আমি যেহেতু কিছুটা আদায় করেছি তাই ভবিষ্যতে দিবো বা এরকম কিছু পারস্পরিক পরামর্শ সাপেক্ষে তুমি অনুমতি দিলে ষ্পর্শ করতে পারবো। বুঝলা?

তানহা : জি আমি জানি। আর দেন মোহর আমার অধিকার। কিন্তু আপনাকে এতো টাকা দেনমোহর কে বলতে বলেছে? হুম? শরিয়ত অনুসারে মোহরের সর্ব নিম্ন পরিমাণ হচ্ছে আড়াই ভরি রুপার দাম। যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকা ।
যা দিছেন দিছেন বাকিটা….

আমি সাথে সাথে তানহার মুখ চাপে ধরলাম।
অর্ণব : Oh hello Mam! আর একটা কথাও বলবেন না। আমি পুরোটাই আদায় করবো।

হাদিসে আছে,

“সামর্থানুযায়ী মোহর ধার্য করা।”
-(আবু দাউদ: ২১০৬)💕

আর আমার সামর্থ অনুযায়ী মোহরানা ধার্য করছি। বুঝলেন?

তানহা নিজে হাতটা সরায় দিয়ে,
তানহা : হাহাহা। নাহ আমার বরের আত্মসম্মান আছে বলতে হবে। ঠিক আছে করিয়েন। যেখানে মোহরানা না আদায় করে ষ্পর্শ পর্যন্ত করা যায় না, সেখানে মানুষ প্রেম কিভাবে করে বুঝিনা।

অর্ণব : আল্লাহ হেদায়েত দিক সবাইকে। একটু কাছে আসো।

তানহা কোন প্রশ্ন না করে কাছে আসলো। আমি তানহার মাথা থেকে শাড়ির অংশটা সরাইলাম। তারপর কপালের উপরের চুল হাতে নিলাম।

তানহা : কি করতেছেন?

অর্ণব : দোয়া পড়তেছি। কেননা,

হাদিসে এসেছে,

বাসর রাতে স্ত্রীর কপালের উপরের চুল হাতে নিয়ে এই দোয়া পড়া,

اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ خَيْرَهَا وَخَيْرَ مَا جَبَلْتَهَا عَلَيْهِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّهَا وَمِنْ شَرِّ مَا جَبَلْتَهَا عَلَيْهِ.

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আস আলুকা খয়রাহা ওয়া খয়রা মা জাবালতুহা আলাইহি ওয়াওযুবিকা মিন শার্রিহা মিন শার্রিমা জাবালতাহা আলাইহি”
-(আবু দাউদ: ২১৬০)💕

তারপর তানহা আবার আগের জায়গায় চলে গেলো আর শাড়ি ঠিক করলো।

অর্ণব : এই তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়ো কালকে অনেক কাজ আছে।

তানহা : কেনো?

অর্ণব : বিয়ের পরবর্তী আক্বদের অনুষ্ঠান তো করা গেলো না। সুন্নতটাও পালন করতে পারলাম না।

হাদিসে এসেছে,

“বিবাহের খবর ব্যাপকভাবে প্রচার করে বিবাহ করা এবং বিবাহের পরে আকদ অনুষ্ঠানে উপস্থিত লোকদের মাঝে খেজুর বন্টন করা।”
-(বুখারী: ৫১৪৭)💕

কিন্তু ওলীমা বা বৌভাতের অনুষ্ঠান তো করতে হবে। কেননা

হাদিসে এসেছে,

“বাসর রাতের পর স্বীয় আত্মীয় স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, শুভাকাংখী এবং গরীব মিসকীনদের তাউফীক অনুযায়ী ওলীমা খাওয়ানোর আয়োজন করা।”
-(মুসলিম: ১৪২৭)💕

বুঝলেন?

তানহা : ওহ! ভুলেই গেছিলাম। আর শুনেন ওলিমাতে অবশ্যই গরীব মিসকিনদের খাওয়াবেন। কেননা,

#হাদিসে এসেছে,
“ওলীমায় অতিরিক্ত ব্যয় করা কিংবা খুব উচু মানের খানার ব্যবস্থা করা জরুরী নয়। বরং সামর্থানুযায়ী খরচ করাই সুন্নত আদায়ের জন্য যথেষ্ট। যে ওলীমায় শুধু ধনী ও দুনিয়াদার লোকদের দাওয়াত দেওয়া হয়, দ্বীনদার ও গরীব গরীব-মিসকিনদের দাওয়াত দেওয়া হয়না, সে ওলীমাকে হাদিসে নিকৃষ্টতম ওলীমা বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। সুতরাং এ ধরনের ওলীমা আয়োজন থেকে বিরত থাকা উচিত।”
-(আবু দাউদ: ৩৭৫৪)💕

বুঝলেন?

অর্ণব : জি ম্যাডাম। এখন চলেন ঘুমাতে যাই। আপনি অনেক ক্লান্ত, একটা কাজ করি মাঝখানে বালিশ দিয়ে রাখি তাহলে কারো সমস্যা হবে না।

যদিও মাঝে বালিশের দরকার ছিলো না। এখন আমার অনেকটাই জড়তা কাটে গেছে। তাও বললাম,
তানহা : ধন্যবাদ আমার মনের কথা বুঝার জন্য।

(আমি ছাড়া তোমায় কে বুঝবে বলো। আমি তো তোমার সুখ-দুঃখের ভাগিদার হতে চাই।)
অর্ণব : হাহা।

তারপর আমি মাঝে দুইটা বালিশ দিয়ে দিলাম। তানহা ওপাশে শুলো আমি এপাশে।

তানহা : আমি আপনাকে বিশ্বাস করে শুয়ে পড়লাম, কাছে আসলে কিন্তু খারাপ হবে।

অর্ণব : কেনো? আমি আমার বউয়ের কাছে যাইতেই পারি!

তানহা : এজন্যই পাশে ঘুমাচ্ছি। অন্য কেউ হলে ঘরেও ঢুকতে দিতাম না😊

অর্ণব : হাহা। ঘুমান। চিন্তা করিয়েন না। লাইটা অফ করলে সমস্যা আছে?

(জানি আপনি কিছু করবেন না।)
তানহা : না, অফ করে দেন আমারো লাইট থাকলে ঘুম আসে না।

লাইট অফ করে শুয়ে পড়লাম।

অনেক্ষণ পার হয়ে গেলো কিন্তু আমার ঘুম আসতেছে না। তানহা মনে হয় ঘুমাচ্ছে। তাই ফেসবুকে ঢুকলাম।

কিছুক্ষণ পর,
তানহা : ঘুমাবেন না?

অর্ণব : আমার ঘুম আসতেছে না। আপনি ঘুমান নি?

তানহা : আমারও ঘুম আসতেছে না।

অর্ণব : চলেন বেলকনিতে যায়ে গল্প করি।

তানহা : চলেন।

তারপর আমরা দুজনে বেলকনিতে গেলাম।

বেলকনিতে টবে করে নানা ধরনের গাছ সুন্দরভাবে সাজানো আছে। গ্রিলের ভিতর দিয়ে চাঁদটা খুব সুন্দর লাগতেছে। আমরা পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছি। হালকা বাতাস হচ্ছিলো। তানহা চুল খোলা রাখছে। এই প্রথম আমি তানহার চুল দেখলাম। মেয়েদের চুল এতো সুন্দর হয় জানতাম না। চুল খোলা রাখা অবস্থায় তানহাকে আরো বেশি সুন্দর দেখাচ্ছে। আর শাড়িতে তো তানহাকে দারুণ লাগতেছে। এক জায়গায় পড়ছিলাম যে, শাড়ি আর নারী নাকি Awesome combination… আজকে স্বচক্ষে দেখতেছি। চুল ছেড়ে দেওয়া আর সাথে শাড়ি, তানহাকে যে কত সুন্দর লাগতেছে তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। হালকা বাতাসে চুলগুলা উড়তেছিলো আর তানহার গালে আসে পড়তেছিলো। আমার মনে হচ্ছে সামনে এক অপ্সরা দাঁড়িয়ে আছে। আমি এক দৃষ্টিতে তানহার দিকে তাকিয়ে আছি।

তানহার কথায় আমার ঘোর ভাঙ্গলো,
তানহা : কি দেখতেছেন?

অর্ণব : প্রথম কোন মেয়ের দিকে নজর দিলাম আর প্রথম কারো উপর ক্রাশ খাইলাম। তাকেই দেখতেছিলাম।

তানহা : ক্রাশ খাওয়া হারাম😜

অর্ণব : কিন্তু আমারটা হালাল😜

এভাবেই আমরা গল্প-গুজবের মাধ্যমে সারা রাত কাটায় দিলাম।

সকালে খাওয়া দাওয়া করে চাচার পরিবারের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আমরা বাস স্ট্যান্ড এর জন্য রওনা হলাম। খুব ইচ্ছা করতেছিলো ওর হাতটা ধরে হাঁটতে কিন্তু এখন দিনের বেলা। তাই চেষ্টাও করিনি।

অর্ণব : আমার এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না আমাদের বিয়ে হয়ে গেলো।

তানহা : হাহা আমারো।

অর্ণব : আজকে আব্বু-আম্মু অবাক হয়ে যাবে। ওদের জন্য অনেক বড় সারপ্রাইজ অপেক্ষা করতেছে।

তানহা : জি না আজকে না।

অর্ণব : আজকে না মানে?

তানহা : এখন আমি রাজশাহী যাবো আর আপনি দিনাজপুর যাবেন।

অর্ণব : হাহ? আজকে আমাদের “বউভাত”। আর বউভাতের দাওয়াতে বউই গায়েব। এটা কেমন কথা। শুধু ভাতের দাওয়াত দিবো?

তানহা : হাহাহা। বউভাতে আমাকে উপস্থিত থাকতে হবে এরকম কথা নাই। আপনি করে নিয়েন।

অর্ণব : তাহলে নাম্বারটা দেন।

তানহা : একদম না। দুই মাস পর দিনাজপুরে আবার পরিক্ষা দিতে আসবো তখন আপনার সাথে দেখা হবে। আর এই নাম্বারটা বন্ধ রাখবো। কারণ আপনার বন্ধুর কাছে নাম্বার থাকতেও পারে।
(আমি চাই না আমার নিজস্ব একটা পরিচয় না হওয়া পর্যন্ত তোমার বাড়িতে যাইতে। জানি তোমার কষ্ট হচ্ছে, আমারো হচ্ছে কিন্তু এটা আমাকে করতেই হবে। কেননা তোমার পরিবারকে তো আমি চিনিনা। কোন কিছু হয়ে গেলে আমার একটা অবলম্বন দরকার। সেই অবলম্বনটা তৈরী করার পারমিশন তোমার পরিবার আমাকে না দিতেও পারে। তাই আমি বাধ্য!)

অর্ণব : আপনার দেখছি বুদ্ধি আছে। আচ্ছা ঠিক আছে।
(আসলে রাজশাহীতে উনি বড় হয়েছেন। এতিম হলেও অনেক আপনজন এতোদিনে তৈরী হয়ে গেছে। তাদের থেকে বিদায় নেওয়া প্রয়োজন। আর বিষয়টা এতটা সোজা না। এতদিনের সম্পর্ককে রাখে নতুন শহরে নতুনভাবে সব কিছু তৈরী করা এটা একটা কঠিন কাজ। দুই মাস সময় তাই দেওয়াই যায়। ততদিনে তানহাও অনেকটা ধাতস্থ হবে আর এর মধ্যে সবকিছুর জন্য নিজেকে তৈরীও করবে। তাই মানা করলাম না।)

তানহা : ধন্যবাদ পারমিশন দেওয়ার জন্য। ইনশাল্লাহ দুই মাস পর দেখা হবে।

[এজন্যই আমি দুই মাস অপেক্ষা করতেছিলাম]

তারপর তানহাকে রাজশাহীর বাসে উঠায় দিয়ে আমি বাসে দিনাজপুর আসলাম।

এভাবে আমার আর তানহার বিয়ে হয়েছিলো এবং তানহা আর আমি আলাদা হয়ে গেছিলাম।

এখন বর্তমানে,

অর্ণব : এই ছিলো ঘটনা। বুঝলি।

ওরা সবাই অবাক হয়ে তাকায় আছে।

(চলবে….)

মূল গল্পের লেখক – নাহাজুল ইসলাম লাইফ❣

গল্পটির মূল নাম – “English Teacher যখন বউ”💝

[আগের পর্বগুলো Timeline এই দেওয়া আছে]🍁

💚ইমাম মাহদীর সন্ধানে💞


Comments

One response to “অপেক্ষাটা অব্যক্ত ভালোবাসার”💖Part : 29”

  1. […] 24 Chapter 25 Chapter 26 Chapter 27 Chapter 28 Chapter 29 Chapter 30 Chapter 31 Chapter 32 Chapter 33 […]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *