গল্প-স্মৃতিময় রাত দিন
Writer:-Hassab bin Ahmed.
আমার নাম সাজিদ, আজ আমার বাসর রাত, হঠাৎ করেই বিয়েটা হয়ে গেলো, আমি নিজেই আম্মুকে বিয়ের কথা বলেছিলাম কিছু দিন আগে , আপনি হয়তো ভাবছেন আমার লজ্জা নাই নিজের বিয়ের কথা নিজেই বলেছিলাম , কি করব বলেন ,!! আপনি যে চিন্তা ভাবনার মানুষ হন না কেন , একটি কথা আপনাকে মানতেই হবে , একজন প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে, মেয়ে তার বিপরীত লিঙ্গের সঙ্গে সময় কাটাতে ভালোবাসে, সে চায় তার মনের কথা গুলো গার্লফ্রেন্ড, বয়ফ্রেন্ড অথবা স্বামী স্ত্রীকে বলুক । কারণ আল্লাহ আমাদের এই চাহিদা দিয়েই সৃষ্টি করেছে , আপনি যদি ২০ বছরের উপরে ১০০ জন ছেলে মেয়েকে তাদের প্রেম ভালোবাসা নিয়ে জানতে চান তাহলে দেখবেন প্রায় ৯০% ছেলে মেয়ে প্রেম করে অথবা বিয়ে করেছে। এখন আমি যিহেতু ইসলাম মেনে চলার চেষ্টা করি তো আমি প্রেম করতে পারবো না কারণ বিয়ের আগে প্রেম করা হারাম । তাহলে আমার কাছে দুইটা অপশন থাকে প্রথমত -ঐ বাকি ১০% এর মধ্যে থাকতে হবে নয়তো বিয়ে করতে হবে । এখন সত্যি বলতে আমি আর ঐ ১০% এর ভিতর থাকতে পারছিলাম না , তাই লজ্জাকে জয় করে বাসায় বিয়ের কথা বলেই ফেললাম । আর সেই মতেই আজ আমার বিয়েটা হয়েই গোল , কিন্তু এতো তাড়াতাড়ি হবে তা কখনো কল্পনাও করতে পারি নি , এই দেখুন আমার প্রিয়তমা বউ টা আমার জন্য সেই কখন অপেক্ষা করছে আর আমি আপনাদের সঙ্গে এত গুলো কথা বলেই যাচ্ছি, থাকেন যাই , ….
আমি সালাম দিয়ে ঘরে ঢুকলাম, বউ আমার বিসনা থেকে নেমে এসে আমার পা ধরে সালাম করলো,
» এই কি করেন , উঠেন!! (আমি)
বউ উঠে আবার বিছানায় বসলো , আমি বললাম ” দেখুন আসলে পা ছুঁয়ে সালাম করা উচিৎ নয় আমরা শুধু আল্লাহর সামনে মাথা নত করবো আর কারো সামনে নয় , আমার বউ টা শুধু মাথা নিচু করে সন্মতি দিলো , কিছু বললো না, আমিও খাটের একপাশে বসলাম , কিছু সময় নিরবতা কারো মুখে কোন কথা নেই , আমি অনেক নার্ভাস , এতো ঠান্ডার মাঝেও কপাল ঘেমে যাচ্ছে । নিরবতা ভেঙ্গে আমি জিজ্ঞেস করলাম
» আ আপনার নামটি যেনো কী ??
» আপনি আমার নাম না’ জেনেই বিয়ে করলেন !!( কোমল কন্ঠে)
» না মানে আমি জানি। আপনার নাম তো “হুমাইরা বিনতে আনিছ ” আসলে কি দিয়ে কথা বলা শুরু করবো বুঝতে পারছি না । আচ্ছা এখন কিরকম লাগছে?
» জি আলহামদুলিল্লাহ ভালোই লেগেছে !!! (হুমায়রা)
» – “নাহ, ভালো তো লাগার কথা না। আমার নিজের মাথাটাই তো বেশ ব্যথা করছে। সেখানে আপনি মেয়ে হয়ে এতটা পথ জার্নি করছেন, কী কান্নাটাই না কানলেন , আর সম্পূর্ণ নতুন একটা পরিবেশে, অচেনা কিছু মানুষ, অস্বস্তি লাগবেই।” (আমি)
» “তেমন কিছু না, তবে মাথাটা একটু ঝিম ঝিম করছে।” কিছুটা নরম গলায় আমতা আমতা করে বললো। ( হুমায়রা)
» “আমি জানতাম, এজন্যই মাথাব্যথার টেবলেট ও মলম কিনে আনলাম।”(আমি)
তারপর দুজনে ঔষধ খেয়ে নিলাম ,
» আমার মনে হয় এখন দুই রাকাত নামাজ আদায় করা উচিৎ !! ( আমি)
» জি আমার ইশার নামাজ আদায় করা হয়নি !! ( হুমাইরা)
দুজনে নামাজ আদায় করে আমি খাটে গিয়ে বসলাম , হুমায়রা একগ্লাস দুধ আর কিছু খেজুর এনে দিলো ,
» খেয়ে নিন !(হুমায়রা)
» হুম , সত্যি বলতে অল্প খিদেই লাগছিল , আসলে আপনাদের বাসায় লজ্জায় কিছু খেতেই পারি নি !! কিন্তু দুধের গ্লাস তো একটি , আপনি দুধ খান আমি খেজুর খাই খিদে মনে হয় আপনারো পেয়েছে। ( আমি)
» আরে না আপনি খান আমি খাবো না! (হুমায়রা)
» না না আপনাকে রেখে কীভাবেখাবো !! দুজনে ভাগ করে খাই , আপনি আগে খান !! ( আমি)
» না না আপনি আগে খান আমি পড়ে খাই ( হুমাইরা)
» আচ্ছা ঠিক আছে! (আমি)
দুজনেই খাটের সঙ্গে হেলান দিয়ে বসে আছি । তাই আমি কথা বলা শুরু করলাম ।
» জানেন বেশির ভাগ সম্পর্কৈ কিন্তু ভালোবাসার অভাবে নয় দুজন দুজনের ভালোবাসা অনুভব না করার কারণে ভেঙে যায়। দুজন মানুষের সম্পর্ক কখনোই একি রকম থেকে না। দিন দিন হয় খারাপ হতে থাকে আর না হয় ভালো হতে থাকে। যদি কোনো মানুষের পৃথিবীর সব কিছু থাকে সুধু তার প্রিয়জনদের ভালোবাসা টুকু নাথাকে তাহলে সে এই পৃথিবীর দুখি মানুষ দের একজন। এমন অনেক স্বামী স্ত্রী আছে যারা বিয়ের পর 20,25 বছর সুধু room mate এর মতো একে অপরের সাথে জীবন কাটিয়ে দেয়।
আমি এতো গুলো বছর অপেক্ষা করেছি আপনার জন্য , শুধু আপনাকে ভালোবাসবো বলে , যখন থেকে শুনেছি বিয়ের আগে প্রেম করা হারাম তখন থেকেই শুধু ভাবতাম আমি আমার বউ এর সঙ্গে প্রেম করবো , তাই আমি দুখি মানুষ হোতে চাই না । (আমি)
» আমি সবসময় আপনাকে হাসি খুশি রাখার চেষ্টা করবো । ( নরম সুরে)
» আচ্ছা আমরা কি ভালো বন্ধু হতে পারি ??( আমি)
» হুম হতে পারি কিন্তু আমাদের সম্পর্ক বন্ধুতের থেকে অনেক উপরে , আমি আপনাকে ভালোবাসি ও সন্মান করি , কিন্তু বন্ধুদের সাধারণত ভালোবাসি কিন্তু সন্মান করি না । আমরা একে অপরকে ভালোবাসব ও সন্মান করবো । অনেকেই মনে করে ভালোবাসা ও সন্মান করা এক কিন্তু দুটো ভিন্ন বিষয় । আমরা কিছু মানুষ দের সন্মান করি কিন্তু ভালোবাসি না । আবার কিছু লোক কে ভালোবাসি কিন্তু সন্মান করি না। তাই আমি আপনাকে ভালোবাসি ও সন্মান করি, আমি এমন কোন কাজ করবো না যাতে আপনার সন্মান কমে যায়। (হুমায়রা)
এতো সুন্দর করে কথা গুলো বললো শুধু শুনতেই মনে চাচ্ছে , কেন যে কথা বলা বন্ধ করলো ।
» আপনার কন্ঠ অনেক সুন্দর , মনে হয় শুধু আপনার কন্ঠ শুনেই জীবন কাটিয়ে দেই । (আমি)
হুমাইরা লজ্জা পেয়েছে মনে হয়।
» আচ্ছা এখনো কি আপনি করেই বলবেন? ( হুমাইরা)
» আপনিও তো আপনি করেই বলছেন ?(আমি)
» আমার কথা আলাদা আপনি তুমি করেই বলেন ।(হুমায়রা)
» আপনি যদি তুমি করে বলেন অমিও তুমি করেই বলবো ,আর যদি আপনি না বলেন তাহলে আমিও বলবো না । (আমি)
» আচ্ছা ঠিক আছে চেষ্টা করবো । ( হুমাইরা)
» আচ্ছা আকটি প্রশ্ন করি? (আমি)
» হুম , অনুমতি নেয়ার কি আছে ,(হুমায়রা)
» আসলে আপনি যখন ইশার নামাজ পড়লেন , তখন সালাম ফিরানোর পর মোনাজাত করলেন না কেন ?(আমি)
» ওওও , আমি মনে করি, হজরত মুহাম্মদ সা: যে ভাবে নামাজ আদায় করেছে আমাদেরও ঠিক ঐ ভাবেই নামাজ আদায় করতে হবে । হজরত মুহাম্মদ সা: প্রত্যেক ফরজ সালাতের পর হাত তুলে দোয়া করেন নাই । হাত তুলে দোয়া করলে অসুবিধা নেই , কিন্তু যদি মোনাজাতকে বাধ্যতামূলক করেন তাহলে বিদাদ হবে। মোনাজাত করলেও কিছু জিকির করা উচিৎ , যেগুলো হজরত মুহাম্মদ সা: করতেন , তাঁর পর মোনাজাত করেন কোন অসুবিধা নেই। (হুমায়রা)
» ওও আচ্ছা , বুঝলাম আচ্ছা হজরত মুহাম্মদ সা: সালাম ফেরানোর পর কি কি করতেন??(আমি)
» অনেক আমল করতেন , যে সুন্নাত গুলো এখন আমাদের সমাজ থেকে হারিয়ে গেছে। এটা খুবই দুঃখ জনক । হজরত মুহাম্মদ সাঃ সালাতে ছালাম ফিরানোর পর যে আমল করতেন আপনাকে তার কিছু আমল বলি।
১.একবার বলবে – (আল্লা-হু আকবার)(বুখারীঃ ৮৪২)
২.তিন বার বলবে – (আস্-তাগফিরুল্লা-হ) (সহিহ মুসলিমঃ ৫৯১)
৩. এক বার বলবে- (আল্লা-হুম্মা আনতাস সালা-ম ওয়া মিনকাস সালা-ম, তাবা-রাকতা ইয়া যাল জালা-লি ওয়াল ইকরা-ম) (মুসলিমঃ ৫৯১)
৪. প্রত্যেক ফরয সালাত শেষে আয়াতুল কুরসী ১ বার পড়বে –
(আল্লা-হু লা- ইলা-হা ইল্লা- হুওয়াল হাইয়্যূল ক্বাইয়্যূম। লা- তা’খুযুহু সিনাতুঁও ওয়ালা- নাউম। লাহূ মা- ফিসসামা-ওয়া-তি ওয়ামা- ফিল আরদ্বি। মান যাল্লাযী ইয়াশফা‘উ ‘ইনদাহূ ইল্লা- বিইযনিহী। ইয়া‘লামু মা- বাইনা- আইদীহিম ওয়ামা- খালফাহুম। ওয়ালা- ইয়ুহীতূনা বিশাই-ইম মিন্ ইলমিহী ইল্লা- বিমা- শা-আ। ওয়াসি‘আ কুরসিয়্যুহুস সামাওয়া-তি ওয়াল আরদ্ব। ওয়ালা- ইয়াউদুহূ হিফযুহুমা-। ওয়া হুয়াল ‘আলিয়্যূল ‘আযীম)(সিলসিলা সহীহাঃ ৯৭২)
৫.এক বার বলবে- (লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু, ওয়া’হ্দাহু লা- শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু, ওয়া লাহুল ‘হামদু, ওয়া হুআ ‘আলা- কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর। আল্লা-হুম্মা, লা- মা-নি’আ লিমা- আ’ত্বাইতা, ওয়ালা- মু’ত্বিয়া লিমা- মানা’তা, ওয়ালা- ইয়ান্ফা’উ যাল জাদ্দি মিনকাল জাদ্দু)( বুখারীঃ ৮৪৪)
৬.তাসবীহ’, তাহ’মীদ ও তাকবীর পাঠ করা : ৩৩ বার সুবহা’নাল্লাহ, ৩৩ বার আলহা’মদুলিল্লাহ ও ৩৪ বার আল্লাহু আকবার।( সহীহ বুখারী- ৮৪৩)
» হুম , অনেক গুরুত্বপূর্ণ কথা জানলাম । ও ভালো কথা আমার তো মনেই নেই । এক মিনিট দারান ,
এই বলে আমি একটি বক্স এনে দিলাম।
» কি এখানে ? (হুমায়রা)
» খুলেই দেখুন !! (আমি)
হুমায়রা খুলতে লাগলো আমি গিয়ে খিরকি জানালা খুলে দিলাম । বক্সে একটি আংটি ছিলো , যেটা হুমাইরা হাতে নিয়ে দেখছে , আর জানালা দিয়ে চাদের আলো এসে হুমাইরার মুখের উপর পরছে , হুমায়রার সৌন্দর্য আরো দ্বিগুণ বেড়ে গেছে।
» আজ আকাশ ও চাঁদকে যতটা সুন্দর দেখাচ্ছে তার চেয়েও বেশি সুন্দর লাগছে তোমাকে। ঠিক যেন আমর স্বপ্নপরি, যাকে আমি চেয়েছিলাম আমার রবের কাছে , তাকে আমি আজ পেয়েছি, তোমার রেসমি কালো চুল গুলো যদি খুলে দিতে তাহলে আরো ভালো লাগতো। (আমি)
আমার কথা শুনে হুমায়রা খুব লজ্জা পেয়েছে, ও চুল গুলো খুলে দিলো, হালকা বাতাসে উড়ছে চুল গুলো , আমি সেই সৌন্দর্য অপলকে উপভোগ করছি।
গল্প করতে করতেই ফজরের আজান দিয়ে দিলো । দুজনে নামাজ আদায় করে , শুয়ে পড়লাম ,। হঠাৎ কেউ আমাকে ডাকছে , চোখ খুলে দেখি হুমাইরা ডাকতেছে।
» কি হয়েছে ? (আমি)
» কে যেনো দরজা খুলার জন্য ডাতেছে ,(হুমায়রা)
» হুম ,খুলে দাও !(আমি)
» আমার শাড়ি খুলে গেছে , আসলে আমি শাড়ি পড়তে পারি না , শাড়ি পরে ঘুমালে শাড়ি আমার শরীরে থাকে না , এই অবস্থায় কিভাবে দরজা খুলবো ? ( হুমায়রা)
খেয়াল করলাম, আমিও হুমায়রার শাড়ি দিয়ে জড়িয়ে গেছি।
» আচ্ছা ঠিক আছে আমি দেখতেছি !!(আমি)
আমি গিয়ে দরজা খুলে দিলাম , ছোট খালা দাঁড়িয়ে আছে দরজার সামনে ,
» কি, এতো সময় লাগে দরজা খুলতে, বৌকে ছেড়ে উঠতে ইচ্ছে করে না , আমরা কখন থেকে অপেক্ষা করছি , বড়ো ঘরে পাঠিয়ে দাও একটু আমরাও দেখি , ( খালা)
» জী খালা,( আমি)
» হুমায়রা , সবাই অপেক্ষা করছে , একটু ওদের সঙ্গে দেখা করো প্লিজ!! (আমি)
» কিন্তু আমি তো শাড়ি পরতে পারি না ,!!! (হুমায়রা)
» আমি পড়িয়ে দেই ,
» আপনি… ??
» কেন আমাকে কি অকর্মের ঢেকি মনে হয়?
» না মানে আপনি ….
আমি হুমাইরা কে বিছানা থেকে এনে আয়নার সামনে দড়করালাম , তারপর ধীরে ধীরে শাড়ি পরিয়ে দিলাম, হুমাইরা আমার কাজ করা দেখছে , শাড়ি পরানো শেষ করে আমি দাঁড়িয়ে গেলাম , দুজনে এতো কাঁচা কাছি আছি যে একজনের নিঃশ্বাসের শব্দ অন্যজন শুনতে পারছি,
» যানেন আমার অনেক দিনের স্বপ্ন ছিল , আমি আমার বউ কে নিজের হাতে শাড়ি পরিয়ে দিবো , তাই অনেক কস্ট করে শিখেছি , (আমি)
হুমায়রা কিছু বলছে না দুজনের চোখ যেন আটকে গেছে , ধীরে ধীরে আমার ঠোঁট হুমায়রার ঠোঁটকে স্পর্শ করতে যাচ্ছে , তখনি একজন দরজা খুলে ভিতরে চলে আসলো , হুমাইরা তো লজ্জায় লাল হয়ে গেছে , আমাকে ছেড়ে এক দৌড়ে চলে গেল,
» দাদী এইভাবে কেউ ভিতরে আসে , অন্তত দরজায় টোকা দিয়ে আসতে পারতে!!
» আমি কি জানি নাকি , তোরা এই সময় এই সব করবি , (দাদী)
আমিও চলে গেলাম ফ্রেস হতে ,
আম্মু খেতে দিলো , খাওয়া শেষ করে সবার সঙ্গে দেখা করলাম , তারপর রুমে আসলাম , দেখি তানিশা ( আমার ছোট বোন), আম্মু, হুমাইরা, খালা, আমি ঘরে ঢুকতেই খালা বলেলো ,
» সাজিদ , অনেকেই বৌ কে ভালোবেসে মাকে ভুলে যায়, তাই বৌকে বেশি ভালোবেসো না । (ছোট খালা)
» খালা ,যে মেয়েটি আমার মাকে ভালোবেসে মা ডাকে , তাকে কেন ভালোবাসো না , আরে আমি তো তাকে সব থেকে বেশি ভালোবাসো , কারন সে আমার মাকে ভালোবেসে । (আমি)
» হুম ঠিক বলছিস সাজিদ , একটি কথা মনে রাখবি , জান্নাতে কিন্তু বাবা-মা র সঙ্গে থাকার কথা বলা হয় নাই , স্ত্রীর সঙ্গে থাকার কথা বলা হয়েছে , তাই যার সঙ্গে তোর জান্নাতে থাকতে হবে তাকে কখনো কষ্ট দিস না !! ( আম্মু)
» জি আম্মু !!! (আমি)
সবাই রুম থেকে চলে গেলো , আমি আর হুমাইরা থাকলাম , আমি হুমাইরার পাশে গিয়ে বসলাম , হুমায়রা বললো.
» আপনাদের বাসার সবাই অনেক ভাল !! আমি সত্যি ভাগ্যবান !!( হুমায়রা)
» আপনাদের বাসা মানে, তাঁর মানে এইটা তোমার বাসা না , তুমি আমাকে এইভাবে পর করে দিলে, (আমি)
» না , আমি ওভাবে বলেনি , আমি সরি , আমাকে ভুল বুঝবেন না প্লিজ ,( হুমায়রা)
» আমি তো মজা করলাম !! ( আমি)
সারাদিন ব্যাস্ততায় পার হলো , সন্ধ্যায় হুমায়রাদের বাসায় যাওয়ার জন্য রেডি হলাম , হুমায়রার খুশি এখন আগের তুলনায় অনেক বেড়ে গেছে ,
হুমায়রা দের বাসায় পৌঁছলাম , হুমায়রা আমাকে তার রুমে নিয়ে গেল,,,
» ওগো , তুমার রুম তো অনেক সুন্দর দেখাচ্ছে , ওয়ালে অনেক পেয়েনটিং , একেবারে পরিপাটি , পারফেক্ট , (আমি)
» জাযাকাল্লাহ , এই গুলো আমার নিজের হাতে সাজানো !! (হুমায়রা)
» তাহলে আমাদের রুমটাও এইভাবে সাজিয়ো ,!!
» জি অবশ্যই , আমার অগুছালো রুম দেখলে রাগ উঠে !!!
» তাহলে হয়েছে , আমি কখনো কিছু গুছিয়ে রাখি না , এমন কি হস্টেলেও কখনো , কোনদিন কম্বল ও ভালোভাবে ভাঁজ করে দেখিনি !!!! (আমি)
» আমি ওসব জানিনা , এখন থেকে যদি রুমে কিছু অগুছালো করেছেন তাহলে যে কি করব , ….. (হুমায়রা)
» আচ্ছা ঠিক আছে, এখন রাগে দেখাতে হবে না , আমি একটু ফ্রেস হব, বাথরুম টা কোন দিকে ,
হুমায়রা আমাকে ফ্রেস হতে নিয়ে গেলো , আমি হাতমুখ ধুয়ে রুমে আসলাম কিন্তু হুমায়রা আসলো না , বললো , ‘আপনি যান আমিও হাত মুখ ধুয়ে আসতেছি’ রুমে এসে মোবাইল টা পাচ্ছি না , পরে মনে হল রাস্তায় হুমায়রাকে দিয়েছিলাম, হয়তো ব্যাগে রেখেছে , তাই হুমায়রার ব্যাগে খুঁজতে লাগলাম ,, ওমনি পিছন থেকে
» ছি…. আপনার লজ্জা করে না আপনি মেয়েদের ব্যাগ হাতান?? (হুমায়রা)
» লজ্জা করবে কেন , আমার বউ এর ব্যাগ হাতাচ্ছি আপনার কোন অসুবিধা!!! (আমি)
» কিন্তু আমার তো লজ্জা করে , ব্যাগে আমার পারছোনাল বস্তু আছে , কি লাগবে , বলেন আমি বের করে দেই !!!
» মোবাইল !!! (আমি)
হুমায়রা ব্যাগ থেকে মোবাইল বের করে দিলো , মোবাইল হাতে নিয়ে
» হুমু , একটি কথা বলি !! (আমি)
» জি বলেন,, (হুমায়রা)
» আমার একটু মাধা বেথ্যা করছে , এক কাপ চা হবে কি ???
» আপনি আমাকে আগে বলবেন না !! মাথা টিপে দেই!! (হুমায়রা)
» লাগবে না , এক কাপ চা হলেই হবে !!(আমি)
» জি আমি এখুনি আনছি দাঁড়ান ,
………
হুমায়রা চা করার জন্য রান্না ঘরে ঢুকে চা বানাতে লাগলো
» বাহ , মেয়ে আমার একদিনেই এতো বড় হয়ে গেলো , যাকে কখনো জোর করে রান্না ঘরে আনা যেতো না সে আজ রান্না ঘরে , ?( হুমায়রার আম্মু)
» কেন আমার কি রান্না ঘরে আসা নিষেধ আছে ?( হুমায়রা)
» তা নেই , তো আমার মেয়েটা কি করতেছে
» কেন , চা বানাচ্ছি ( হুমাইরা)
» আল্লাহ গো , আমার তো প্রায় হার্ট অ্যাটাক হয়ে গিয়েছিল , তোকে তো কখনো চা খেতে দেখি নি , কিন্তু আজ চা বানাতে চলে আসলি কারণ কি ( হুমাইরার আম্মু)
» আম্মু এটা আমার জন্য না ওর জন্য ( হুমায়রা)
» বাহ ,এক দিনেই এতো প্রেম , ( মুচকি হেসে)
» আম্মু এখন কিন্তু বেশি বেশি হয়ে যাচ্ছে ( হুমায়রা)
» হুম হয়েছে ,রাগ দেখাতে হবে না দে আমি বানিয়ে দেই,
…….
হুমায়রা চার কাপ এনে আমাকে দিলো , আর আমার হাত থেকে মোবাইল নিয়ে ছুইচ অফ করে রেখে দিলো ,
» সব সময় মোবাইল দেখেন এই জন্যই মাথা ব্যথা করে , (হুমায়রা)
» একটু কাজ করতেছি দাও না , (আমি)
» হবে না , আগে মাথা ব্যথা ঠিক হোক তার পর,
হুমায়রার সঙ্গে টুক টাক কথা হচ্ছিল , এর মাঝে খাওয়ার জন্য ডাকলো , খাওয়ার কথা আর কি বলব , বুঝতেই তো পারছেন , কোত ধরনের খাবার থাকে , এমনি এমনি তো ‘শশুর বাড়ী মধুর হাড়ি বলে না ” খাওয়ার পর্ব শেষ করে বেড-এ শুয়ে আছি হুমাইরা আমার চুল গুলো হাতাচ্ছে ,
» আচ্ছা রাত অনেক হলো শুয়ে পরো ( আমি)
» আপনি ঘুমান আমি পরে ঘুমাচ্ছি।(হুমাইরা)
আমি জোর করে হুমায়রা কে শুইয়ে দিলাম,
হুমায়রার কোমরে হাত দিতেই ও শিউরে উঠলো, ধিরে ধিরে আমার বুকে এসে মাথা গুঁজলো, এক অদ্ভূত শান্তির শিহরণ বয়ে গেল আমার অন্তরে, আমিও খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম!!!!!
………. সমাপ্ত………..
( বি:দ্র: – অনুমতি না নিয়ে কপি করা নিষেধ। অনেকেই আমার গল্প নিজের নামে পোস্ট করেন , ইসলামে এইটা সম্পূর্ন হারাম, ও আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। )
#স্মৃতিময়_রাত_দিন
#hassab
#hassab_irsf
#গল্প
Leave a Reply