নিল প্রজাপতি পর্ব:০৫

নিল প্রজাপতি

পর্ব:০৫

লেখক : হাছাব বিন আহমেদ!

রাতে আমি মিষ্টি কে ফোন করলাম –

মিষ্টি – আসসালামু আলাইকুম

আমি – ওয়ালাইকুম আসসালাম।

মিষ্টি – কি করেন?

আমি – এই তো আছি এমনি। আপনি?

মিষ্টি- পড়তে বসলাম।

আমি – আচ্ছা তাহলে আমাদের পরশু দিনের প্লানটার কি হলো?

মিষ্টি: কোন প্লান?

আমি: কোন প্লান মানে? আপনাকে তো কালকে বললাম। আমরা গুয়াহাটি ঘুরতে যাবো?

মিষ্টি: ওও। জি ইনশাল্লাহ। বাসা থেকে অনুমতি নিয়েছি।

আমি: আচ্ছা ঠিক আছে, তাহলে আমি আপনাকে পরশু সকালে আপনাদের বাসা থেকে তুলে নিয়ে যাবো।

মিষ্টি: ইনশাল্লাহ, আচ্ছা রাখি একটু পড়তে হবে।

আমি: আচ্ছা। কি আর করার!!

*****

আজকে আমরা ঘুরতে যাচ্ছি,

সকালে মিষ্টি কে ওদের বাসা থেকে নিয়ে দুজনে কিছু মনের মতো সময় কাটতে ঝাচ্ছি, এই ঘুরতে যাওয়া কে আমাদের হানিমুন বল্লেও ভুল হবে না হয়তো!

মিষ্টি: কি হলো দাঁড়ালেন কেন??

আমি: সামনে কি দেখছো, রেস্টুরেন্ট চলো!

মিষ্টি: এখন রেস্টুরেন্টে জাবো কেন??

আমি: আরে চলেন তো, আমার খিদে পেয়েছে!

(তাঁর পর দুজনে কিছু খেয়ে আমাদের যাত্রা শুরু করলাম!)

প্রায় তিন ঘন্টা জার্নি করার পর আমাদের গন্তব্যে পৌঁছে গিয়ে, প্রথমে একটা হোটেল বুক করলাম!

আমি: মিষ্টি আপনি একটু বসেন আমি একটু ফ্রেশ হয়ে আসি!

       এই বলে বাথরুমে চলে গেলাম, বাথরুমে গিয়ে শয়তানি চিন্তা মাথায় আসলো! তাই ভাবলাম মিষ্টি র সাথে একটু দুষ্টুমি করি!

আমি: ওগো প্রিয়তমা আমার ব্যাগ থেকে টায়াল টা দেন তো!

মিষ্টি: কিভাবে দিবো?

আমি: এখানে নিয়ে আসো

মিষ্টি: আমি পারবো না, আপনি দরজা খুলে হাত বের করে দেন, আমি আপনার হাতে দিয়ে দিচ্ছি!

আমি: আচ্ছা ঠিক আছে!

( হুমায়রা যখনি দরজার সামনে এসে টাওয়াল টা এগিয়ে দিয়েছে, ওর হাতটা ধরে একটা নে ভিতরে নিয়ে আসলাম! আমি মিষ্টি কে আরো কাছে টেনে নিলাম! উপরে সাওয়ার থেকে পানি পড়ছে আমাদের উপর!! কাক ভিজে হয়ে মূর্তির মত দাঁড়িয়ে আছি!! আমি মিষ্টি কে এমন ভাবে জরিয়ে ধরেছি যেন আমাদের কে দেখে মনে হচ্ছে সাওয়ারের পানিও আমাদের মাঝে দিয়ে যেতে পারবে না! আমার ঠোট মিষ্টির ঠোঁট কে ছুঁইয়ে দিতে যাবে ঠিক তখনি মিষ্টি আমাকে ছেড়ে দিয়ে সরে গেল! আমিও লজ্জা পেয়ে গেলাম!! তাই কোন মতে গোসল করে চলে এলাম! আর মিষ্টি দরজা আটকিয়ে দিলো।

কিছু সময় পর মিষ্টি বাথরুম থেকে বেরিয়ে এলো! আমি তো মিষ্টি কে দেখে ভাষা হারিয়ে ফেলেছি,আসলেই মেয়ে মানুষ গোসল করার পর তাদের সৌন্দর্য যেন আরও বৃদ্ধি পায়! আমি মিষ্টির দিকে এক পলক তাকিয়েই আছি!)

মিষ্টি: ঐ ভাবে তাকিয়ে আছেন কেন? আমার লজ্জা করে না বুঝেই?? 

আমি: আমি তো বুঝতেই পারি না আমি কি করছি,, আপনাকে দেখলে আমি এরকম হয়ে তাই যেন পানি ছাড়া মাছ!

মিষ্টি কিছু বললো না,সুধু একটু হাসলো!!

কিছু সময় পর দেখি মিষ্টি সোফায় বসে আছে!! আমি ওর কাছে গিয়ে কার্পেটে বসে বল্লম – কি ভাবছেন?

মিষ্টি – না তেমন কিছু না!! আচ্ছা গুয়াহাটি তো আমাদের অনেক পরিচিত বাসা আছে! তাহলে এতো দামি হোটেলে না থেকে তো কারো বাসায় ও থাকতে পারতাম!!

আমি: না দরকার নেই, বুঝতে তো পারছো শহরের বাসা অনেকেই মেহমান বাসায় যাওয়াকে পছন্দ করে না, ঝামেলা মনে করে!! আর তাছাড়া কারো বাসায় গেলে আমি আমার নিল প্রজাপতির সঙ্গে একান্ত সময় কাটাতে পারবো কি?

মিষ্টি: মানে ? নিল প্রজাপতি টা আবার কে ?? 

আমি: কেন আপনি??

মিষ্টি: যান আপনি না অনেক দুষ্ট!!!

আমি: হুম এখন তো আমি দুষ্ট হবোই!

মিষ্টি: আচ্ছা এখন তাহলে আমরা কোথায় যাবো?

আমি: আজকে যি কোনো এক যায়গায় যেতে পারবো! সাইন্স মিউজিয়াম অথবা কলা ক্ষেত্র! এখন আপনি বলেন কোথায় যাবেন??

মিষ্টি: সাইন্স মিউজিয়ামেই যাই চলুন??

আমি: ওকে!!

বেড়াতে বের হচ্ছি৷ বের হওয়ার মুহূর্তে দেখি বউ তার জুতোর ফিতা বাঁধতে ভুলে গেছে৷ আমি নিচু হয়ে জুতোর ফিতা বাঁধতে লেগে গেলাম। বাঁধা শেষ করে দেখি বউ ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠেছে!

.

আমি: কাঁদছেন কেন?

মিষ্টি: নাহ কিছু না, এমনিতেই কাঁদছি!

আমি: শোনেন, আপনার প্রতি আমার অনেক দায়-দায়িত্ব। আমার কাছে আপনার অনেক ‘পাওনা’ বাকি৷ তার সামান্য কিছু আদায় করলে কাঁদার কী আছে?

আমার কথা শুনে মিষ্টি আরো বেশি ফুঁপিয়ে উঠল!

তারপর মিষ্টি কে শান্ত করে বেরিয়ে পরলাম সায়েন্স মিউজিয়াম দেখার জন্য 

আজ পুরো দিন মিষ্টিকে নিয়ে অনেক ঘুরাঘুরি করলাম একটা ভালো লাগার মত স্মৃতির দিন ছিল! হোটেলে আসার সময় একেবারে রাতের খাবার খেয়ে আসলাম! 

মিষ্টি: শুনেছেন আপনি একটু বাইরে যান !! আমি কাপড় চেঞ্জ করবো!!

আমি: তো বাইরে যাবো কেন??

মিষ্টি: তো আমি কি একজন পুরুষের সামনে কাপড় চেঞ্জ করবো?

আমি: আরে আমি আপনার স্বমী, আমার সামনে চেঞ্জ করলে কি সমস্যা? আমি বাইরে যাবো না!

মিষ্টি: প্লিজ যান!!

আমি: আপনি আমাকে জান বললেন?

মিষ্টি: আরে আপনাকে বাইরে যেতে বলেছি ,জান বলি নাই!!

আমি: আমি তো বল্লাম যাবো না!!

মিষ্টি: প্লিজ প্লিজ🫠🫠

আমি: আচ্ছা ঠিক আছে, আমি তাহলে বারান্দায় যাই!

মিষ্টি: আচ্ছা ঠিক আছে, কিন্তু খবর দার আমার দিকে তাকাবেন না কিন্তু!!

আমি: ওকে তাকাবো না!

অল্প সময় পর

মিষ্টি: এই যে শুনছেন 

আমি:কি হয়েছে, হয়ে গেছে?

মিষ্টি: না, একটু হেল্প করেন তো, আমার ব্লাউজের পিছনের হুক টা খুলে দেন না প্লিজ, 

আমি: আমি!!

মিষ্টি: তো এখানে অন্য কেউ কি আছে আপনাকেই বলছি,, কিন্তু চোখ বন্ধ করে!!

আমি: মানে? চোখ বন্ধ করে কিভাবে সম্ভব আমি পারবো না!!

মিষ্টি: আপনাকে পারতেই হবে!!

আমি: ও আল্লাহ আরো যে কত কি দেখতে হবে!!

মিষ্টি: কত কি দেখতে হবে মানে, আমি তো এখনো কিছু খুলি নাই আপনি কি দেখলেন??

আমি: আরে ওটা কথার কথা

মিষ্টি: আচ্ছা ঠিক আছে, আপনি আগে হুক টা খুলুন,হুক খুলে আবার উল্টোদিকে ঘুরে তাকাবেন ঠিক আছে!!

আমি:আচ্ছা ঠিক আছে!!

কিছু সময় পর

মিষ্টি: হয়ে গেছে এবার তাকাতে পারেন!!

আমি চেয়ে দেখি মিষ্টি আকাশী রঙের শাড়ি পড়েছে অনেক সুন্দর দেখাচ্ছে তাই চেয়ে আছি আচ্ছা!!

মিষ্টি: এভাবে চেয়ে আছেন কেন আগে কি মেয়ে মানুষ দেখেন নাই??

বলেই মিষ্টি সোফায় গিয়ে বসলো!! আমিও গিয়ে মিষ্টির পাশে বসলাম!

মিষ্টি: আচ্ছা আপনি একটা কথা লক্ষ্য করেছেন শহরের মেয়েরা কত ছোট ছোট কাপড় পড়ে ঘুরে বেড়ায়। কিভাবে মানুষের সামনে দিয়ে এভাবে চলাচল করে……

আমি: ওটা ওদের স্বাধীনতা কি আর করা যাবে??

মিষ্টি: নগ্নতা ছিল আল্লাহর পক্ষ থেকে একটা আজাব,, আর তারা এখন এটাকে স্বাধীনতা বলে!! আজব দুনিয়া

আমি: হুম, আমি একবার একজনকে বলেছিলাম যে “” যে আপনি এত ছোট কাপড় পড়েন কেন!! সে উত্তরে বলেছিল আমার কাপড় ছোট না আপনার মন ছোট””

মিষ্টি: আমার কাপড় ছোট না- আপনার মন ছোট!!

        এই মন্তব্যটি একদিন মেয়েদের উলঙ্গ করে ছেড়ে দিবে!!

আর এখনকার মেয়েরা কেন যে বুঝতে চায় না পোশাক খুললেই যদি স্মার্ট হওয়া যায় তাহলে সবথেকে বেশি স্মার্ট আমাজন জঙ্গলের আদিবাসীরা!!

আমি: এরা কেন যে বুঝতে চায় না “অভদ্রতার নাম স্বাধীনতা নয়”

সালাউদ্দিন আইয়ুবী (রহ:) র একটি কথা মনে পড়ে গেল তিনি বলেছিলেন “”কোন জাতিকে যদি যুদ্ধ ছাড়াই ধ্বংস করতে চাও তাহলে তাদের তরুণদের মধ্য অশ্লীলতা ছড়িয়ে দাও””

মিষ্টি: কিছু দিন আগে আমি একটা ফতুয়া পরলাম 

A woman who says that

Hijab is not compulsory

He Is a disbelievers.

Sheiqh ibn baz : fatwa : 8487.

চলবে…………


Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *