উত্তম স্ত্রী হলো তারা, যারা স্বামীকে যথাযথ সম্মান করে কারণ পরস্পরের প্রতি যথাযথ সম্মানই দুনিয়া ও পরকালের সফলতা লাভের উপায়।
অতঃপর স্বামীর ধন-সম্পদ সংরক্ষণ করার পাশাপাশি নিজেদের সতীত্ব রক্ষায় সতর্ক থাকে। স্বামীর উপস্থিত কিংবা অনুপস্থিতিতে এ দুটি কাজ স্ত্রীর প্রধান কর্তব্য
১.আব্দুল্লাহ্ বিন্ আবূ আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
‘‘আমি যদি কাউকে আল্লাহ্ তা‘আলা ছাড়া অন্য কারোর জন্য সিজ্দাহ্ করতে আদেশ করতাম তা হলে মহিলাকে তাঁর স্বামীর জন্য সিজ্দাহ্ করতে আদেশ করতাম। (ইব্নু মাজাহ্ ১৮৮০; আহমাদ ৪/৩৮১ ইব্নু হিববান/ইহ্সান, হাদীস ৪১৫৯ বায়হাক্বী ৭/২৯২)
*আমার মনে হয় এর থেকে গুরুত্বপূর্ণ হাদীস আর হয়না একজন স্ত্রীর জন্য । এই একটি হাদিস ই যথেষ্ট স্বামীর মর্যদা বুঝার জন্য। একটি বারের জন্য চিন্তা করে দেখুন, রাসুলুল্লাহ সা: নিজে বলেছেন যদি আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে সিজদাহ করা যেতো তাহলে স্বামী দের সেজদা করার আদেশ দিতেন।
২.একদা জনৈকা সাহাবী মহিলা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট তার স্বামীর কথা উল্লেখ করলে তিনি তাকে বলেন:
‘‘ভেবে দেখো তার সাথে তুমি কি ধরনের আচরণ করছো! কারণ, সেই তো তোমার জান্নাত এবং সেই তো তোমার জাহান্নাম’’।
(আহমাদ ৪/৩৪১ নাসায়ী/’ইশ্রাতুন্ নিসা’, হাদীস ৭৬, ৭৭, ৭৮, ৭৯, ৮০, ৮১, ৮২, ৮৩ ইব্নু আবী শাইবাহ্ ৪/৩০৪; হা’কিম ২/১৮৯ বায়হাক্বী ৭/২৯১)
• এই হাদিস থেকে আমরা বুঝতে পারলাম যে স্বামীর সঙ্গে স্ত্রী যে ধরনের ব্যবহার করছে ঐ ব্যবহারের উপর নির্ভর করবে জান্নাত ও জাহান্নাম।
৩.আব্দুল্লাহ্ বিন্ ’উমর (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
‘‘আল্লাহ্ তা‘আলা এমন মহিলার দিকে (সন্তুষ্টির দৃষ্টিতে) তাকান না যে নিজ স্বামীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না; অথচ সে তার স্বামীর প্রতি সর্বদাই মুখাপেক্ষিণী’’। (নাসায়ী/’ইশ্রাতুন্ নিসা’, হাদীস ২৪৯, ২৫০; হা’কিম ২/১৯০ বায়হাক্বী ৭/২৯৪ খতীব ৯/৪৪৮)
• যে স্ত্রী স্বামীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না, ঐ মহিলার দিকে আল্লাহ তাকান না। একজন মুসলিমের কাছে এর থেকে ভয়ংকর আর কি হতে পারে??
৪.মু‘আয বিন্ জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
‘‘কোন মহিলা তার স্বামীকে দুনিয়াতে কষ্ট দিলে তার জান্নাতী অপরূপা সুন্দরী স্ত্রীরা বলে: তাকে কষ্ট দিও না। আল্লাহ্ তোমাকে ধ্বংস করুক! কারণ, সে তো তোমার কাছে কিছু দিনের জন্য। বেশি দেরি নয় যে, সে তোমাকে ছেড়ে আমাদের কাছে চলে আসবে’’। (ইব্নু মাজাহ্ ২০৪৪)
৫.’ইমরান বিন্ ’হুস্বাইন (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
‘‘আমি জান্নাতে উঁকি মেরে দেখতে পেলাম, জান্নাতীদের অধিকাংশই গরীব শ্রেণীর এবং জাহান্নামে উঁকি মেরে দেখতে পেলাম, জাহান্নামীদের অধিকাংশই মহিলা’’। (বুখারী ৩২৪১; মুসলিম ২৭৩৮)
৬.আবূ সা’ঈদ্ খুদ্রী (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: একদা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহিলাদেরকে উদ্দেশ্য করে বলেন:
‘‘হে মহিলারা! তোমরা (বেশি বেশি) সাদাকা করো। কারণ, আমি তোমাদেরকেই জাহান্নামের অধিকাংশ অধিবাসী রূপে দেখেছি। মহিলারা বললো: কেন হে আল্লাহ্’র রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: তোমরা বেশি লা’নত করে থাকো এবং স্বামীর কৃতজ্ঞতা আদায় করো না’’। (বুখারী ৩০৪; মুসলিম ৮০)
• মেয়েদের জাহান্নামে যাওয়ার প্রধান দুটি কারণ হলো
১. মেয়েরা বেশি বেশি লানত করে।
২. স্বামীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না।
৭.সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ স্বামীর নিকট হতে যেসব নারী কোন বিবেচনাযোগ্য কারণ ছাড়াই তালাক চায় তার জন্য জান্নাতের সুগন্ধও হারাম।
সহীহ্, ইবনু মাজাহ- (২০৫৫)(জামে’ আত-তিরমিজি, হাদিস নং ১১৮৭)
• আপনার যদি ভালো করে লক্ষ্য করেন তাহলে দেখতে পাবেন , আমাদের চারপাশে এমন অনেক লোক রয়েছে যারা কোন কারণ ছাড়াই তালাক চায়, এরা তো জান্নাতে যাবেই না এমন কি জান্নাতের সুগন্ধি ও পাবে না।
৮. একটি সুন্দর এবং মেয়েদের জন্য খুশির সংবাদ দিয়ে এই বিষয় শেষ করছি।
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করেন, ‘যে নারী-
*পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়বে;
*রমজানের রোজা রাখবে;
*স্বীয় গুপ্তস্থানের হেফাজত করবে ( পর্দা রক্ষা করে এবং ব্যভিচার থেকে বিরত থেকে);
*স্বামীর আনুগত্য করবে।
এমন নারীদের জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেয়া হবে। যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে। (তিরমিজি ও তাবরানি)
এখানে আরো একটি কথা বলে রাখি স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর জান্নাত , এরকম কোন হাদীস অথবা কোরআনের আয়াত নেই। এই এই সব বানোয়াট মিথ্যা কথা থেকে বিরত থাকা আমাদের জন্য উত্তম।
Leave a Reply